আফ্রিকার ইতিহাস

হোমিনিড এবং হোমো স্যাপিয়েন্স এর বিবর্তন

হোমিনিন উপ-পরিবার এবং হোমো গণ এই উভয়টির জন্মস্থান হল আফ্রিকা। এদের অন্তর্ভুক্ত ৮টি প্রজাতিরই প্রথম জন্ম হয়েছে আফ্রিকায় যার মধ্যে কেবল হোমো স্যাপিয়েন্স প্রজাতিটিই বর্তমানে অস্তিত্বশীল রয়েছে।

জীবাশ্মবিদ্যা এবং প্রত্নতত্ত্বের সর্বাধুনিক ব্যাখ্যা অনুসারে আজ থেকে প্রায় ৫ মিলিয়ন বছর পূর্বে হোমিনিডদের অস্তিত্বশীলতার সর্বশেষ প্রমাণ পাওয়া যায়। এই প্রাণীগুলো ছিল অনেকটাই তাদের নিকটতম প্রতিবেশী বৃহৎ আফ্রিকান উল্লুকের মত। কিন্তু হোমিনিডদের দ্বিপদী চলন প্রক্রিয়া ছিল যা তাদেরকে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করেছিল বিপুলভাবে। কারণ দ্বিপদী চলনের কারণেই তারা বনাঞ্চল এবং পূর্ব ও পশ্চিম আফ্রিকার উষ্ণমন্ডলীয় বৃক্ষহীন সমতলভূমি এই উভয় স্থানেই বসবাসে পারঙ্গম ছিল। তারা এমন একটি সময় এই সুবিধা ভোগ করছিল যখন আফ্রিকা ধীরে ধীরে শুষ্ক হয়ে উঠছিল এবং বনাঞ্চল হ্রাস পেয়ে উষ্ণ মন্ডলীয় অঞ্চলের আধিপত্য বৃদ্ধি পাচ্ছিলো। এভাবেই প্রায় ৩ মিলিয়ন বছর পূর্বে বেশ কিছু অস্ট্রালোপিথেকাইন হোমিনিড প্রজাতি আফ্রিকার দক্ষিণ, পূর্ব এবং কেন্দ্রীয় অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃতি লাভ করে।

এরপর বিবর্তনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ধাপ ছিল হোমো হ্যাবিলিস এর বিবর্তন যা আজ থেকে প্রায় ২ মিলিয়ন বছর পূর্বে সংঘটিত হয়। এরাই প্রথম প্রজাতি যারা বিভিন্ন যন্ত্রপাতি প্রস্তুতে সক্ষম ছিল। এই সক্ষমতার কারণে হোমো হ্যাবিলিসরা প্রথম মাংস ভক্ষণ শুরু করে। তারা নিজেদের প্রস্তুতকৃত হাতিয়ার ব্যবহার করে অন্য জন্তুদের শিকারকৃত প্রাণী বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খাবার হিসেবে গ্রহণ শুরু করে। এছাড়াও এসময় থেকেই প্রথম তারা মৃত প্রাণীদের শবদেহ সংরক্ষণ শুরু করে যা থেকে তারা অস্থি ও মজ্জা সংগ্রহ করে। তবে হোমো হ্যাবিলিসরা বড় শিকারী প্রাণীদের সাথে শিকারে পেরে উঠতোনা এবং অধিকাংশ সময়ই শিকার করার পরিবর্তে শিকারে পরিণত হতো। শিকারের পাশাপাশি তারা পাখির বাসা থেকে ডিম চুরি, ছোটোখাটোো প্রাণী এবং দূর্বল কিন্তু বড় প্রাণী শিকার করতো।

প্রায় এক মিলিয়ন বছরের পূর্বে বিবর্তিত হয় হোমো ইরেক্টাস। এদের মস্তিষ্কের আকৃতি অপেক্ষাকৃত বৃহৎ (১,০০০ সিসি) ছিল যার সাহায্যে এরা আরো কার্যকর পাথরের অস্ত্র বানাতে সক্ষম হয় এবং এর ফলশ্রুতিতে আফ্রিকান সমতলভূমির সবচেয়ে দূর্ধর্ষ শিকারীতে পরিণত হয়। হোমো ইরেক্টাসরাই প্রথম আগুনের ব্যবহার করতে শিখে এবং এদের মধ্যে অনেকেই আফ্রিকা ত্যাগ করে বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ে। এরা বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে উপনিবেশ স্থাপন করে এবং বিবর্তিত হয়ে হোমো ফ্লোরেসিয়েন্সিসে পরিণত হয়।

জীবাশ্মের নমুনা এটিই নির্দেশ করে যে ১০০,০০০ - ১৫০,০০০ বছর পূর্বে দক্ষিণ এবং পূর্ব আফ্রিকায় হোমো স্যাপিয়েন্সদের বসতি ছিল। ভাষাতাত্ত্বিক এবং সাংস্কৃতিক প্রমাণাদি থেকে পরবর্তিতে আফ্রিকা থেকে অনেক মানুষের বহির্গমনের নিদর্শন পাওয়া যায়। এছাড়া আফ্রিকাতেও অনেক মানুষ আসে আর এসবের বিস্তারি বিবরণ উদ্ধার করা হয়েছে কম্পিউটারের সাহায্যে জীনগত গবেষণার মাধ্যমে।

প্রাগৈতিহাসিক নিওলিথিক সংস্কৃতি

উত্তর আফ্রিকা

বর্তমানে প্রাপ্ত নিওলিথিক যুগের কিছু খেদাইকৃত শিলিলিপি এবং সাহারা মরুভূমিতে প্রাপ্ত প্রাগৈতিহাসিক যুগের স্মৃতিস্তম্ভের বৃহৎ আকারের বেশ কিছু প্রস্তরখন্ড হতে যা জানা গেছে সে অনুসারে তুষার যুগে উত্তর আফ্রিকার শুষ্ক ঘাসাচ্ছাদিত সমতলভূমিতে শিকারী এবং পশু ও ফসল সংগ্রহকারী সংস্কৃতি বিদ্যমান ছিল। বর্তমানে যেখানে সাহারা মরুভূমি অবস্থিত সেখানে প্রাচীনকালের এক সময় ভালোরকমের কৃষিকাজ হত বলেও জানা গেছে। কিন্তু যখন সাহারার মরুকরণ শুরু হয় তখন এখানকার কৃষিজীবী জনগণ নীল নদের উপত্যকায় বসবাসের মাধ্যমে সেখানে কেন্দ্রীভূত হতে শুরু করে। সেখানেই প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতা ও সংস্কৃতির ভিত্তিভূমি স্থাপিত হয়। তবে এই স্থাপনকালে মিশরে শিক্ষা-দীক্ষার প্রচলন হয়নি। প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণায় এটিই প্রতীয়মান হয় যে নীল নদের উপত্যকা জুড়ে মানব বসতির ইতিহাস ফারাও রাজাদের সাম্রাজ্য স্থাপনের ইতিহাসের চেয়েও অনেক পুরনো। এই অঞ্চলে প্রায় ৬০০০ খৃস্টপূর্বাব্দে সুসংঘটিত কৃষিকাজের সূচনা ঘটে।

সাব-সাহারান আফ্রিকা

আরও দেখুন


আফ্রিকা বিষয়ক এই নিবন্ধটি অসম্পুর্ণ, আপনি চাইলে এটিকে সমৃদ্ধ করতে পারেন।

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.