বাস্তুতন্ত্র

বাস্তুতন্ত্র (ইংরেজি: Ecosystem) হচ্ছে জৈব, অজৈব পদার্থ ও বিভিন্ন জীবসমন্বিত এমন প্রাকৃতিক একক যেখানে বিভিন্ন জীবসমষ্টি পরস্পরের সাথে এবং তাদের পারিপার্শ্বিক জৈব ও অজৈব উপাদানের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে একটি জীবনধারা গড়ে তোলে।[2]

প্রবাল প্রাচীর সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের অন্যতম প্রধান উৎপাদক[1]
রেইনফরেস্ট বাস্তুতন্ত্রের বৈচিত্র্যের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। এটা সেনেগালের নিকোলা-কোবা জাতীয় পার্কের গাম্বিয়া নদী

উৎপাদক

এগুলো বাস্তুতন্ত্রের স্বভোজী জীব অর্থাৎ সবুজ গাছপালা যারা সৌরশক্তিকে সংবন্ধন ও সরল অজৈব পদার্থের সমন্বয়ে খাদ্যরূপে জটিল জৈব যৌগ সংশ্লেষ করে। ক্ষুদ্র ও আণুবীক্ষণিক ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটন, শৈবাল ইত্যাদি থেকে শুরু করে জলে ভাসমান উদ্ভিদ ও ছোট-বড় স্থলজ উদ্ভিদ সবই উৎপাদক।আরও সহজে বোঝায় যে পরিবেশের যে সকল উপাদান খাদ্যের জন্য অন্য কোন উপাদানের উপর নিভর্শীল নয়, তাকে উৎপাদক বলে।

খাদক

বাস্তুতন্ত্রে যে সব উপাদান উৎপাদকের তৈরি খাদ্য উপাদানের উপর নির্ভরশীল, সেসব জীবকে খাদক বলে। এগুলো বাস্তুতন্ত্রের প্রাণী সদস্য বা ম্যাক্রোখাদক নামেও পরিচিত। একটি বাস্তুতন্ত্রে তিন ধরনের খাদক পাওয়া যায়।

  1. প্রথম স্তরের খাদক
  2. দ্বিতীয় স্তরের খাদক

তৃতীয় বা সর্বোচ্চ স্তরের খাদক

প্রথম শ্রেণির খাদক :

যেসব প্রাণী সরাসরি উদ্ভিদ থেকে খাদ্য গ্রহণ করে তাদের প্রথম শ্রেণির বা তৃণভোজী জীব বলে। যেমন- ঘাস ফড়িং, মুরগি, গরু, ছাগল, হরিণ, হাতি ইত্যাদি।

দ্বিতীয় শ্রেণীর খাদক:

যেসব প্রাণি তৃণভোজী প্রাণীদের খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে তাদের বলা হয় গৌণ খাদক বা দ্বিতীয় শ্রেণির খাদক বলে। এরা মাংসাশী প্রাণী। যেমন-ব্যাঙ, শিয়াল, বাঘ ইত্যাদি।

তৃতীয় শ্রেণির খাদক:

যেসব প্রাণী গৌণ খাদকদের খেয়ে বেচে থাকে তারাও মাংসাশী প্রাণী। এদের বলা যায় তৃতীয় শ্রেণির বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ খাদক। যেমন- সাপ, ময়ূর, বাঘ ইত্যাদি।

একটি বিশেষ শ্রেণির খাদক জীবন্ত প্রাণীর চেয়ে মৃত প্রাণীর মাংস বা আবর্জনা খেতে বেশি পছন্দ করে। যেমন- কাক, শকুন, শিয়াল, হায়েনা ইত্যাদি। এদের নাম দেয়া হয়েছে আবর্জনাভুক বা ধাঙড় (Scavenger). এরা পরিবেশ পরিষ্কার রাখে।

বিয়োজক

যে সজীব উপাদান কোনো বাস্তুতন্ত্রে মৃত জীবের কলাভুক্ত জটিল জৈব যৌগগুলোকে বিশ্লিষ্ট বা বিয়োজিত করে তা থেকে কিছু অংশ নিজেরা শোষণ করে এবং বাকি অংশের জটিল যৌগগুলোকে ভেঙে সরল জৈব যৌগে পরিণত করে পরিবেশে ফিরিয়ে দেয়,তাকে বিয়োজক বলে।

কয়েকটি খাদ্যশৃঙ্খল

» সাপ » বাজপাখি

তথ্যসূত্র

  1. Hatcher, Bruce Gordon (১৯৯০)। "Coral reef primary productivity. A hierarchy of pattern and process"। Trends in Ecology and Evolution5 (5): 149–155। doi:10.1016/0169-5347(90)90221-X। PMID 21232343
  2. Tansley (1934); Molles (1999), p. 482; Chapin et al. (2002), p. 380; Schulze et al. (2005); p. 400; Gurevitch et al. (2006), p. 522; Smith & Smith 2012, p. G-5

আরো পড়ুন

  • গাজী আজমল, গাজী আসমত (১৯৯৮)। উচ্চ মাধ্যমিক জীববিজ্ঞান, দ্বিতীয় পত্র:প্রাণী বিজ্ঞান। ঢাকা: গাজী পাবলিশার্স।
  • Bailey, Robert G. (২০০৯)। Ecosystem Geography (Second সংস্করণ)। New York: Springer। আইএসবিএন 978-0-387-89515-4।
  • Chapin, F. Stuart (২০০২)। Principles of Terrestrial Ecosystem Ecology। New York: Springer। আইএসবিএন 0-387-95443-0। অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য)
  • Gurevitch, Jessica (২০০৬)। The Ecology of Plants (Second সংস্করণ)। Sunderland, Massachusetts: Sinauer Associates। আইএসবিএন 978-0-87893-294-8। অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য)
  • Krebs, Charles J. (২০০৯)। Ecology: The Experimental Analysis of Distribution and Abundance (Sixth সংস্করণ)। San Francisco: Benjamin Cummings। আইএসবিএন 978-0-321-50743-3।
  • Lindenmayer, David B.; Gene E. Likens (২০১০)। Effective Ecological Monitoring। Collingwood, Australia: CSIRO Publishing। আইএসবিএন 978-1-84971-145-6।
  • Molles, Manuel C. (১৯৯৯)। Ecology: Concepts and Applications। Boston: WCB/McGraw-HIll। আইএসবিএন 0-07-042716-X।
  • Schulze, Ernst-Detlef (২০০৫)। Plant Ecology। Berlin: Springer। আইএসবিএন 3-540-20833-X। অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য)
  • Smith, Thomas M.; Robert Leo Smith (২০১২)। Elements of Ecology (Eighth সংস্করণ)। Boston: Benjamin Cummings। আইএসবিএন 978-0-321-73607-9।
  • Tansley, AG (১৯৩৫)। "The use and abuse of vegetational terms and concepts"। Ecology16 (3): 284–307। doi:10.2307/1930070জেস্টোর 1930070
  • Willis, A.J. (১৯৯৭)। "The Ecosystem: An Evolving Concept Viewed Historically"। Functional Ecology11 (2): 268–271। doi:10.1111/j.1365-2435.1997.00081.x

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.