অ্যাডোনিস
অ্যাডোনিস বা আলী আহমদ সাঈদ ইসবার বা আলী আহমদ সাঈদ আসবারএকজন সিরীয় কবি। তবে অ্যাডোনিস নামেই সাহিত্যিক মহলে ব্যাপক পরিচিত।
আলী আহমদ সাঈদ ইসবার | |
---|---|
![]() | |
জন্ম | আল কোয়াসবিন লাটাকিয়া, সিরিয়া | ১ জানুয়ারি ১৯৩০
জাতীয়তা | সিরীয় |
পেশা | কবি |
জন্ম ও শৈশব
সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের আল কোয়াসবিন লাটাকিয়ায় ১৯৩০ সালের ১ জানুয়ারি তার জন্ম। অ্যাডোনিস মূলত শিয়া মতের "আলাইও" সম্প্রদায়ের একজন মানুষ। ছোটকালে বাবার সাথে ক্ষেতে যেতেন। আরব্য সহজাত কাব্যপ্রতিভায় বাবা কবিতা পড়তেন, পবিত্র কুরআন পড়তেন। বাবার প্রভাব পড়ে ছেলের ওপর। কবিতার দিকে অল্প অল্প করে এগুতে থাকেন তিনি।
কর্মজীবন
১৯৪৮ সাল থেকে তিনি অ্যাডোনিস নামে পরিচিত হওয়া শুরু করেন তিনি। ১৯৫৪ সালে তিনি দামেস্ক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন শাস্ত্রে ডিগ্রি নেন। ১৯৫৪ সালের পর সিরীয় সোশ্যালিস্ট ন্যাশনালিস্ট পার্টির সদস্য হোন। সোশ্যালিস্ট পার্টির সদস্য হওয়ায় তিনি ৬ মাসের কারাভোগ করেন। ১৯৭৩ সালে কাদিস ইউসুফ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১৯৭০-১৯৮৫ সাল পর্যন্ত "ইউনিভার্সিটি অব লেবাননে"আরবি সাহিত্যের অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আবার ১৯৭৬ সালে দামেস্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথি অধ্যাপকও ছিলেন।
লেখালেখি
১৯৫৭ সালে সিরীয়-লেবানিজ কবি ইউসুফ আল-খাল-সম্পাদিত "মাজ্জাল্লা শে'র"-এ (কবিতা পত্রিকা) তার কবিতা প্রকাশ পেলে কড়া সমালোচনার মুখোমুখি হোন। তার কবিতায় তখন নতুন ধারার আধ্যাত্মিকতার রেশ পাওয়া যায়। ফলে আধুনিক আরবী কবিতায় "নিও সুফিজম"-এর কবি হিসেবে খ্যাতি পান। মরমীবাদ তার কবিতা দর্শনের অন্যতম আকর্ষণ। বর্তমান আরববিশ্বের সবচেয়ে বড় কবি হিসেবে ভাবা হয় তাকে। মূল আরবীতে তার কবিতার বইয়ের সংখ্যা ২০। এর মধ্যে ১০টি গ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছে। ইসলামপূর্ব আরবি ঐতিহ্য তার ভেতরে কাজ করেছে প্রবল।
পুরস্কার ও সম্মাননা
সাহিত্যে তিনি সর্বপ্রথম সিরিয়া-লেবাননভিত্তিক সেরা কবিতা সম্মাননা "নাজিম হিকমত পোয়েট্রি অ্যাওয়ার্ড" লাভ করেন। ১৯৮২ সালে প্যারিসের স্তেফানি মালার্মে একাডেমির সদস্য নির্বাচিত হন। ২৫ মে ২০১১-তে জার্মানির গ্যাটে পুরস্কার-এর জন্য তিনি মনোনীত হোন। ২০০৫ সালে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারের জন্যও মনোয়ন পেয়েছিলেন।
জন্মসূত্রে তিনি সিরীয় নাগরিক। ১৯৬১ সালের পর থেকে অ্যাডোনিস লেবাননের নাগরিক। ১৯৮০ সালের গৃহযুদ্ধের সময়ে তিনি ফ্রান্স পালিয়ে গেলে সেখানেরও নাগরিকত্ব লাভ করেন। বর্তমানে (২০১১) প্যারিস শহরেই তার বসবাস।