রাইফেল

রাইফেল একধরনের বহনযোগ্য দীর্ঘ ব্যারেল যুক্ত আগ্নেয়াস্ত্র। নিখুঁতভাবে দূরপাল্লার লক্ষ্যভেদ করার উদ্দেশ্যে এগুলো বিশেষ ভাবে তৈরী করা হয়। গুলি ছোড়ার সময় রাইফেল সাধারণত দুই হাত দিয়ে ধরা হয় এবং ভারসাম্য রক্ষার্থে কাধও ব্যবহার করা হয়। এর ব্যারেলের ভেতরের দেওয়ালে প্যাঁচান খাঁজ থাকে। এই প্যাঁচান খাঁজ গুলোকে রাইফেলিং (Rifling) বলা হয়। এজন্য এগুলোকে প্রাথমিকভাবে মূলত 'রাইফেল্ড বন্দুক(Rifled Gun)' বলা হত এবং এটা থেকেই রাইফেল(Rifle) শব্দের উৎপত্তি। বর্তমানে লম্বা কিন্তু হাতে বহনযোগ্য, ট্রিগার(বন্দুকের ঘোড়া) যুক্ত, ভালভাবে দূরপাল্লার লক্ষ্য ভেদের সুবিধা যুক্ত সকল অস্ত্রই রাইফেল বলে পরিগনিত হয়। যুদ্ধে, আইনের প্রয়োগে, শিকারে এবং বিভিন্নরকম শ্যুটিং খেলায় রাইফেল ব্যাপকভাবে ব্যাবহৃত হয়।

আধুনিক রাইফেলের ক্রমবিকাশ
প্রথম: বাকার রাইফেল, ১৯শ শতাব্দীর প্রথম দিককার ফ্লিন্টলক রাইফেল .
দ্বিতীয়: প্যাটার্ন ১৮৫৩ এনফিল্ড, ১৯শ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ের ক্যাপলক রাইফেল্ড মাস্কেট.
তৃতীয়: ড্রেইজ নিডল গান, প্রথম আদর্শ সামরিক ব্রিচলোডিং রাইফেল.
চতুর্থ: হেনরি রাইফেল, প্রথম সফল লিভার অ্যাকশান রিপিটিং রাইফেল.
৫ম: লেবেল মডেল ১৮৮৬ রাইফেল, ১৯শ শতকের শেষ দিককার বোল্ট অ্যাকশান রাইফেল এবং এটাতেই প্রথম ধূম্র বিহীন বারুদ ব্যাবহৃত হয় .
ষষ্ঠ: এম-১ গ্যারান্ড, ২০শ শতাব্দীর প্রথম দিককার সেমি-অটোমেটিক রাইফেল এবং এটাই প্রথম সামরিক সেমি-অটোমেটিক রাইফেল.
সপ্তম: একে-৪৭, ২০শ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ের গ্যাস চালিত রিলোডিং সুবিধা যুক্ত, ম্যাগাজিন যুক্ত অটোমেটিক রাইফেল.
অষ্টম: এম-১৬ রাইফেল (অন্যান্য ধরন সমূহ এ১, এ২, এম৪ ক্যারবিন এবং এ৪), ২০শ শতাব্দীর শেষ দিককার গ্যাস চালিত রিলোডিং সুবিধা যুক্ত, ম্যাগাজিন যুক্ত এ্যাসাল্ট রাইফেল.
নবম: স্টিয়ার এ ইউ জি, ২০শ শতাব্দীর শেষ দিককার সিলেক্টিভ ফায়ার, বুলপাপ এ্যাসাল্ট রাইফেল.

পরিচিতি

ঐতিহ্যগত ভাবে রাইফেলে এক বার ট্রিগার চাপলে একটি গুলি (Projectile) ছোড়া হয়। আধুনিক রাইফেলগুলো সাধারণত একক শট (Single shot), বোল্ট অ্যাকশন(Bolt action), আধা-স্বয়ংক্রিয় (Semi-automatic), স্বয়ংক্রিয় (Automatic) ইত্যাদি ধরনের হয়।

একক শট, বোল্ট অ্যাকশন ও আধা-স্বয়ংক্রিয় রাইফেলগুলো থেকে একবার ট্রিগার চাপলে এক রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়। কেবলমাত্র স্বয়ংক্রিয় রাইফেলের ক্ষেত্রে একবার ট্রিগার চাপলে একাধিক রাউন্ড (দুই, তিন বা আরো বেশি) গুলি ছোড়া হয়।

ইতিহাস

রাইফেলের ব্যবহার কবে প্রথম শুরু হয় তা সঠিক ভাবে নির্ণয় করা যায়নি তবে ১৫শ শতাব্দীতে এই ব্যাপারে ইউরোপে বেশ কিছু পরীক্ষন চালানো হয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। তীরন্দাজরা অনেক আগেই এটা আবিষ্কার করেন যে তীরের পুচ্ছ-পালক একটু ঘুরিয়ে দিলে তীরের লক্ষ্যভেদের সঠিকতা অনেক খানি বৃদ্ধি পায়।

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.