আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস
আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস সাংবাৎসরিকভিত্তিতে ২৯ মে তারিখে উদযাপিত হয়। এদিনে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী সকল পুরুষ-নারীকে শান্তি রক্ষার লক্ষ্যে সর্বোৎকৃষ্ট পেশাদারী মনোভাব বজায়, কর্তব্যপরায়ণতা, নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তাঁদের আত্মত্যাগের ঘটনাকে গভীর কৃতজ্ঞতা ও যথোচিত সম্মানপূর্বক স্মরণ করা হয়।[1] ২০০৩ সাল থেকে এ দিনটি পালন করা হয়।
আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস | |
---|---|
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী কর্মীর ব্যবহৃত হেলমেট | |
পালনকারী | বিশ্বব্যাপী |
ধরন | জাতিসংঘ |
উদযাপন | সভা, আলোচনা অণুষ্ঠান, প্রদর্শনী |
তারিখ | ২৯ মে |
২০০৯ সালে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় নারীদের অবদান ও ভূমিকার উপর সবিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে।[2] শান্তিরক্ষায় নারীর ভূমিকা ও লিঙ্গ-বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যেই এ পদক্ষেপ গ্রহণ।
ইতিহাস
ইউক্রেনের শান্তিরক্ষী সংস্থা এবং ইউক্রেন সরকারের যৌথ প্রস্তাবনায় ১১ ডিসেম্বর, ২০০২ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের গৃহীত ৫৭/১২৯ প্রস্তাব অণুযায়ী এ দিবসের রূপরেখা প্রণয়ন করা হয়। ২০০৩ সালে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস প্রথম উদযাপন করা হয়। ১৯৪৮ সালে সংঘটিত আরব-ইসরাইলী যুদ্ধকালীন যুদ্ধবিরতী পর্যবেক্ষণে গঠিত জাতিসংঘ ট্রুস সুপারভিশন অর্গ্যানাইজেশন (আন্টসো) দিনকে উপজীব্য করে ২৯ মে তারিখটি স্থির করা হয়েছে। উল্লেখ্য, জাতিসংঘ ট্রুস সুপারভিশন অর্গ্যানাইজেশন (আন্টসো)-ই হচ্ছে প্রথম জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী।
কর্মসূচী পালন
দিবসকে কেন্দ্র করে নিউইউর্ক সিটিতে অবস্থিত জাতিসংঘ সদর দফতরে ড্যাগ হ্যামারশোল্ড পদক বিতরণ করা হয়। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি ও জাতিসংঘের মহাসচিব সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীকে অভিনন্দন বার্তা প্রদান এবং তাঁদের কাজের প্রয়োজনীয়তা ও উপযোগিতার কথা তুলে ধরে থাকেন।
এছাড়াও, বিশ্বের সর্বত্র আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস পালন করা হয়। প্রায়শঃই দেশগুলোয় তাদের নিজস্ব শান্তিরক্ষীদের বহিঃর্বিশ্বে শান্তিরক্ষায় ভূমিকাকে স্মরণ করে সম্মানিত করা হয়। ঐ দেশগুলোতে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী দিবস উদযাপন, সভা-সমাবেশ, প্রদর্শনী ইত্যাদি বিষয়াদি স্থানীয় এবং জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন দলের সাথে আয়োজন করে থাকেন।
বাংলাদেশ শান্তিরক্ষী বাহিনী
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সৈন্য প্রেরণকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশেও এদিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হয়। শান্তিপ্রিয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশ শান্তিরক্ষী বাহিনী ১৯৮৮ সাল থেকে জাতিসংঘের অধীনে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। ২০১২ সালের মে মাস পর্যন্ত পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে ১০টি শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের সশস্ত্রবাহিনীর ৯,১৮৭ জন এবং পুলিশ বাহিনীর ২,০৯৩ জন সদস্য নিয়োজিত আছেন।[3][4] কর্মরত অবস্থায় অথবা নিরীহ মানুষকে রক্ষার্থে এ পর্যন্ত ১০৫ জন বাংলাদেশী শান্তিরক্ষী আত্মোৎসর্গ করেছেন। এছাড়াও, পেশাদারী দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে আহত হয়েছেন ১১৬ জন শান্তিরক্ষী।[3]
তথ্যসূত্র
- "Resolution 57/129 International Day of United Nations Peacekeepers"।
- http://www.un.org/en/events/peacekeepersday/2009/
- দৈনিক ইত্তেফাক, মুদ্রিত সংস্করণ, ২৯ মে, ২০১২ইং, পৃষ্ঠা-১২, আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস, ২০১২-এর বিশেষ ক্রোড়পত্র
- বাংলা নিউজ ২৪.কমঃ আজ বিশ্ব শান্তিরক্ষী দিবস, সংগ্রহকালঃ ১ জুন, ২০১২ইং