সিসটোসোমায়োসিস

সিসটোসোমায়োসিস (বিলহার্সিয়া, স্নেইল ফিভার, এবং কাটাইয়ামা ফিভার হিসাবেও পরিচিত)[1][2] সিসটোসোমা ধরনের পরজীবী কৃমি দ্বারা সৃষ্ট রোগ। এটি মূত্রনালী অথবা অন্ত্রসমূহকে আক্রান্ত করতে পারে। পেটে ব্যথা, ডায়রিয়া, রক্ত পায়খানা অথবা মূত্রে রক্ত চিহ্ন অথবা উপসর্গ হিসাবে দেখা দিতে পারে। দীর্ঘ সময় ধরে সংক্রমিতরা যকৃতের ক্ষতি, কিডনি অকৃতকার্যতা, বন্ধ্যাত্ব, মূত্রাশয় ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে এটি কম বৃদ্ধি এবং শেখার অক্ষমতার কারণ হতে পারে।[3]

সিসটোসোমায়োসিস
হাতের চামড়ায় ফুসকুড়ি, সিসটোসোমা পরজীবীর প্রবেশের ফলে সৃষ্টি হয়।
শ্রেণীবিভাগ এবং বহিঃস্থ সম্পদ
বিশিষ্টতাসংক্রামক রোগ[*]
আইসিডি-১০B৬৫
আইসিডি-৯-সিএম১২০
মেডলাইনপ্লাস০০১৩২১
পেশেন্ট ইউকেসিসটোসোমায়োসিস
মেএসএইচD০১২৫৫২ (ইংরেজি)

পরজীবীপূর্ণ দূষিত পানির সংস্পর্শে রোগটি ছড়ায়। সংক্রমিত মিঠা পানির শামুক দ্বারা এই পরজীবীগুলো ছড়ায়। এই রোগটি বিশেষভাবে উন্নয়নশীল দেশসমূহের শিশুদের মধ্যে দেখা যায় যেহেতু তারা দূষিত পানিতে বেশি খেলা করে। অন্যান্য উচ্চ ঝুঁকি সম্পন্ন গ্রুপের মধ্যে আছে কৃষক, জেলে এবং দৈনন্দিন কাজে অপরিষ্কার পানি ব্যবহারকারী মানুষ।[3] এটি হেলমিন্থ সংক্রমণ গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত।[4] মানুষের মূত্র অথবা মলে পরজীবীর ডিম খুঁজে পাওয়ার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা যায়। রক্তে রোগটির বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি খুঁজে পাওয়ার মাধ্যমেও এটি নিশ্চিত করা যায়।[3]

এই রোগ প্রতিরোধের উপায়গুলোর মধ্যে রয়েছে বিশুদ্ধ পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিতকরণ এবং শামুকের সংখ্যা হ্রাস। যে সব এলাকায় সাধারণত এই রোগটি দেখা যায় সে সব এলাকার সকল গ্রুপসমূহকে বছরে একসাথে প্রসিকান্টেল ঔষধ দ্বারা চিকিৎসা করা যেতে পারে। সংক্রমিত লোকের সংখ্যা কমাতে এবং রোগের বিস্তার হ্রাসে এটি করা হয়। প্রসিকান্টেল ঔষধটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কতৃর্ক আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসায় সুপারিশ করা হয়।[3]

সিসটোসোমায়োসিস বিশ্বজুড়ে ২১০ মিলিয়ন মানুষকে আক্রান্ত করে,[5] এবং প্রতি বছর আনুমানিক ১২,০০০ [6] থেকে ২০০,০০০ জন মানুষ এতে মারা যায়।[7] এই রোগটি সবচেয়ে বেশি দেখা যায় আফ্রিকা, এশিয়া এবং দক্ষিণ আমেরিকায়[3] প্রায় ৭০টিরও বেশি দেশের প্রায় ৭০০ মিলিয়ন মানুষ বাস করে যেখানে এই রোগটি সচরাচর দেখা যায়।[7][8] গ্রীষ্মমন্ডলীয় দেশসমূহের অর্থনীতিতে সবচেয়ে প্রভাব বিস্তারকারী পরজীবী ঘটিত রোগের মধ্যে ম্যালেরিয়ার পরেই দ্বিতীয় অবস্থানে আছে সিসটোসোমায়োসিস।[9] প্রাচীনকাল থেকে বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিক পর্যন্ত, সিসটোসোমায়োসিসের উপসর্গ হিসেবে মূত্রে রক্তের উপস্থিতিকে মিশরে মাসিকের পুরুষ সংস্করণ হিসেবে দেখা হত এবং এভাবে বালকদের রূপান্তর হিসাবে বিবেচিত হত।[10][11] এটাকে অবহেলিত গ্রীষ্মমন্ডলীয় রোগের শ্রেণীভুক্ত করা হয়।[12]

তথ্যসূত্র

  1. "Schistosomiasis (bilharzia)"NHS Choices। ডিসে ১৭, ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মার্চ ২০১৪
  2. "Schistosomiasis"Patient.co.uk। 12/02/2013। সংগ্রহের তারিখ 11 June 2014 এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  3. "Schistosomiasis Fact sheet N°115"World Health Organization। ফেব্রুয়ারি ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মার্চ ২০১৪
  4. "Chapter 3 Infectious Diseases Related To Travel"cdc.gov। আগস্ট ১, ২০১৩। এপ্রিল ২, ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০১৪
  5. Fenwick, A (মার্চ ২০১২)। "The global burden of neglected tropical diseases."। Public health126 (3): 233–6। doi:10.1016/j.puhe.2011.11.015। PMID 22325616
  6. Lozano, R; Naghavi, M; Foreman, K; Lim, S; Shibuya, K; Aboyans, V; Abraham, J; Adair, T; ও অন্যান্য (ডিসে ১৫, ২০১২)। "Global and regional mortality from 235 causes of death for 20 age groups in 1990 and 2010: a systematic analysis for the Global Burden of Disease Study 2010"। Lancet380 (9859): 2095–128। doi:10.1016/S0140-6736(12)61728-0। PMID 23245604
  7. Thétiot-Laurent, SA; Boissier, J; Robert, A; Meunier, B (জুন ২৭, ২০১৩)। "Schistosomiasis Chemotherapy"। Angewandte Chemie (International ed. in English)52 (31): 7936–56। doi:10.1002/anie.201208390। PMID 23813602
  8. "Schistosomiasis A major public health problem"World Health Organization। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মার্চ ২০১৪
  9. The Carter Center। "Schistosomiasis Control Program"। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৭-১৭
  10. Kloos, Helmut; Rosalie David (২০০২)। "The Paleoepidemiology of Schistosomiasis in Ancient Egypt" (PDF)Human Ecology Review9 (1): 14–25।
  11. Rutherford, Patricia (২০০০)। "The Diagnosis of Schistosomiasis in Modern and Ancient Tissues by Means of Immunocytochemistry"Chungara, Revista de Antropología Chilena32 (1)। আইএসএসএন 0717-7356
  12. "Neglected Tropical Diseases"cdc.gov। জুন ৬, ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২৮ নভেম্বর ২০১৪

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.