সর্ষের তেল
সর্ষের তেল বা সরিষার তৈল সর্ষের (সরিষা) বীজ নিষ্পেষণ দ্বারা প্রস্তুত তেল। এই তেল রান্নার জন্যে, এবং গায়ে মাখা বা মালিশ করার কাজে ব্যবহার হয়। সর্ষের তেলের ঝাঁঝের জন্যে সর্ষের তেলের রান্নার আলাদা বিশেষত্ব আছে।
সর্ষের তেলের ঝাঁঝের কারণ অ্যালাইল আইসোথায়োসায়ানেট নামক একটি উদ্বায়ী সালফারযুক্ত যৌগ। সর্ষের তেল যদি জলের সংস্পর্শে না আসে তাহলে কিন্তু তাতে ঝাঝঁ হয় না। তাজা সর্ষের তেলে অ্যালাইল আইসোথায়োসায়ানেট থাকে না, থাকে সিংগ্রিন নামে তার গ্লুকোসিনোলেট যৌগ। জল বা অ্যাসিডের সাথে মিশ্রণ বা আলোড়নের ফলে মাইরোসিনেজ নামে একটি উৎসেচক সক্রিয় হয়ে সিংগ্রিন থেকে গ্লুকোজ আলাদা করে দিয়ে ঝাঁঝালো অ্যালাইল আইসোথায়োসায়ানেট তৈরি করে।


সর্ষের তেলকে পাতন করলেও উচ্চতাপে মাইরোসিনেজ সক্রিয় হয়ে যায় ও অ্যালাইল আইসোথায়োসায়ানেট উবে যায়, পরে তাকে ঘনীভূত করে এই গন্ধ তেল (অ্যালাইল আইসোথায়োসায়ানেট) পাওয়া যায়। অ্যালাইল আইওডাইড ও পটাসিয়াম থায়োসায়ানেটের রাসায়নিক বিক্রিয়া দ্বারাও কৃত্রিম ভাবে এটি প্রস্তুত করা যায়। এটিকে কৃত্রিম সর্ষের তেল বলে। এটি খাবারে সর্ষের তেলের গন্ধ দেবার জন্যে ব্যবহার হয়।
সর্ষের তেলে ভেজাল
সর্ষের তেলে সস্তা ভেজাল দেওয়ার জন্য অনেক সময় শেয়ালকাঁটার বীজের তেল ব্যবহার হয়। ১৯৯৮ সালে উত্তর ভারতে কয়েকটি বিখ্যাত খাদ্যতেল কোম্পানির সর্ষের তেলের মধ্যে এর ভেজাল থাকার কারণে প্রায় আড়াই হাজার লোকের মধ্যে এর বিষক্রিয়া দেখা যায়, এবং অন্ততঃ ৬৫ জন মারা যায়।
ভেজাল নির্ণয় প্রক্রিয়া: টেস্টিউবে অল্প তেল ও নাইট্রিক এ্যাসিড দিয়ে বেশ ঝাঁকিয়ে রেখে দিতে হবে। লালবাদামী বা হলুদ রঙ এ্যাসিডে দেখা যাবে।