সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়
সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় হচ্ছে বাংলাদেশ এবং একই সাথে ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীন বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অন্যতম। এটি ১৮৩৬ সালে স্থাপিত হয়। বিদ্যালয়টি সিলেট জেলার সুরমা নদীর তীরে কালীঘাটে অবস্থিত।
সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় | |
---|---|
অবস্থান | |
সিলেট বাংলাদেশ | |
তথ্য | |
ধরন | সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়, বালক |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৮৩৬ |
শিক্ষার্থী সংখ্যা | ২২০০ |
ক্যাম্পাস | শহর |
ডাকনাম | পাইলট স্কুল |
ওয়েবসাইট | http://www.sylgovpilothss.edu.bd/ |
ইতিহাস
ঊনবিংশ শতাব্দী
১৮৩০ সালের দিকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনামলে লর্ড বেন্টিক এই অঞ্চলের মানুষ যেন সঠিকভাবে ইংরেজি বলতে পারে সেই লক্ষ্যে এই বিদ্যালয়টি স্থাপনের নির্দেশ দেন।[1] ১৮৪১ সালে এখানে মাত্র ৪১ জন ছাত্র পড়াশোনা করত। এরপর রেভেন্ডার প্রাইজ প্রধান শিক্ষক হিসাবে বিদ্যালয়টির দায়িত্ব নেন এবং বিদ্যালয়টিকে একটি মিশনারি বিদ্যালয়ে রুপান্তর করেন। তখন বিদ্যালয়টি রেভেরেন্ড প্রাইজের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ১৮৬৯ সালে বিদ্যালয়টির নাম পরিবর্তন করে "সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়" নামকরণ করে হয় এবং রায় সাহেব দুর্গা কুমার বসুকে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে বিদ্যালয়টি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় এবং পরবর্তীতে বিদ্যালয়টি সরিয়ে নিয়ে বর্তমানে যে স্থানে রয়েছে (কালীঘাট) সেখানে স্থানান্তর করা হয়।
বিংশ শতাব্দী
১৯০৩ সালে রায় সাহেব দুর্গা কুমার বসু স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করলে বাইকুন্থানাথ ভট্টাচার্য বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯১৮ সালে আরও একটি ভূমিকম্পে বিদ্যালয়টি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় এবং ১৯১৯ সালে বিদ্যালয়টি পুনঃস্থাপিত হয়। এটি ১৯২৬ সালে ভয়াবহব বন্যার ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং ১৯২৯ সালে শুধুমাত্র একটি ভবন ছাড়া পুরো বিদ্যালয়টি আগুনে পুড়ে যায়। ১৯৩৯ সালে ২য় বিশ্ব যুদ্ধর সময় বিদ্যালয় ভবনকে সৈনিকদের থাকার ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করা হয় এবং সৈনিকরা চলে যাওয়ার পর বিদ্যালয়টির কাজ পুনরায় শুরু হয়। ১৯৬২ সালে আব্দুল ওয়াহিদ চৌধুরী প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং বিজ্ঞানাগারের উন্নতি করান এবং শিক্ষকের সংখ্যা বৃদ্ধি করেন। ১৯৬৭ সালে তিনি চট্টগ্রাম বিভাগের সেরা প্রধান শিক্ষক হিসেবে নির্বাচিত হন ।একই সালে বিদ্যালয়টির আমুল পরিবর্তনের কারণে তাকে "তেমগা-ই-খেদ্মাত" পুরস্কার দেয়া হয়। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী সৈন্যরা বিদ্যালয়টিতে আগুন লাগিয়ে দেয়, অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি ধ্বংস করে এবং বিভিন্ন বই পুস্তক জ্বালিয়ে দেয়।
কলেজে উন্নিতকরন
২০১৩ সালে এটিকে কলেজে উন্নীত করা হয়। কিন্তু এখন ( ২০১৮ ) পর্যন্ত এর কার্যক্রম শুরু হয়নি।
পোশাক
স্কুল ব্যাজসহ সাদা শার্ট এবং নেভি ব্লু প্যান্ট, সাদা রঙের পিটি সু (কেডস)। শীতে নেভি ব্লু সোয়েটার।
উল্লেখযোগ্য শিক্ষার্থী
- সৈয়দ মুজতবা আলী - সাহিত্যিক;
- মহম্মদ আতাউল গণি ওসমানী - প্রাক্তন সেনাপ্রধান;
- ডঃ আব্দুল মালিক - হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ;
- শাহ এ এম এস কিবরিয়া - সাবেক অর্থমন্ত্রী
- হুমায়ূন রশীদ চৌধুরী - রাজনীতিবিদ;
- সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম - সাহিত্যিক;
- শুভ্র দেব - গায়ক;
- আবুল মাল আব্দুল মুহিত - রাজনীতিবিদ;
- আবুল কালাম আব্দুল মোমেন - অর্থনীতিবিদ,কূটনীতিবিদ
- বদর উদ্দিন আহমেদ কামরান - রাজনীতিবিদ
তথ্যসূত্র
- Siddiquee, Iqbal. "Sylhet Government Pilot High School: 171 Years", Star Insight (২৩ জুন ২০০৭)