মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক

মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক (জন্মঃ ১৯৬৯) বাংলাদেশের একজন ইসলামী ব্যক্তিত্ব। তিনি ঢাকার ইসলামী গবেষণামূলক উচ্চতর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মারকাযুদ দাওয়াহ আল ইসলামিয়ার উলূমুল হাদীস (উচ্চতর হাদীস শাস্ত্র) অনুষদ এবং রচনা ও গবেষণা বিভাগের প্রধান এবং মাসিক আলকাউসারের তত্ত্বাবধায়ক।[1][2] এছাড়াও তিনি ২০১২ সালে সরকারের গঠিত বাংলাদেশ কওমী মাদ্রাসা শিক্ষা কমিশনের সদস্য এবং হাদীসশাস্ত্রের বিশেষজ্ঞ গবেষক ও পণ্ডিৎ ব্যক্তিত্ব।[3][4]

মুহাম্মদ আব্দুল মালেক
উপাধিমাওলানা, মুফতি
জন্ম১৯৬৯
কুমিল্লা
জাতিভুক্তবাংলাদেশি
মাজহাবহানাফি
শাখাসুন্নি
মূল আগ্রহহাদীস, প্রাচীন পাণ্ডুলিপি উদ্ধার ও সম্পাদনা
লক্ষণীয় কাজবাংলাদেশে হাদীস ও ফিকহ শিক্ষার উন্নয়ন

শিক্ষাজীবন

তার শিক্ষাজীবন শুরু হয় চাঁদপুরের শাহরাস্তির 'খেড়িহর কওমি মাদ্রাসা'য়। সেখানে তিনি মিশকাত জামাত পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন। এরপর তিনি পাকিস্তানের করাচিতেবিনোরি টাউন জামিয়াতুল উলূম আলইসলামিয়ায় ভর্তি হন।১৯৮৮ সালে তিনি সেখানে তাকমীল ( ইসলামিক স্টাডিজ-এ মাস্টার্স সমমানের ডিগ্রি) সমাপন করেন। এরপর তিনি ঐ জামিয়াতেই মাওলানা আব্দুর রশীদ নোমানীর তত্ত্বাবধানে তিন বছর হাদীসশাস্ত্রে উচ্চতর শিক্ষা (তাখাসসুস ফিল হাদীস) গ্রহণ করেন এবং ১৯৯১ সালে তাখাসসুস ফিল হাদীস সমাপন করেন। এরপর তিনি দুই বছর করাচির দারুল উলূম মাদ্রাসায় মুফতি তাকী উসমানীর তত্ত্বাবধানে ফিকহ ও ফতওয়া বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষা ( তাখাসসুস ফিল ইফতা ) গ্রহণ করেন এবং ১৯৯৩ সালে তাখাসসুস ফিল ফিক্হ ওয়াল-ইফতা সমাপন করেন। পরবর্তীতে তিনি সৌদি আরবের রিয়াদে আল্লামা আব্দুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ-এর তত্ত্বাবধানে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত প্রায় আড়াই বছর হাদীসশাস্ত্রসহ বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণার কাজ করেন।[5]

কর্মজীবন

১৯৯৬ সালে তিনি ঢাকায় উচ্চতর ইসলামি শিক্ষা ও দাওয়াহ প্রতিষ্ঠান মারকাযুদ্ দাওয়াহ আলইসলামিয়া যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাসচিব এবং উলুমুল হাদীস অনুষদের প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন। ২০০৫ সাল থেকে মারকাযুদ্ দাওয়াহ আলইসলামিয়ার মুখপত্র হিসাবে মাসিক আলকাউসারের প্রকাশনা শুরু হয় এবং তখন থেকেই তিনি এই ম্যাগাজিনের তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।[5] এছাড়াও তিনি ঢাকার শান্তিনগরের আজরুন কারীম জামে মসজিদে জুমার নামাজের পরিচালনা করেন এবং জামিয়াতুল উলুম আলইসলামিয়া কওমি মাদরাসায় হাদীসশাস্ত্রে অধ্যাপনা করেন।[6] তিনি ২০১২ সালে সরকার গঠিত বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা কমিশনের একজন সদস্য।[7][8]

রচনাবলী

'মাসিক আলকাউসার'সহ বিভিন্ন ম্যাগাজিন ও পত্রিকায় তিনি হাদীসশাস্ত্রীয় নবউদ্ভাবিত বিভ্রান্তির নিরসনমূলক রচনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রবন্ধ-নিবন্ধ রচনা করেছেন। যেগুলোর মাঝে কিছু ইতিমধ্যেই গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও তিনি বাংলা ও আরবি ভাষায় বেশকিছু গবেষণাধর্মী মৌলিক গ্রন্থ রচনা করেছেন।[5] তার উল্লেখযোগ্য কিছু রচনা হলোঃ

  • তালিবুল ইলমের পথ ও পাথেয়
  • উম্মাহর ঐক্য : পথ ও পন্থা
  • তারাবীর রাকাআত সংখ্যা ও ঈদের নামায
  • হাদীস ও সুন্নাহয় নামাযের পদ্ধতি
  • প্রচলিত ভুল
  • কাবলাল জুমা: কিছু নিবেদন
  • হাদীস ও সুন্নাহ্‌য় কাবলাল জুমা
  • ঈমান সবার আগে
  • المدخل إلى علوم الحديث الشريف

তথ্যসূত্র

  1. "হাদিস-সুন্নাহ ডট কমের পরিচিতি পাতা"। ২৩ আগস্ট ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ সেপ্টেম্বর ২০১২
  2. ছরোয়ার, মুহাঃ গোলাম (২০১৪)। "বাংলা ভাষায় ফিকহ চর্চা (১৯৪৭-২০০৬): স্বরূপ ও বৈশিষ্ঠ্য বিচার"
  3. মাদ্রাসা ব্যবস্থাপনা ও শিক্ষার সুপারিশে কমিশন।বিডিনিউজ ২৪ ডট কম- এপ্রিল ১৫, ২০১২। ডিসেম্বর ২৭. ২০১২ সংগৃহীত
  4. বাংলার ডাক ২৪ ডট কম
  5. মাওলানা আবদুল মালেক সাহেবের সাক্ষাৎকার। মাসিক আলকাউসার, আগস্ট ২০০৭ সংখ্যা, পৃষ্ঠা নং- ২২। ডিসেম্বর ২৭. ২০১২ সংগৃহীত
  6. "জামিয়াতুল উলুম আলইসলামিয়ার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট"। ৫ এপ্রিল ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ জানুয়ারি ২০১৩
  7. "কওমী মাদ্রাসা ব্যবস্থাপনা ও শিক্ষাদানে কমিশন গঠন। ইসলামবার্তা ডট কম। ডিসেম্বর ২৭. ২০১২ সংগৃহীত"। ৬ মে ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ সেপ্টেম্বর ২০১২
  8. "বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষা কমিশন (অফিসিয়াল ওয়েবসাইট)"। এপ্রিল ১১, ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ February 01, 2013 এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)

আরো দেখুন

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.