আহমেদ আকবর সোবহান

আহমেদ আকবর সোবহান (জন্ম : ১৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২) আদি শহর: বাঞ্ছারামপুর।

আহমেদ আকবর সোবহান
জন্ম (1952-02-15) ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২
জাতীয়তাবাংলাদেশি
অন্যান্য নামশাহ আলম
পেশাচেয়ারম্যান, বসুন্ধরা গ্রুপ
কার্যকাল১৯৫২-বর্তমান
দাম্পত্য সঙ্গীআফরোজা বেগম
সন্তানসাদাত, সাফায়েত, সায়েম, সাফওয়ান
ওয়েবসাইটhttp://www.bashundharagroup.com

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা।

একজন বিশিষ্ট বাংলাদেশী ব্যবসায়ী ও শিল্পদ্যোক্তা। তিনি দেশের শীর্ষস্থানীয় বৃহত্তম শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান। বিচক্ষণ এবং দূরদৃষ্টি সম্পন্ন এই ব্যবসায়ী বাংলাদেশের শিল্প ও বাণিজ্য খাতকে সুসংহত করতে বসুন্ধরা গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন। আবাসন দিয়ে শুরু হলেও দিনে দিনে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবসায় সম্প্রসারিত হয়েছে সিমেন্ট, কাগজ, ইস্পাতজাত পণ্য উৎপাদন, এলপি গ্যাস, বাণিজ্যিক কমপ্লেক্স নির্মাণসহ জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন খাতে। মিডিয়া খাতেও বসুন্ধরা গ্রুপের রয়েছে বিশাল বিনিয়োগ। দেশের শীর্ষস্থানীয় চারটি মিডিয়া হাউজ (দৈনিক কালের কণ্ঠ, বাংলাদেশ প্রতিদিন, ডেইলি সান ও বাংলানিউজ২৪ডটকম) এই গ্রুপের মালিকানাধীন। বাজার মূল্য এবং আর্থিক প্রবৃদ্ধির হিসেবে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের সকল কর্মকান্ডের মূল মন্ত্র "দেশ ও মানুষের কল্যাণে"। "Goodness for the country & human"

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

আহমেদ আকবর সোবহানের জন্ম ১৯৫২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পুরান ঢাকার ইসলামপুরের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে। তার বাবা আলহাজ্ব আবদুস সোবহান ছিলেন ঢাকা উচ্চ আদালতের আইনজীবি এবং মা উম্মে কুলসুম ছিলেন গৃহিনী। দুই ভাই ও চার বোনের মধ্যে আকবর সোবহান সবার ছোট। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় অধ্যয়ন বিভাগ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ছাত্র জীবনে আহমেদ আকবর সোবহান ছিলেন সুস্বাস্থ্যের অধিকারী একজন ক্রীড়াবিদ এবং সহপাঠীদের মধ্যে সবচেয়ে চৌকষ।

কর্মজীবন

১৯৭৮ সালে আহমেদ আকবর সোবহান অভ্যন্তরীণ সেবা খাতে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ব্যবাসয়িক যাত্রা শুরু করেন। বসুন্ধরা গ্রুপের পথচলা শুরু হয় ‘ইস্ট ওয়েস্ট প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট (প্রাঃ) লিমিটেড’ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে, যা পরবর্তীকালে ‘বসুন্ধরা হাউজিং’ হিসেবে খ্যাতি লাভ করে। গূণগত মান এবং সর্বোচ্চ সেবার নিশ্চয়তা দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি হয়ে উঠেছে ভোক্তাদের আস্থার অন্য নাম। এগিয়ে যাওয়ার পথ সুগম ছিলো না কখনোই। বহু চৎরাই উৎরাই, বাঁধা পার হতে হয়েছে। কিন্তু আহমেদ আকবর সোবহান কখনো নিজ নীতি থেকে বিচ্যুত হননি। অটল থেকেছেন নিজের লক্ষ্যে। সততা, নিষ্ঠা, ধৈর্য্য এবং নিরলস প্রচেষ্টায় নিজ হাতে তিনি বসুন্ধরা গ্রুপকে নিয়ে এসেছেন আজকের এই বিশাল ব্যাপ্তি এবং বিরাট অবস্থানে। ইস্পাত ও প্রকৌশল, কাগজ, টিস্যু, সিমেন্ট, এলপি গ্যাস, স্যানিটারি ন্যাপকিন, কাগজজাত পণ্য, ড্রেজিং, জাহাজ শিল্প, খাদ্য ও পানীয়, লোহার নল উৎপাদনসহ অন্তত তিন ডজনেরও বেশি নানা মাত্রার বৃহৎ শিল্পখাতে নিজেদের ব্যবসায়ের ব্যাপ্তি বিস্তার করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। আহমেদ আকবর সোবহানের সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা এবং বিচক্ষণ তদারকিতে বসুন্ধরা গ্রুপ অবকাঠমোগতভাবে অর্জন করেছে যথেষ্ট দক্ষতা এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে সফলতার সঙ্গে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের যোগ্যতা লাভ করেছে। বসুন্ধরা গ্রুপের শিল্পউদ্যোগের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের নানা পণ্যে আমদানিনির্ভরতা কমেছে। বসুন্ধরা গ্রুপ কেবল ব্যবসায়িক খাতই নয়, তৈরি করেছে বিরাট কর্মক্ষেত্রও। এই গ্রুপের নানা প্রতিষ্ঠানে সরাসরি কর্মরত আছেন প্রায় ৫০ হাজার কর্মী। এছাড়াও নানাভাবে বসুন্ধরা গ্রুপে কাজ করছেন প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক মানুষ। রাজস্বখাতে বিরাট অবদানের মাধ্যমে দেশীয় আর্থসামাজিক উন্নয়নেও ভীষণ অবদান রাখছে বসুন্ধরা। বহু বছর ধরেই দেশের শীর্ষস্থানীয় রাজস্বদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে সুনাম ধরে রেখেছে বসুন্ধরা গ্রুপ

