মোহাম্মদ কেরামত আলী

মোহাম্মদ কেরামত আলী পটুয়াখালী জেলাধীন দুমকী উপজেলার দুমকী গ্রামে ০১ জানুয়ারি, ১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মরহুম আইজ উদ্দিন মৃধা ও মাতার নাম মরহুমা আপতুন নেছা খাতুন।[1]

শিক্ষা জীবন

বরিশাল জিলা স্কুলে অধ্যায়নকালে তিনি শিষ্টাচারের জন্য “রানীগুপ্ত র্স্বনপদক”এবং ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় বাংলায় প্রথম স্থান অধিকারের জন্য “যোগেশচন্দ্র” পদক লাভ করেন। তিনি ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সমগ্র বাংলা ও আসামের মুসলমান ছাত্রদের মধ্যে ৫টি লেটারসহ প্রথম স্থান অধীকার করেন। কলিকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে কৃতিত্বের সাথে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। চাকুরী জীবনে তিনি অস্ট্রেলিয়া ও লাহরে উচ্চতর প্রশাসনিক প্রশিক্ষণ লাভ করেন। তিনি ওয়াশিংটন, মস্কো, টোকিও ও টগোতে বিশ্বব্যাংক ও জাতিসংঘ আয়োজিত সেমিনার এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন কোর্সে অংশ গ্রহণ করেন। তিনি বিশ্বব্যাংকের ইকোনোমিক ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট থেকে ফেলোশিপ লাভ করেন এবং অস্ট্রেলিয়ায় প্রশিক্ষণ কোর্সে তিনি প্রথম পুরস্কার লাভ করেন।

চাকুরী জীবন

১৯৪৮ সালে তিনি পাকিস্তানের প্রথম ব্যাচের সি.এস.পি. অফিসার হিসেবে চাকুরীতে যোগদান করেন। চাকুরী জীবনে তিনি জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় কমিশনার, মন্ত্রণালয়ের সচিব, রাষ্ট্রপতির মূখ্য সচিবসহ গুরুত্বপূর্ন প্রশাসনিক পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তিনি সিভিল সার্ভিসের সবোর্চ্চপদ মন্ত্রীপরিষদ সচিব হিসেবে নিযুক্ত হন। চাকুরী থেকে অবসর গ্রহণের পর তিনি বার্মা ও ভিয়েতনামে বাংলাদেশের রাষ্টদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

রাজনৈতিক জীবন

ছাত্র জীবনে সক্রিয়ভাবে রাজনীতি না করলেও প্রগতিশীল রাজনৈতিক মতবাদ সম্পর্কে তিনি সচেতন ছিলেন। কলকাতায় অধ্যায়নকালে তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজের মুসলিম ছাত্রবাস জিন্নাহ হলের নির্বাচিত জি.এস. ছিলেন। ১৯৯১ সালে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি যথাক্রমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, ডাক-তার ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন।

সমাজসেবা ও উন্নয়ন কর্মকান্ড

তিনি ১৯৬৯ সালে ১ জানুয়ারি পটুয়াখালী মহাকুমাকে জেলায় উন্নীত করেন, বরিশাল শের- ই বাংলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, বরিশাল ক্যাডেট কলেজ স্থাপন, বরিশাল বিমান বন্দর, ফরিদপুর-বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক, খেপুপাড়া রাডার স্টেশন, পটুয়াখালীতে বাংলাদেশ টেলিভিশন রিলে স্টেশন, পটুয়াখালী সদর হাসপাতাল, লঞ্চঘাট, পুলিশ লাইন, পটুয়াখালী সার্কিট হাউজ, সোনালী ব্যাংক ভবন ও পটুয়াখালী কালেক্টরেট ভবন স্থাপন করেন। দুমকীতে কৃষি কলেজ (বর্তমানে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়), জনতা কলেজ, দুমকী নাসিমা কেরামত আলী বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দুমকী আপতুননেছা খাতুন বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দুমকী আপতুননেছা খাতুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুমকী রেজিস্ট্রার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুমকী ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা, টি এন্ড টি, সাব-পোস্ট অফিস, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, জেলা পরিষদ ডাক বাংলো, মডেল পাঠাগার এবং দুমকী থানা কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠায় তার অবদান রয়েছে ।

মোহাম্মদ কেরামত আলী আল-কোরানের ওপর "The Message" গ্রন্থের প্রণেতা। মোহাম্মদ কেরামত আলী ৪ জুন, ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে পরলোক গমন করেন।

তথ্যসূত্র

  1. Hunter, B. (২০১৬-১২-২৩)। The Statesman's Year-Book 1993-94 (ইংরেজি ভাষায়)। Springer। আইএসবিএন 9780230271227।
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.