আর্তুরো আলেস্সান্দ্রি
আর্তুরো ফোর্তুনাতো আলেস্সান্দ্রি পাল্মা (স্পেনীয় ভাষায়: Arturo Fortunato Alessandri Palma) (২০শে ডিসেম্বর, ১৮৬৮ – ২৪শে আগস্ট, ১৯৫০) চিলির রাষ্ট্রপতি ছিলেন। তিনি ১৯২০-১৯২৪, ১৯২৫ এবং ১৯৩২-১৯৩৮ --- এই তিন মেয়াদের জন্য প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
আর্তুরো আলেস্সান্দ্রি পাল্মা | |
---|---|
![]() | |
চিলির ১৮তম রাষ্ট্রপতি | |
কাজের মেয়াদ ১০ই মে, ১৯২০ – ২৬শে জুলাই, ১৯২৪ | |
উপরাষ্ট্রপতি | লুইস আলতামিরানো |
পূর্বসূরী | হুয়ান লুইস সানফুয়েন্তেস |
উত্তরসূরী | লুইস আলতামিরানো |
চিলির রাষ্ট্রপতি | |
কাজের মেয়াদ ২০শে মার্চ, ১৯২৫ – ১লা অক্টোবর, ১৯২৫ | |
উপরাষ্ট্রপতি | লুই বার্রোস বোরহোনিয়ো |
পূর্বসূরী | এমিলিও বেল্লো |
উত্তরসূরী | লুইস বার্রোস বোরহোনিয়ো |
চিলির ২২তম রাষ্ট্রপতি | |
কাজের মেয়াদ ২৪শে ডিসেম্বর, ১৯৩২ – ২৪শে ডিসেম্বর, ১৯৩৮ | |
পূর্বসূরী | আব্রাহাম ওয়ানেদেল |
উত্তরসূরী | পেদ্রো আগির্রে সের্দা |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ২০শে ডিসেম্বর, ১৮৬৮ লোংগাবি, লিনারেস প্রদেশ, চিলি |
মৃত্যু | ২৪শে আগস্ট, ১৯৫০; ৮১ বছর বয়সে সান্তিয়াগো, চিলি |
রাজনৈতিক দল | চিলির লিবারেল পার্টি |
দাম্পত্য সঙ্গী | রোসা এস্তার রোদ্রিগেস |
আলেস্সান্দ্রি পাল্মা চিলির লিনারেস প্রদেশে ইতালীয় অভিবাসী দম্পতি পেদ্রো আলেস্সান্দ্রি ভার্গাস এবং সুসানা পাল্মা গুজমানের ঘরে জন্ম নেন। তিনি ২০ বছর বয়সে চিলি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করেন এবং সেখান থেকে ১৮৯৩ সালে আইনে স্নাতক হন। আইনজীবী হওয়ার পর তিনি রোসা এস্তার রোদ্রিগেস বেলাস্কো-কে বিয়ে করেন এবং এই দম্পতির ঘরে ৯ সন্তান হয়।
১৮৯৭ সালে আলেস্সান্দ্রি চিলির লিবারেল পার্টির সদস্য হিসেবে রাজনীতিতে যোগ দেন ও চেম্বার অফ ডেপুটিজ-এ নির্বাচিত হন। সে সময় তিনি নাইট্রেট খনিতে কর্মরত শ্রমিকদের পক্ষে রাজনীতি করতেন। তিনি শিল্পমন্ত্রী ও অর্থসংস্থান মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ছয়বার কংগ্রেসে ও দুইবার সিনেটে নির্বাচিত হয়ে আসেন। চিলির শহুরে মধ্যবিত্ত ও শ্রমিক শ্রেণীর কাছে তিনি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। তার নাম দেয়া হয় তারাপাকা-র সিংহ (León de Tarapacá)। তিনি ট্রেড ইউনিয়ন বৈধকরণ এবং সমাজকল্যাণ সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একটি উদারপন্থী কোয়ালিশনের নেতা হিসেবে ১৯২০ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় আসেন। তবে চিলির রক্ষণশীল কংগ্রেস তার পদক্ষেপে বাধা দেয়। রাষ্ট্রপতি ও কংগ্রেসের মধ্যে বিবাদের কারণে চিলির রাজনীতি স্থবির হয়ে পড়ে। ১৯২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিভিন্ন কারণ দর্শিয়ে সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করে এবং আর্তুরো পদত্যাগ করে স্বেচ্ছা-নির্বাসনে ইতালিতে চলে যান। ১৯২৫ সালের ২০শে মার্চ সেনাবাহিনী আইন শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে তাকে ফেরত আনে। তিনি সংবিধান সংশোধন করে কংগ্রেসের বিপক্ষে রাষ্ট্রপতিকে অধিকতর ক্ষমতা দেয়ার শর্তে ফেরত আসেন। ফিরে আসার পর তিনি বিভিন্ন ধর্মঘট শক্ত হাতে দমন করেন। তার এই ২য় ও স্বল্পকালীন শাসনামলের শেষের দিকে চিলির নতুন সংবিধান পাস হয়। নতুন সংবিধানে নারীর অধিকার, গির্জা ও রাষ্ট্রের পৃথকীকরণ, ধর্মীয় স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা এবং প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার ব্যাপারগুলি নিশ্চিত করা হয়। আর্তুরো ১৯২৫ সালের অক্টোবরে আবার পদত্যাগ করেন এবং ইতালিতে চলে যান। গ্রেট ডিপ্রেশনের মহা অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের পর তিনি ১৯৩২ সালে আবার চিলির রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন, কিন্তু এবার তিনি কঠোর সংবিধানবাদী হিসেবে ডানপন্থীদের সমর্থনে ক্ষমতায় আসেন। এ সময় বিশ্ববাজারে চিলির নাইট্রেট ও তামার চাহিদা হ্রাস পায় এবং শ্রমিক শ্রেণীর প্রকৃত আয় হ্রাস পায়। ফলে আলেস্সান্দ্রি পাল্মা শ্রমিকদের সমর্থন হারান এবং পুনর্নির্বাচনে আর দাঁড়ান নি। ১৯৪৬ সালে তিনি সিনেটে নির্বাচিত হন।