সেন্ট্রিওল
সেন্ট্রিওল হল প্রাণিকোষের নিউক্লিয় আবরণীর কাছাকাছি অবস্থিত বেলনাকৃতি বা দন্ডাকার ফাপা অণু নালিকা যুক্ত অঙ্গাণু। এটি একটি আবরণী বিহীন কোষাঙ্গাণু। সেন্ট্রিওল স্বচ্ছ দানাবিহীন যে অঞ্চলে বেষ্টিত থাকে তাকে সেন্ট্রোজোম বলে। ঘন ও নিরেট যে এলাকাটি একে বেষ্টন করে রাখে তার নাম সেন্ট্রোস্ফিয়ার। সেন্ট্রোস্ফিয়ার হতে কোষ বিভাজনের সময় এস্টার রে বিচ্ছুরণ হয়।
আবিষ্কার
1888 সালে বিজ্ঞানী বোভেরী সেন্ট্রিওলের গঠন ও কাজের বর্ণনা দেন ও নামকরণ করেন ।
উৎপত্তি ও ভৌত গঠন
ধারণা করা হয় আদি সেন্ট্রিওল হতে সরাসরি বিভাজনের মাধ্যমে সেন্ট্রিওল উৎপত্তি হয়। স্নায়ুকোষ ব্যতীত প্রায় অন্য সকল কোষেই সেন্ট্রিওল দেখা যায়। সাধারণত প্রতি কোষে একটি সেন্ট্রোজোম দেখা যায় যা দুটি সেন্ট্রিওল ধারন করে। অণুবীক্ষণ যন্ত্রে সেন্ট্রিওলকে দুমুখ খোলা পিপার মত দেখা যায়। এর দৈর্ঘ্য 300-500 ন্যানোমিটার । প্রতিটি সেন্ট্রিওলে তিনটি অংশ বিদ্যমান । এগুলি হল: সিলিন্ডার প্রাচীর, ত্রয়ী অণুনালিকা এবং যোজক। প্রস্থচ্ছেদে প্রতি সেন্ট্রিওলে 9টি অণুনালিকা দেখা যায়। ঘন ও সন্নিবিষ্ট 3টি উপনালিকা এক একটি ত্রয়ী গঠন করে।প্রতিটি ত্রয়ী পরস্পর সমদুরত্বে অবস্থিত এবং পরিধির সাথে 30 ডিগ্রি কোণ করে অবস্থান করে। উপনালিকাগুলোকে Threadgold A,B,C নামে চিহ্নিত করেছেন ।এরা পার্শবর্তী নালিকার সাথে তন্তু দ্বারা যুক্ত থাকে।
রাসায়নিক গঠন
সেন্ট্রিওলে সাধারণত প্রোটিন লিপিড ও ATP থাকে। এর অণুনালিকা গুলো টিবিউলিন নামক প্রোটিন দ্বারা গঠিত। তবে বর্তমানে এতে নিউক্লিক এসিডের সন্ধানপাওয়া গেছে।
কাজ
1.কোষ বিভাজনের সময় মাকুতন্তু গঠন করে। 2.শুক্রানুর লেজ গঠনে বিশেষ সহায়তা করে। 3.সিলিয়া ও ফ্লাজেলার বেসাল বডি হিসেবে কাজ করে।