রুস্তম পাশা

দামাত রুস্তম পাশা ওপোকোভিচ (১৫০০-১৫৬১) ছিলেন উসমানীয় সাম্রাজ্যের একজম অন্যতম সফল এবং ক্ষমতাশালী উজিরে আজম। তিনি প্রথমে ১৫৩৩ থেকে ১৫৫৩ এবং পরবর্তীতে ১৫৫৫ থেকে ১৫৬১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত উজিরে আজমের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছিলেন উচ্চশিক্ষিত, বহু ভাষায় পারদর্শী এবং বীর যোদ্ধা। তিনি সুলতান সুলেমান এবং হুররেম সুলতানের একমাত্র কন্যা শাহজাদী মিহরিমাহ সুলতান কে বিবাহ করেছিলেন৷ যারফলে তাকে দামাত অর্থাৎ জামাতা উপাধী দেওয়া হয়েছিলো। তার অঢেল সম্পদের কারনে তাকে ইতিহাসের সবচেয়ে সম্পদশালী উজিরে আজম ও বলা হয়। তার দ্বারা নির্মিত রুস্তম পাশা মসজিদ আজও তার ঐশ্বর্যের পরিচয় দেয়।

দামাত
রুস্তম ওপোকোভিচ
পাশা
শিল্পীর কল্পনায় রুস্তম পাশা
উসমানীয় সাম্রাজ্যের ৩২তম উজিরে আজম
কাজের মেয়াদ
২৮ নভেম্বর ১৫৪৪  ৬ অক্টোবর ১৫৫৩
সার্বভৌম শাসকপ্রথম সুলাইমান
পূর্বসূরীহাদিম সুলেইমান পাশা
উত্তরসূরীকারা আহমেদ পাশা
কাজের মেয়াদ
২৯ সেপ্টেম্বর ১৫৫৫  ১০ জুলাই ১৫৬১
সার্বভৌম শাসকপ্রথম সুলাইমান
পূর্বসূরীকারা আহমেদ পাশা
উত্তরসূরীসেমিজ আলী পাশা
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্মআনু.১৫০০
স্কার্দিন, উসমানীয় সাম্রাজ্য
মৃত্যু১০ জুলাই ১৫৬১ (বয়স ৬০–৬১)
ইস্তানবুল, উসমানীয় সাম্রাজ্য
সমাধিস্থলশাহজাদা মসজিদ
দাম্পত্য সঙ্গীমিহরিমাহ সুলতান (বি. ১৫৩৯–১৫৬১)
সন্তানআয়েশা হুমাশাহ হানিমসুলতান
সুলতানজাদা ওসমান

প্রাথমিক জীবন

ইতিহাসবিদদের মতে রুস্তম পাশা একজন ক্রোয়েশিয়ান ছিলেন। শৈশবকালেই তিনি নিজের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য ইস্তানবুল আসেন এবং একটি সরকারী পাঠাগারে অধ্যয়ন করেন, যেখানে শুধুমাত্র মেধাবী শিক্ষার্থীরাই পড়াশুনা করতো। তিনি সেখান থেকে বিভিন্ন বিষয়ে যেমন বিজ্ঞান, অর্থায়ন এবং হিসাবনিকাশের উপর পারদর্শী হয়ে উঠেন। এছাড়া তিনি তিনটি ভাষা লিখতে ও বলতে জানতেন। এরপর রুস্তম পাশা অটোমান সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। সেখানে তিনি অসাধারণ বীরত্ব এবং সাহস দেখান। যারফলে তাকে ১৫২৬ সালের মোহাচের যুদ্ধে সিলাহদার বাহিনীর প্রধান নিযুক্ত করা হয়। এরপর থেকে রুস্তমের আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তিনি তার অসাধারণ মেধা, ব্যক্তিত্ব এবং পরিশ্রমের মাধ্যমে বিভিন্ন পদে পদোন্নতি পান। তিনি তখনই সুলতান সুলেমান এর সুনজরে চলে আসেন এবং তার প্রিয় পাত্র হয়ে ওঠেন। সর্বপ্রথম তাকে আস্তাবল রক্ষক অর্থাৎ সকল অশ্বের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেখান থেকেই হুররেম সুলতানের সাথে তার সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। তিনি হুররেম সুলতানের একজন অনুগত সহচর হয়ে ওঠেন। ফলে তাকে তৎকালীন উজিরে আজম ইব্রাহীম পাশার রোষনলের স্বীকার হতে হয়। কারন ইব্রাহীম পাশা আর হুররেম সুলতানের মাঝে খুবই খারাপ সম্পর্ক ছিলো। ইব্রাহীম পাশা তাকে ইস্তানবুলের থেকে দূরে সড়ানোর জন্য একটি সাঞ্জাকের বে বানিয়ে তাকে পাঠিয়ে দেন।

রাজনৈতিক জীবন

ইব্রাহীম পাশার মৃত্যুদন্ডের পর রুস্তম পাশার পথ সহজ হয়ে যায়। তাকে দিয়ারবেকিরির বেলার বে পদে পদোন্নতি করা হয়। এরপর তাকে একজন উজির পদে নিযুক্ত করা হয় এবং শাহজাদী মিহরিমাহ সুলতানের সাথে বিবাহ দেওয়া হয়। ১৫৪৪ সালে সুলতান সুলেমান তাকে সাম্রাজ্যের উজিরে আজম পদে অধিষ্ঠিত করেন। ফলে তার হাতে অসীম ক্ষমতা চলে আসে। রুস্তম পাশা দুই মেয়াদে মোট ১৫ বছর উজিরে আজমের দায়িত্ব পালন করেন।

উজিরে আজম হিসেবে তিনি ছিলেন সফল। অটোমান সাম্রাজ্যের শ্রেষ্ঠ উজিরে আজমদের মধ্যে রুস্তম পাশাকে একজন মনে করা হয়। তিনি ইউরোপ এবং ভারত জুড়ে অসংখ্য বাণিজ্যের চুক্তি করেছিলেন। ফলে তার সময়ে অটোমান সাম্রাজ্য অর্থনৈতিক দিক থেকে এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যায়।

ব্যক্তিগত জীবন এবং সম্পত্তি

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.