ঘাসফড়িং

ঘাসফড়িং হলো অর্থোপ্টেরা বর্গের অন্তর্গত সিলিফেরা উপবর্গের কীট। গুল্মের ঝিঁঝিঁ পোকা বা কেটিডিড থেকে পৃথক করার জন্য এদেরকে কখনো কখনো ছোট শিংওয়ালা ঘাসফড়িংও বলা হয়। যেসব প্রজাতি জনঘনত্বের উপর নির্ভর করে রং ও ব্যবহার বদলে ফেলে তাদের বলে পঙ্গপাল

ঘাসফড়িং
সময়গত পরিসীমা: অন্তিম পার্মিয়ান থেকে বর্তমান
অপূর্ণাঙ্গ ঘাসফড়িং
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: এনিমিলিয়া
পর্ব: আর্থ্রোপোডা
উপপর্ব: হেক্সাফোডা
শ্রেণী: ইন্সেক্টা
বর্গ: Orthoptra
উপবর্গ: সিলিফেরা
Superfamilies
  • Tridactyloidea
  • Tetrigoidea
  • Eumastacoidea
  • Pneumoroidea
  • Pyrgomorphoidea
  • Acridoidea
  • Tanaoceroidea
  • Trigonopterygoidea

বৈশিষ্ট্য

এদের দেহ কাইটিনময় বহি:কঙ্কাল নির্মিত।একটি তিন খন্ড বিশিষ্ট দেহ (মস্তক, বক্ষ ও উদর), তিন জোড়া সন্ধিযুক্ত পা, জটিল পুঞ্জাক্ষি তিনটি সরলাক্ষি, এক জোড়া আন্টেনা(শূঙ্গ) বহন করে। ঘাস ও লতাপাতার মধ্যে লাফিয়ে লাফিয়ে চলে বলে এদের নাম হয়েছে ঘাস ফড়িং।

বাসস্থানঃ ঘাস ফড়িং যেহেতু ঘাস,পাতা,শস্যের কচিপাতা আহার করে সে কারণে এমন ধরনের নিচু বসতি এদের পছন্দ।মূলত সব ধরনের বসতিতেই বিভিন্ন প্রজাতির ঘাসফড়িং দেখা যায়।স্বাদুপানি ও ম্যানগ্রোভ জলাশয়ে যেহেতু পানির উঠানামা বেশি হয় এবং ডিম পাড়ার স্থান প্লাবিত হয়ে যায় সে কারণে এসব বসতিতে ঘাসফড়িং কম বাস করে। প্রতিকূল আবহাওয়ায় এরা বিপুল সংখ্যায় পরিযায়ী হয়, দিনে প্রায় ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত যেতে পারে। সারা বিশ্বে এ পর্যন্ত প্রায় বিশ হাজার ও বাংলাদেশে বিশপ্রজাতির ঘাসফড়িং শনাক্ত করা হয়েছে ৷ সাধারন কয়েকটি প্রজাতির মধ্যে আছে, Schistocerca americana, Romalea microptera, এবং Poekilocerus pictus.

খাদ্য: ঘাসফ‌ড়িং তৃণ‌ভোজী বা শাকাশী প্রাণী। ডিম থে‌কে ফোটার পরপরই, নিম্ফ অবস্থায় ঘাসফ‌ড়িং চারপা‌শের যে কোন ছোট ছোট, সহজপাচ্য গাছ, ঘাস বা নতুন কোমল শাখা-প্রশাখা খে‌তে শুরু ক‌রে। দু'একবার খোলস মোচ‌নের পর একটু বড় হ‌লে শক্ত উ‌দ্ভিজ খাবার গ্রহণ ক‌রে। তরুণ ঘাস ফ‌ড়িং পূর্ণাঙ্গ‌দের মতই নি‌র্দিষ্ট উ‌দ্ভিজ খাবার গ্রহণ ক‌রে। তখন খাদ্য তা‌লিকায় ঘাস,পাতা ও শস্য প্রধান খাবার হিসে‌বে উ‌ঠে আ‌সে । বে‌শির ভাগ ঘাসফ‌ড়িং অ‌নেক প্রজা‌তির উ‌দ্ভিদ থে‌কে আহার সংগ্রহ ক‌রে, দু'একটি প্রজা‌তি সু‌নি‌র্দিষ্ট উ‌দ্ভিদ থে‌কে আহার গ্রহণ ক‌রে ।

বাহ্যিক গঠন

আকার আকৃতি

এদের দেহ সরু, লম্বাটে, বেলনাকার, খণ্ডায়িত এবং দ্বিপার্শীয় প্রতিসম। এরা তুলনামূলক বৃহদাকৃতির পতঙ্গ এবং লম্বায় ৮-৯ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হতে পারে।

বর্ণ

এদের দেহের বর্ণ হরিদ্রাভাব সবুজ বা বাদামী বর্ণের হয়ে থাকে। অনেকক্ষেত্রে দেহে বিভিন্ন বর্ণের গাঢ় দাগ থাকে। এদের অনেক প্রজাতির দেহের বর্ণ বাসস্থানের সাথে মিলে যায়, যা ক্যামোফ্লাজ নামে পরিচিত।

বহিঃকঙ্কাল

ঘাসফড়িং-এর দেহ কাইটিন নির্মিত কিউটিকল নামক বহিঃকঙ্কালে আবৃত। প্রতিটি দেহখণ্ডকে কিউটিকল পুরু ও শক্ত পাতের মতো গঠন সৃষ্টি করে। এদের স্ক্লেরাইট বলে। দুটি স্ক্লেরাইটের মধ্যবর্তী কিউটিকল পাতলা ও নরম থাকে। এদের সূচার বলে। প্রতি দেহখণ্ডকের পৃষ্ঠদেশীয় পাতকে টার্গাম বা টার্গাইট বলে এবং অঙ্কদেশীয় পাতকে স্টার্নাম বা স্টার্নাইট বলে। এরা পার্শ্বদেশে প্লিউরন বা প্লুরাইট পাত দ্বারা পরস্পর যুক্ত থাকে।

দেহের বিভক্তি

অন্যান্য পতঙ্গের মতো ঘাসফড়িং-এর দেহ তিনটি অঞ্চলে বিভক্ত, যথা- মস্তক(পুঞ্জাক্ষি,সরলাক্ষি,এন্টেনা,মুখোপাঙ্গো),বক্ষ(ডানা,পা,স্পাইরাকাল),উদর(টিমপেনাম,শ্বাসরন্ধ্র,পায়ু,বহিঃজননাঙ্গ)

তথ্যসূত্র


This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.