শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা

শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা রাজশাহী মহানগরবাসীর অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র। এটি রাজশাহী শহরের অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র এবং শিশুপার্ক হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।[1]

শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা
রাজশাহী চিড়িয়াখানা
শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানায় নির্মিত ভেনাস দ্বীপ এর প্রতিকৃতি
ধরনবিনোদন পার্ক
অবস্থানরাজশাহী
নির্মিত১৯৭২
পরিচালিতরাজশাহী সিটি কর্পোরেশন

ইতিহাস

ব্রিটিশ আমলে ইংরেজরা আমাদের দেশে ঘোড়দৌড় বা রেস খেলার প্রচলন করে। খেলা দেখা ও বাজি ধরায় প্রচন্ড উত্তেজানা সৃষ্টি হত। শহরাঞ্চলেই ঘোড়দৌড় মাঠ বা রেসকোর্স ছিল। রেসের নেশায় দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসতেন। অনেকে এ খেলায় সর্বস্বান্ত হয়েছে। কার্যত আয়োজকরাই লাভবান হয়েছে। রাজশাহী শহরের রেসকোর্স ছিল পদ্মার পাড়ে। এখন এই রেসকোর্স ময়দান রাজশাহী কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা।

রেস ও টমটম বন্ধ হওয়ার পর রাজশাহীর রেসকোর্স ময়দান দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত ছিল। শহরবাসীর বিনোদনের আদর্শ প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে তোলার জন্য তৎকালীন মন্ত্রী শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান ও জেলা প্রশাসক আব্দুর রউফ এখানে উদ্যান নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। ১৯৭২ সালে এর কার্যক্রম শুরু হয়। প্রায় ৩৩ একর ভূমিতে নির্মিত উদ্যানটিকে জেলা পরিষদের নিকট থেকে ১৯৯৬ সালের ২৬ নভেম্বর রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন গ্রহণ করে। তৎকালীন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী জিল্লুর রহমান মেয়র মো মিজানুর রহমান মিনুর নিকট আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেন।

সংগ্রহ

মূল্যবান গাছের চারা রোপণ, ফুল গাছের কোয়ারি ও কুঞ্জ তৈরি, লেক ও পুকুর খনন, কৃত্রিম পাহাড় তৈরি অর্থাৎ সামগ্রিক কাজ শুরু হয় ১৯৭৪-৭৫ ও ১৯৭৫-৭৬ সালে। তৎকালীন জেলা প্রশাসক শফিউর রহমান ও নজরুল ইসলামের সময়ে কিছু দুষ্প্রাপ্য বৃক্ষরোপণ ও উন্নয়নের প্রচেষ্টা চালানো হয়। তখন বাগানে ২টি বানর ছিল। ১৯৭৫ সালের শেষ ভাগে আব্দুর রহিম খানের প্রচেষ্টায় পটুয়াখালির জেলা প্রশাসক আব্দুস সাত্তারের নিকট থেকে ১ জোড়া হরিণ এনে রাখা হয়েছিল। তবে তখন চিড়িয়াখানা স্থাপনের চিন্তা-ভাবনা ছিল না। হরিণ দুটির বংশ বিস্তার হয়ে ১৮টিতে দাঁড়ালে রক্ষণা-বেক্ষণের অসুবিধার সৃষ্টি হয়। যার কারণে ১২টি হরিণ ঢাকা চিড়িয়াখানায় দান করা হয়। সে সময় সুষ্ঠু পরিচর্যার অভাবে বাগানের মূল্যবান বৃক্ষের যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছিল।[2]

১৯৮৩ সালে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আবদুস সালাম একটি বড় ড্রামে এক জোড়া ঘড়িয়ালের বাচ্চা ছেড়ে দিয়ে চিড়িয়াখানার পত্তন করেন। ১৯৮৫ সালে জেলা প্রশাসক ও পরে বিভাগীয় কমিশনার ছৈয়দুর রহমান ও জেলা পরিষদের প্রকৌশলী আবদুর রহিম এর প্রচেষ্টায় একটি পূর্ণাঙ্গ চিড়িয়াখানায় উন্নীত হয়। ১৯৮৬ সালের জুন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা উন্নয়নে ব্যয় হয় ৩৪ লক্ষ ৮১ হাজার ৪৯২ টাকা। ১৯৮৬ সালের ৩ জুন বিএডিসির তৎকালীন চেয়ারম্যান কর্ণেল (অব.) আনসার আলী উদ্যান ও চিড়িয়াখানা পরিদর্শন করে ১টি গভীর নলকূপ স্থাপনের ব্যবস্থা করেন। এর আগে এখানে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা ছিলনা। ফলে উদ্যান, পশু-পাখি ও মাছ সংরক্ষণ বিঘ্নিত হতো। উন্নয়ন ও সুষ্ঠু রক্ষণা-বেক্ষণের জন্য রাজশাহী সিটি কপোরেশন জেলা পরিষদের কাছ থেকে প্রকল্পটি কিনে নিয়েছে। ১৯৯৬ সালের ২৬ নভেম্বর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী জিল্লুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে সিটি মেয়র মিজানুর রহমান মিনুর কাছে প্রকল্পটি হস্তান্তর করেন।

যোগাযোগ ব্যাবস্থা

রাজশাহী সাহেব বাজার জিরো পয়েন্ট থেকে পশ্চিম দিকে আনুমানিক ৩ কি.মি. দূরত্বে রাজপাড়া এলাকায় পর্যটন মোটেলের পশ্চিমে এবং রাজশাহী বিভাগিয় কমিশনারের কার্যালয় ও রাজশাহী পুলিশ লাইন এর পূর্ব দিকে অবস্থিত। প্রধান রাস্তার উত্তর পার্শ্বের রাস্তা থেকে পার্কটি দেখা যায়। জিরো পয়েন্ট থেকে রিক্সা বা অটোতে যাওয়া যায়।

দর্শনীয় স্থান এর ছবি

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. "রাজশাহী কেন্দ্রীয় উদ্যান থেকে পালিয়েছে অজগর"দৈনিক আমার দেশ। ৪৪৬/সি ও ৪৪৬/ডি তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮: আমার দেশ পাবলিকেশন্স লিঃ। ২৮ এপ্রিল ২০১৫, ১৮:৪২ অপরাহ্ন। ২০১৬-০৫-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ 2016-04-22 এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  2. "শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা; প্রায় ১৪ কোটি টাকার উন্নয়নের সৌন্দর্য হারাচ্ছে ইউক্যালিপটাসে"দৈনিক লাল গোলাপ। দৈনিক লাল গোলাপ, আলুপট্টি, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। Wednesday, 05 November 2014। সংগ্রহের তারিখ 2016-04-22 এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.