অনন্ত কন্দলী
অনন্ত কন্দলী ষোড়শ শতকের একজন অসমীয়া বৈষ্ণব কবি। তিনি শ্রীমন্ত শঙ্করদেব-এর শিষ্য ছিলেন। অনন্ত কন্দলী ভাগবত-এর ষষ্ঠ স্কন্ধ এবং দশম স্কন্ধর অনুবাদ প্ৰসঙ্গে নিজের আত্মপরিচয় দেন। সেই বিবরণ অণুযায়ী তার জন্মস্থান হাজো অঞ্চলে। সাহিত্যিক নাম রত্ন পাঠক৷ জন্মসূত্ৰে ব্ৰাহ্মণ অনন্ত কন্দলীর প্ৰকৃত নাম ছিল হরিচরণ।[1][2] পরে তৰ্ক শাস্ত্রের উপর ভিত্তি করে ব্যুত্পত্তিগতভাবে 'অনন্ত কন্দলী' নাম লাভ করেন। পরে আবার চন্দ্ৰভারতী, ভাগবতাচাৰ্য, ভাগবত ভট্টাচাৰ্য আদি বিভূষণে ভূষিত হন।[3] অনন্ত কন্দলী খ্ৰীষ্টীয় ষোড়শ শতাব্দীর তৃতীয় এবং চতুৰ্থ দশকের ভিতর অৰ্থাৎ ১৫২০-১৫৩০ খ্ৰীষ্টাব্দের ভিতর সম্ভবতঃ জন্ম গ্ৰহণ করে ষোড়শ শতাব্দীর শেষ পর্যন্ত জীবিত ছিলেন।[3]
অনন্ত কন্দলী | |
---|---|
জন্ম | ষোড়শ শতক |
পেশা | কবি |
ভাষা | অসমীয়া |
উল্লেখযোগ্য রচনাবলি | রামায়ণ, কুমার হরণ |
আত্ম পরিচয়
কন্দলী দশম স্কন্ধরে তার আত্মপরিচয় এভাবে বর্ণনা করেন -
রতন পাঠক নামে পণ্ডিত পরম৷
ভাগবত শাস্ত্ৰে যার আছিল বিক্ৰম৷৷
শ্ৰীহরিচরণ নামে তাহান সন্ততি৷
ব্যাকরণ পঢ়ি নাম শ্ৰীচন্দ্ৰভারতী৷৷
তৰ্কত লভিলা নাম অনন্ত কন্দলী৷
ভাগবতে আচাৰ্য পদবী ভৈলা আৰ্যজন৷৷
ভাগবত ভট্টাচাৰ্য বোলে আৰ্যজনে৷
তেহো বিরচিলা পদ কৃষ্ণ'র চরণে৷৷[3]
সাহিত্যকৃতি
অনন্ত কন্দলী মহিলা এবং শূদ্ৰকে ধরে সমাজের সবার ভিতর ধৰ্মবিশ্বাস জাগে বলে শাস্ত্ৰ রচনা করেছিলেন।[2] গুরু শ্রীমন্ত শঙ্করদেব-এর অণুরোধে তিনি ভাগবত-পুরাণ এর দশম খণ্ড অনুবাদ করেছিলেন। এই রচনায় শঙ্করদেবের প্ৰভাব দেখতে পাওয়া যায়। তিনি মাধব কন্দলী-এর মূল পুথিগ্রন্থের সহায়ক রামায়ণ-এর পাঁচটা খণ্ড লিখেছিলেন। সেইগুলোকে মাধব কন্দলীর রামায়ণ-এর বৈষ্ণব সংস্করণ বলে অভিহিত করা হয়।[2] তিনি ভাগবত এর পঞ্চম এবং ষষ্ঠ খণ্ড অনুবাদ করেছিলেন বলা হয়।[2]
অনন্ত কন্দলীর অন্যান্য কাব্য হল-[3]
- কুমার হরণ
- কাব্য ভাগবত
- ষষ্ঠ স্কন্ধর বৃত্ৰাসুর-বধ
- মধ্য এবং শেষ দশম
- মহীরাবণ বধ
- সীতার পাতাল প্ৰবেশ
- হরি-হর যুদ্ধ
- সহস্ৰ নাম বৃত্তান্ত
তথ্যসূত্ৰ
- Ganga Ram Garg (১৯৯২)। "Encyclopaedia of the Hindu World"। Concept Publishing Company। পৃষ্ঠা 428–429। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ১৬, ২০১২।
- Satyendranath Sarma (১৯৭৬)। "Assamese literature"। Otto Harrassowitz, Wiesbaden। পৃষ্ঠা 61। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ১৬, ২০১২।
- অসমীয়া সাহিত্যৰ সমীক্ষাত্মক ইতিবৃত্ত, লেখক - ডঃ সত্যেন্দ্ৰনাথ শৰ্মা, প্ৰকাশক - প্ৰতিমা দেৱী। ১৯৯৬, গুৱাহাটী, পৃষ্ঠা ৫৫-৫৬