রখুনি কান্ত জমিদার বাড়ি
রখুনি কান্ত জমিদার বাড়ি দিনাজপুর জেলায় অবস্থিত বিরামপুর উপজেলার অন্যতম প্রত্নস্থল হিসেবে পরিচিত। এটি রতনপুর নামক এলাকায় অবস্থিত এক ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি। [1] জমিদার রখুনি কান্ত এখানে বাস করতে বলে জানা যায়।
রখুনি কান্ত জমিদার বাড়ি | |
---|---|
বিকল্প নাম | রতনপুর জমিদার বাড়ি খানপুর জমিদার বাড়ি |
সাধারণ তথ্য | |
ধরন | বাসস্থান |
অবস্থান | বিরামপুর উপজেলা |
ঠিকানা | রতনপুর |
শহর | বিরামপুর উপজেলা, দিনাজপুর জেলা |
দেশ | বাংলাদেশ |
খোলা হয়েছে | আনুমানিক ১৮০০ শতকে |
স্বত্বাধিকারী | রাজকুমার সরকার |
কারিগরী বিবরণ | |
পদার্থ | ইট, সুরকি ও রড |
ইতিহাস
বিরামপুর উপজেলার উত্তরে ১২ কিলোমিটার দুরে খানপুর প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন অষ্টাদশ শতকের জমিদার বাড়িসহ জমিদারের ১২শ বিঘা জমি বনজ ফলজ ও ওষুধি বাগান রয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ব্রিটিশরা অষ্টাদশ শতকে ফুলবাড়ি জমিদারের পক্ষে খাজনা আদায়কারী হিসাবে রাজকুমার সরকারকে বিরামপুরের রতনপুর কাচারীতে প্রেরণ করা হয়। এখান থেকে তিনি বিরামপুর, নবাবগঞ্জ, হাকিমপুর ও ফুলবাড়ী এলাকার প্রজাদের নিকট থেকে নৈপুণ্য ও যোগ্যতার সাথে খাজনা আদায় করতেন। আদায়কারী কর্মদক্ষতায় সন্তুষ্ট হয়ে জমিদার তার বোনের সাথে রাজকুমারের বিয়ে দেয় এবং সাড়ে ৬শ বিঘা জমিসহ রতনপুর কাচারী উপহার দেন। সাধারণ আদায়কারী থেকে জমিদার বনে রাজকুমার আরো অধিক অর্থসম্পদের নেশায় মেতে ওঠেন। অপরদিকে একই মৌজায় আড়াইশত একর জমি ও অঢেল অর্থের মালিক রঘুহাসদা নামের একজন প্রতাপশালী সাওতাল ছিলেন। রাজকুমার সুযোগ বুঝে সাওতাল বঘু হাসদার কাছ থেকে ৫ বস্তা কাচা টাকা ধারে নিয়ে অন্য জমিদারের আরো ৩শ একর জমি নিলামে ডেকে ৫০ একর ফলের বাগান দখল করে নিয়ে উপকারী রঘু হাসদাকে বিতাড়িত করেন। এলাকার একক জমিদার হিসেবে তৈরী করে সুদৃশ্য দ্বিতল বিশিষ্ট মনোরম অট্টালিকা। জানা যায়, নতুন জমিদার রাজকুমারের রতন কুমার ও রক্ষনী কুমার নামে দুই পুত্র সন্তানের মধ্যে ১৬ বছর বয়সের বড় ছেলে রতন কুমার মন্দিরের পুকুরে গোসল করতে গিয়ে মারা যায়। পুত্র শোকে কিছুদিন পর রাজকুমারের মৃত্যু ঘটলে উনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে অঢেল সম্পদ, বাগান ও পুকুরসহ ১২শ বিঘা জমিদারী লাভ করেন রক্ষুনী রাজকুমার সরকার। বর্তমানে এখানে গড়ে উঠেছে একটি ইসলামিক মিশন হাসপাতাল, ১টি দাখিল মাদ্রাসা, মসজিদসহ বিশাল একটি পুকুর। জমিদারের তৈরীকৃত সুদৃশ্য দ্বিতল অট্টালিকাটিতে ইউনিয়ন ভূমি অফিস হিসেবে কাজ করছে। জেলা প্রশাসক রক্ষুনী বাবুর সম্পত্তি ১নং খাস খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। যুগ যুগ ধরে এই জমিদার বাড়ীটি মেরামত ও সংষ্কার না করায় তা ধ্বংস হতে চলছে।[2] বিরামপুর অঞ্চলের শাসক এবং জমিদার রখুনি কান্ত তার বসবাসের জন্য একটি বাড়ি নির্মাণ করে। ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় সে এ স্থান থেকে চলে যায়।[3]
অবকাঠামো
জমিদার বাড়ির স্মৃতিস্বরূপ এখন একটি দ্বিতল বিশিষ্ট ভবন ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। এই দ্বিতল ভবনটিও এখন অনেকাংশ প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে।
যাত্রাপথ
বিরামপুর-নবাবগঞ্জ রোডে রেল লাইন পার হয়ে রতনপুর বাজারে যেতে হয়। রতনপুর বাজারেই রখুনি কান্ত জমিদার বাড়ি অবস্থিত।
বর্তমান অবস্থা
জমিদার বাড়ির ভবন এখন ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও জমিদারদের সম্পত্তির উপর এখন একটি ইসলামিক মিশন হাসপাতাল, একটি দাখিল মাদ্রাসা ও একটি মসজিদ রয়েছে।
আরো দেখুন
- বিরামপুর উপজেলা
- স্বপ্নপুরী (বিনোদন পার্ক)
তথ্যসূত্র
- বিরামপুরের ঐতিহ্যবাহী জমিদার বাড়ি!
- http://birampur.dinajpur.gov.bd/site/page/7bd4dd84-18fd-11e7-9461-286ed488c766/উপজেলার-ঐতিহ্য
- "রখুনি কান্ত জমিদার বাড়ি"। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি ও বেসিস। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৫-০৩।