সামাজিক কর্মকান্ড

কেবল ব্যবসায়িক অঙ্গণেই নয়, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সামাজিক দায়িত্ব পালনেও দৃষ্টান্ত রেখেছেন আহমেদ আকবর সোবহান। সাফল্যের শীর্ষে অবস্থান করেও ভুলে যাননি দেশীয় সাংস্কৃতি ও মানবতার কল্যাণে ব্যক্তিগত দায়িত্ব বোধ। দরিদ্র ও অবহেলিত মানুষের কথাও মনে রেখেছেন সবসময়। উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছেন নিত্যদিন। বসুন্ধরা গ্রুপ প্রতিষ্ঠিত দুটি মানবল্যাণ ফাউন্ডেশন ভাগ্যবিড়ম্বিত মানুষের জীবন চলার পথ সুগম করতে নীরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে চলেছে প্রতিদিন, প্রতি মূহুর্ত। এছাড়াও নানা সময়ে বিপদগ্রস্ত ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর বহু নজির রেখেছেন আহমেদ আকবর সোবহান।[1]

সাম্মানিক দূত

২০০৬ সালের জুলাই থেকে আহমেদ আকবর সোবহান ইউক্রেন প্রজাতন্ত্রে বাংলাদেশের সাম্মানিক দূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।[2]

সম্পৃক্ততা

  • সভাপতি, বাংলাদেশ ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (বিএলডিএ)
  • সভাপতি, বাংলাদেশ পেপার মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমএ)
  • সভাপতি, বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমএ) (BCMA)
  • চেয়ারম্যান, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড
  • সদস্য, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, (এফবিসিসিআই), জেনারেল বডি
  • সদস্য, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), জেনারেল বডি
  • সদস্য, বাংলাদেশ সিমেন্ট ট্র্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিটিএ)
  • সদস্য, রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন (রিহ্যাব)
  • সদস্য, ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ

পুরস্কার ও সম্মাননা

বছরপুরস্কার/সম্মাননার নামপুরস্কার/সম্মাননা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান
১৯৯২কাজী নজরুল ইসলাম পদকবাংলাদেশ সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদ, সামাজিক খাতে বিশেষ অবদানের জন্য।
১৯৯৩মাওলানা ভাসানী জাতীয় পদকমাওলানা ভাসানী জাতীয় স্মৃতি পরিষদ, জাতীয় আবাসন খাতে বিশেষ অবদানের জন্য।
১৯৯৪প্রেসিডেন্ট’স গোল্ড মেডেলগণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, রিয়েল স্টেট খাতে বিশেষ অবদানের জন্য।
২০০১অর্থকণ্ঠ বাণিজ্য পদকদেশের শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতি বিষয়ক সাপ্তাহিক অর্থকণ্ঠ, বাণিজ্য খাতে বিশেষ অবদানের জন্য
২০০২জনতা ব্যাংক প্রাইম কাস্টমার অ্যাওয়ার্ডজনতা ব্যাংক লিমিটেড
২০০২ইউএসএ সামিট ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ডমার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
২০০৭বিজনেস লিডারশীপ অ্যাওয়ার্ড
২০০৯বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক সংগঠন পদকবাংলাদেশ সাংস্কৃতিক সংগঠন
২০১০অগ্রণী ব্যাংক বেস্ট ক্লায়েন্ট অ্যাওয়ার্ডঅগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড
২০১১বিবেকানন্দ অ্যাওয়ার্ডভারত

তথ্যসূত্র

  1. বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান মেঘের পাশে এসে দাড়ালেন
  2. "ইউক্রেন বাংলাদেশের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট"। ৫ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ অক্টোবর ২০১২

বহিঃসংযোগ

| PLACE OF BIRTH = Bangladesh }}

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.