সিদ্ধার্থ (উপন্যাস)

সিদ্ধার্থ নোবেল পুরস্কার বিজয়ী জার্মান লেখক হেরমান হেস এর লেখা অন্যতম জনপ্রিয় একটি উপন্যাস। গৌতম বুদ্ধের সময়ে ব্রাক্ষণ পরিবারে জন্মগ্রহণকারী "সিদ্ধার্থ" নামে এক যুবকের আধ্যাত্বিক অভিযাত্রা এবং দর্শন এই উপন্যাসের মূল উপজীব্য।

সিদ্ধার্থ
লেখকহেরমান হেস
অনুবাদকজাফর আলম
দেশজার্মানি
ভাষাজার্মান
ধরনউপন্যাস
প্রকাশকবিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র
প্রকাশনার তারিখ
২০০২ (বাংলাদেশ)
মিডিয়া ধরনমুদ্রণ (কাগজে)
পৃষ্ঠাসংখ্যা৭৯
আইএসবিএনঅজানা
ওসিএলসি9766655

হেরমান হেস এর এই নবম উপন্যাসটি লেখা হয়েছিল জার্মান ভাষায় , খুব সরল অথচ মাধুর্যপূর্ণ ছন্দে । হেরমান হেস ১৯১০ সালে ভারতে কিছুদিন কাটানোর পর, বইটি সর্বপ্রথম প্রকাশ পায় ১৯১২ সালে । বইটি যুক্তরাষ্ট্রে সর্বপ্রথম প্রকাশ পায় ১৯৫২ সালে এবং ৬০ এর দশকে বেশ প্রভাব বিস্তার করে। হেস বইটি উৎসর্গ করেন প্রিয় বন্ধু এবং নবেল পুরস্কার বিজয়ী ফরাসি নাট্যকার রোমেইন রোনাল্ড কে।

বাংলাদেশে বইটি সর্বপ্রথম প্রকাশ করে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র, ২০০২ সালে । বইটি অনুবাদ করেন জাফর আলম এবং সম্পাদনা করেন অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ

সিদ্ধার্থ শব্দটি এসেছে সংস্কৃত সমাস, সিদ্ধ (অর্জন) + অর্থ ( সম্পদ/ জ্ঞান ) = সিদ্ধার্থ (অর্জিত জ্ঞান)। অর্থ্যৎ কোন যাত্রী ( অনুষন্ধিৎসু ব্যক্তি বিশেষ) যিনি তার মোক্ষম লক্ষ্যে পৌছুতে সক্ষম হন। বুদ্ধত্ব লাভের পূর্বে গৌতম বুদ্ধের নাম ছিল রাজপূত্র "সিদ্ধার্থ "গৌতম। তবে এই উপন্যাসের সিদ্ধার্থ এবং গৌতম বুদ্ধ দু'জন ভিন্ন মানুষ।

সিদ্ধার্থ গ্রন্থ সম্পর্কে মার্কিন লেখক হেনরি মিলার বলেছেন : "সাধারণভাবে পরিজ্ঞাত বুদ্ধকে অতিক্রম করে এখানে নতুন এক বুদ্ধ সৃষ্টি করা হয়েছে এবং এ সাফল্য অভাবিতপূর্ব।"

সারাংশ রূপরেখা

গল্পের পটভূমি গৌতম বুদ্ধ - এর সময়কার প্রাচীন ভারত। ( পঞ্চম - দশম শতাব্দির মধ্যবর্তি সময়ে )গল্পের শুরু হয় ব্রাম্মণপূত্র সিদ্ধার্থ কে দিয়ে যে তার বাল্যবন্ধু এবং ছায়াসঙ্গী গোবিন্দ কে নিয়ে গৃহত্যাগ করে। তারা দুজন অন্তরাত্মার আলোর সন্ধানে যাত্রা শুরু করে। সিদ্ধার্থ বিভিন্ন ঘটনা এবং জীবনের ঘাত প্রতিঘাতের চেতনায় এক পর্যায়ে তার লক্ষ্যে পৌছুবার উপক্রম হয়। চেতনা হল মানুষের জীবনে ঘটে যাওয়া বিভন্ন ঘটনার অভিজ্ঞতার প্রতিফলন - যা কিনা মানুষের উপলব্ধি, শিক্ষা এমনকি জ্ঞানও বটে। উপলব্ধি আসে আত্মসিদ্ধি এবং অন্ত:করণ থেকে। হেসের সিদ্ধার্থ উপন্যাসটিতে মানুষের জীবনে লব্ধ অভিজ্ঞতাকে দেখানো হয়েছে সত্যকে জানার এবং আলোকিত হওয়ার সর্বোৎকৃষ্ট পথ হিসেবে। হেসের সৃষ্ট চরিত্র সিদ্ধার্থ দেখায় যে প্রকৃত জ্ঞান বিদ্যা, ধ্যান কিংবা পার্থিব সুখ থেকে নিজেকে বঞ্চিত করে কন্টক আসনে শায়ন করলেই পাওয়া যায় না, বরং তা আসে জীবনের মুখোমুখি হয়ে সংসার থেকে অভিজ্ঞাত উপলব্ধি দিয়ে।

সুতরাং, বিছিন্ন কিছু ঘটনা দিয়ে জীবনকে আসলে বিচার করা অর্থহীন - সিদ্ধার্থ উপোষ করে কিংবা প্রেম এবং বাণিজ্যের নেশায় নিমগ্ন হয়ে কোনও ভাবেই নির্বাণ লাভ করতে পারে না। যদিও এগুলোর কোনটিই নির্বান লাভের পথে বাধা হয়ে দাড়ায়নি বরং জীবনে ঘটে যাওয়া প্রতিটি ঘটনাই সিদ্ধার্থ'র আত্মপলোদ্ধিতে কোনও না কোন ভাবে কাজে এসেছে। ঘটে যাওয়া এই সব ঘটনাগুলোই অভিজ্ঞতার ভান্ডারে যুক্ত হয়েছে।

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.