মুনশি আশরাফ হোসেন

সাহিত্যরত্ন মুনশি আশরাফ হোসেন (১৮৯২-১৯৬৫) বাঙালি কবি, গবেষক, পুথি ও লোকসাহিত্য সংগ্রাহক।[1]

আশরাফ হোসেন
জন্ম১৮৯২
রহিমপুর গ্রাম, কমলগঞ্জ থানা, সিলেট, ব্রিটিশ ভারত
মৃত্যু২৪ জানুয়ারি ১৯৬৫
সিলেট, পূর্ব পাকিস্তান, পাকিস্তান
ভাষাবাংলা
নাগরিকত্ব ব্রিটিশ ভারতীয়
পাকিস্তানি
ধরনলোকসাহিত্য
উল্লেখযোগ্য রচনাবলিআশরাফ দেওয়ানা, দিলকুশ কন্যার বারমাসী, মক্তবি বাল্যশিক্ষা
উল্লেখযোগ্য পুরস্কারসাহিত্যরত্ন
কাব্যবিনোদ
তমগা-ই-কায়েদে আজম

প্রারম্ভিক জীবন

আশরাফ হোসেন ১৮৯২ সালে সিলেটের কমলগঞ্জ থানার রহিমপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি স্থানীয় মক্তবে শিক্ষা শুরু করেছেন। কওমি মাদ্রাসায় পাঁচ বছর শিক্ষার্জনের পর তিনি মুনশি উপাধি লাভ করেন। কালিপ্রসাদ মধ্য ইংরেজি স্কুলে তিনি তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন।[1]

কর্মজীবন

এর তিন বছর পর ১৯১৮ সালে নিজ গ্রামে তার স্থাপিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন। ১৯২২ সালে তিনি এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হন। একই বছর শিলচর নর্মাল স্কুল থেকে গুরু ট্রেনিং পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।[1]

সাহিত্যিক

আশরাফ হোসেন ১৯১৮ সালে সাহিত্য চর্চা শুরু করেন। বিভিন্ন ম্যাগাজিন ও পত্রিকায় তিনি স্থানীয় সমস্যাদি নিয়ে লেখালেখি করতেন। একই সময়ে লোকসাহিত্য সংগ্রহ নিয়ে উৎসাহিত হন। দীনেশচন্দ্র সেনের পূর্ববঙ্গ-গীতিকা গ্রন্থে তার সংগৃহিত মণিপুরের লড়াই সংকলিত হয়েছে।[1]

তিনি ১২টি মৌলিক গ্রন্থ প্রণয়ন করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে আশরাফ দেওয়ানা, ভূমিকম্পের কবিতা, আদম খাঁ দেওয়ানের গীত ইত্যাদি। লোকসাহিত্য বিষয়ে তার সম্পাদিত ৩০টি গ্রন্থ রয়েছে যার মধ্যে রয়েছে দিলকুশ কন্যার বারমাসী, শান্তিকন্যার বারমাসী, লিলাইর বারমাসী, মধুমালার গীত প্রভৃতি। এছাড়াও তিনি ১৭টি পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করেছেন। যেমন মক্তবি বাল্যশিক্ষা, সাহিত্য সুধা, নববিধান ধারাপাত ইত্যাদি। মাসিক আল ইসলাহ পত্রিকায় তার রচিত সিলহটের ইতিহাস ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছে।[1]

সম্মাননা

সাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে মুর্শিদাবাদ বঙ্গ সাহিত্য মন্ডল ১৯৩৫ সালে তাকে পুরাতত্ত্ববিদ উপাধি দেয়। ১৯৪৩ সালে আসাম সরকার তাকে সাহিত্য বৃত্তি প্রদান করে। ১৯৫২ সালে নিখিল বঙ্গ সাহিত্য সংঘ তাকে সাহিত্যরত্নকাব্যবিনোদ উপাধি দেয়। ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান সরকার তাকে তমগা-ই-কায়েদে আজম উপাধি প্রদান করে। বাংলা একাডেমি তাকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছিল।[1]

মৃত্যু

আশরাফ হোসেন ১৯৬৫ সালের ২৪ জানুয়ারি নিজ গ্রামে ইন্তেকাল করেন।[1]

তথ্যসূত্র

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.