হাওয়াই মিঠাই

হাওয়াই মিঠাই একপ্রকার মিষ্টি জাতীয় খাদ্যবিশেষ। এটি মুখে দিলে দ্রুত মিলিয়ে যায় বলে এর নাম রাখা হয়েছে ‘হাওয়াই মিঠাই’। কাঠির মাথায় যেন এক টুকরো গোলাপি কিংবা সাদ রঙের মেঘ। কোথাও বেড়াতে গেলে প্রায় সব ছোটরা এমনকী বড়রাও এই কাঠির মাথায় এক টুকরো মেঘ খাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে ওঠে। অনেকে মজা করে হাওয়াই মিঠাইকে বুড়ির মাথার পাকা চুলও বলেন। বাংলাতে যেমন অনেকগুলো নাম এই খাবারটির, তেমনি ইংরেজিতেও এর অনেক নাম; যেমন: কটন ক্যান্ডি, ফেয়ারি ফ্লস, ক্যান্ডি ফ্লস কিংবা স্পুন সুগার।

হাওয়াই মিঠাই
ঢাকার মেলায় হাওয়াই মিঠাই বিক্রি
অন্যান্য নামকটন ক্যান্ডি, ক্যান্ডি ফ্লস, ফেয়ারি ফ্লস
ধরনমিষ্টি
উৎপত্তিস্থলযুক্তরাষ্ট্র
প্রস্তুতকারীউইলিয়াম মরিসন এবং জন সি. হোয়ার্টন
প্রধান উপকরণচিনি, খাদ্যরঞ্জক
রন্ধনপ্রণালী: হাওয়াই মিঠাই  মিডিয়া: হাওয়াই মিঠাই

ইতিহাস

কানাডার প্যাকেনহ্যামে ম্যাপল স্বাদবিশিষ্ট হাওয়াই মিঠাই

চৌদ্দশতকে ইটালিতে চিনি দিয়ে তৈরি এই মজার খাবারটি প্রচলন শুরু হয়। সেই সময় ঘরোয়া ভাবেই সামান্য চিনির ঘন রস বিশেষ পদ্ধতিতে সুতোর মতো তৈরি করে বানানো হত হাওয়াই মিঠাই। আঠারো শতক পর্যন্ত এইভাবে তৈরি হয়েছে। ১৮৯৭ সালে মার্কিন উইলিয়ম মরিসন ও জন সি. ওয়ারটন হাওয়াই মিঠাই তৈরির জন্য প্রথম মেশিন আবিষ্কার করেন। এই মেশিনের সাহায্যে চিনির যে সুতো তৈরি হতে লাগল সেগুলো আরও সূক্ষ্ম আর বাতাস লাগার সঙ্গে সঙ্গেই শক্ত হয়ে যাওয়ার ফলে তাড়াতাড়ি খাবারটা তৈরি হয়ে যেতে লাগল। তবে মেশিনে তৈরি হাওয়াই মিঠাই তখন তেমন জনপ্রিয়তা পায়নি। ব্যাপকভাবে এর প্রসার বাড়ে ১৯০৪ সালে। সে বছর মরিসন এবং ওয়ারটন তাদের মেশিনে তৈরি হাওয়াই মিঠাই নিয়ে হাজির হলেন সেন্ট লুইসের বিশ্ব মেলায়। অবাক হওয়ার বিষয়, মেলার প্রথম দিনই ২৫ সেন্ট করে ৬৮ হাজার ৬৫৫ বাক্স হাওয়াই মিঠাই বিক্রি হয়েছিল, যা ছিল সে সময়ের হিসাবে অনেক বড় একটা অঙ্ক! ক্রমেই বিশ্বজুড়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় খাবারটি। চাহিদা ও জনপ্রিয়তার জন্য একাধিক কোম্পানি এগিয়ে এল এই মজাদার খাবারটি উৎপাদন ও বিপণনে। টটসি রোল অফ কানাডা লি. বিশ্বের সর্বাধিক হাওয়াই মিঠাই উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান।


দেখতে অনেকটা তুলার মতো বলে ১৯২০ সালে মার্কিনরা এই মিঠায়ের নাম দিয়েছে ‘কটন ক্যান্ডি’। তারা এই হাওয়াই মিঠায়ের এতই ভক্ত যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৭ ডিসেম্বর দিনটি ‘জাতীয় কটন ক্যান্ডি ডে’ হিসাবে পালন করা হয়।

ইউরোপ- আমেরিকার জয় করে আমাদের এখানে হাওয়াই মিঠাই তৈরি শুরু হয় এমন কথা বলা যায় না। কারণ চিনি দিয়ে তৈরি শোনপাপড়ি বহুকাল আগেই এখানে তৈরি হত। উন্নত বিশ্বের মত আমাদের দেশে অবশ্য আজও সেভাবে হাওয়াই মিঠাই উৎপাদন এবং সুন্দর প্যাকেজিং করে বিপণন হয় না। মেলা, বেড়ানোর জায়গা কিংবা রাস্তার ফেরিওয়ালারাই বিক্রি করে হাওয়াই মিঠাই।

চিত্রমালা

তথ্যসূত্র

    বহি:সংযোগ

    This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.