রাশিয়ার দ্বিতীয় ক্যাথেরিন
এলিজাবেথও ছিলেন নিঃসন্তান।তাই তিনি উত্তরাধিকার রূপে বেছে নেন তার ভাইপো ডিউক ভন হলস্টেইন-গট্রপ কে,যাকে সবাই পিটার থ্রি বলে জানে। সেন্ট পিটারসবার্গ সোসাইটিতে পিটার থ্রি খুববেশি জনপ্রিয় ছিলেননা। উপরন্তু সে সরকার সামলানোর ভার দিয়েছিল তার হলস্টেইন আত্মীয় এবং জার্মান অফিসারদের হাতে।ক্যাথরিন টু ছিলেন পিটার থ্রী এর স্ত্রী। ক্যাথরিন সিনেটর, হাই অফিসিয়ালস এবং গার্ড রেজিমেন্ট এর অফিসারদের সাহায্যে পিটারকে আসনচ্যুত করলেন ২৮ জুন,১৭৬২ সালে।তখন থেকে রাশিয়ায় শুরু হয় ক্যাথরিন টু এর রাজত্ব যাকে তার অনুগতরা বলতো দ্য গ্রেট ক্যাথরিন।
গরীব জার্মান পরিবারের ক্যাথরিন রাশিয়ায় এসেছিল ১৫ বছর বয়সে পিটারের পত্নীরূপে।সে তার মনকে বিকশিত করেছিল সমসাময়িক সাহিত্যের মাধ্যমে। বিশেষ করে সাংবাদিক, চিত্রগ্রাহক, এনসাইক্লোপিডিয়ার রচয়িতাদের কাজের দ্বারা। ৩৩ বছর বয়সে যখন সে রাজ্যের ভার নিল তখন সে ছিল মানসিকভাবে এবং অভিজ্ঞার দিক দিয়ে তৈরি। তার জীবনী বিখ্যাত হয়েছে কিছু নাটকীয় ঘটনার জন্যে।
ক্যাথরিন এর রাজত্বকাল ছিল ১৭৬২-১৭৯৬।যা ছিল রাশিয়ান নারী শাসনকালের সবচেয়ে দীর্ঘ সময়।যদিও তার গুণসমুদয় ঢাকা পড়ে যেত তার ব্যক্তি জীবনের বিভিন্ন গুজব এর জন্যে।তার স্বামী পিটারকে সিংহাসনচ্যুত করতে বিশেষ সহায়ক ছিলেন তার প্রেমিক গ্রিগরী অরলভ।পরবর্তীতে পিটারকে আটক এবং হত্যা করা হয়।
বিশ্বখ্যাত হেরিটেজ মিউজিয়াম চালু হয় তার সময়ে।তার মদতেই রাশিয়ানরা আয়ত্ত করতে থাকে পশ্চিমা ইউরোপিয়ান মতবাদ ও সংস্কৃতি। ক্যাথরিন এর রাজত্বকাল ছিল মহিলা আর্টিস্টদের জন্যে স্বর্ণযুগ। এসব মহিলা আর্টিস্টরা ছিল এরিস্টোক্রেটিক শ্রেণির কিন্তু এরা মেনে চলতো ক্যাথরিন এর নীতি।এদের মধ্যে বিখ্যাত ছিল নাটালিয়া ইভানোভনা কুরাকিনা, যে লিখেছিল প্রায় ৪৫ টা গান। কুরাকিনার গান এত জনপ্রিয় ছিল যে পিটার্সবার্গ তার ৮টা লেখা প্রকাশ করে।
ক্যাথরিন একজন সফল মিলিটারি শাসকও ছিলেন।তার সৈন্যদল অনেক নতুন রাজ্য জয় করে।ক্যাথরিন এর আগে রাশিয়া অনেকবার যুদ্ধে পরাজয় পেয়েছিল।
এই ক্যাথরিন এর মৃত্যু হয় নভেম্বর ১৭,১৭৯৬ সালে ৬৭ বছর বয়সে স্ট্রোক হয়ে।তার মৃত্যুর পর তার শত্রুরা গুজব রটায় সে ঘোড়ার সাথে যৌনসংগম করা অবস্থায় মারা গেছে,কেউ কেউ বলে সে বাথরুম এ মারা গেছে।কিন্তু কোন গুজবই সত্যি ছিলনা।
ক্যাথরিন এর পর তার ছেলে পল ওয়ান রাজ্যের দায়িত্ব নেয়।কিন্তু পল এর মৃত্যু হয় গুপ্তঘাতক এর দ্বারা ১৮০১ সালে।এরপর রাশিয়ায় ধীরে ধীরে ভূমিদাসত্ব লুপ্ত হলো ১৯শতকে।সম্পদের এই ঘাটতি একসময় চরমে পৌঁছায় এবং শুরু হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ১৯১৪ সালে।
যেহেতু রাশিয়ান সেনাদের অবস্থা খারাপ ছিল,সামাজিক ব্যবস্থাপনা লোপ পাচ্ছিল,তাই ১৯১৮ সালে নিকোলাস টু এর নিষ্পত্তির মধ্যে দিয়ে শেষ হয় রাশিয়ান রাজবংশ। Saha promita (আলাপ) ২০:০১, ১৫ আগস্ট ২০১৯ (ইউটিসি)saha_promita