মাজার

মাজার একটি আরবী শব্দ, যা এখন শুধু বাংলাতেই ব্যবহৃত হয়। শব্দটি ফারসী দরগাহ শব্দের প্রতিশব্দ। এর ধাতুগত অর্থ ‘যিয়ারতের স্থান’। মাজার বলতে সাধারণত আওলিয়া-দরবেশগণের সমাধিস্থলকে বোঝায়।

মাজারকে রওযা বা কবরও বলা হয়। এর নিকটবর্তী স্থানে মসজিদ, মাদ্রাসা, মকতব ইত্যাদি গড়ে ওঠে। মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) মদীনার কবরস্থান জান্নাত-আল বাকীতে এবং উহুদযুদ্ধে শাহাদতপ্রাপ্ত সাহাবীদের কবরস্থানে গমন করতেন এবং তাদের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতেন। সুফীতত্ত্বের অনুসারীরা সুফী দরবেশদের কবরস্থান যিয়ারত করতে পছন্দ করেন। মাজার ওয়ালা কে প্রভু মেনে সিজদা করলে শিরক আর অলি হিসেবে সম্মান করে সিজদা করলে হারাম। [1] অনেক মাজারে সমাধিস্থ ব্যক্তির উরস অর্থাৎ জন্ম-মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়। একে ঈসালে ছওয়াবের মাহফিল বলে। ঐতিহাসিক মাজারগুলি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ওয়াক্ফ সম্পত্তি থাকে এবং খাদিমও থাকেন; অনেক ক্ষেত্রে তারা উত্তরাধিকারসূত্রে এ পদে অধিষ্ঠিত হন।

ভারতীয় উপমহাদেশে বিভিন্ন মুসলিম দেশ থেকে আগত ইসলাম প্রচারক আওলিয়া-দরবেশদের মাজারগুলি এখনও বিদ্যমান, যথা: আজমীরে খাজা মঈনউদ্দীন চিশতির মাজার, দিল্লিতে নিযামউদ্দীন আওলিয়ার মাজার, লাহোরে ফরিদউদ্দীন গঞ্জ-এ-শাক্কারের মাজার, সিলেটে হযরত শাহ জালালের ও হযরত শাহ পরাণের মাজার মাজার, রাজশাহীর শাহ মখদুম মাজার, ঢাকায় শাহ আলী বাগদাদীর মাজার, খুলনায় খানজাহান আলীর মাজার ,মজ্জুব হযরত সিরাজুল ইসলাম কোরাইশী (রহঃ) পাগলা বাবার মাজার শরীফ সিরাজ নগর,ভৈরব,কিশোরগঞ্জ, মাজনুন হযরত সৈয়দ সোহেল মুন্সী(রহঃ), মাজার শরীফ সিরাজ নগর,ভৈরব,কিশোরগঞ্জ ইত্যাদি। চট্টগ্রাম মাজারের শহর হিসেবে খ্যাত, কারণ সেখানে বারো-আওলিয়ার মাজার আছে। চট্টগ্রাম এ আরো আছে হযরত শাহ্ ছুফি মঈনুদ্দীন শাহ্ (রহ:) এর মাজার,মূফতি মুযাফ্ফর আহমদ (রহ.) এর মাজার,মহিলা ওলি শামীম জাহানের মাজার ,কালু শাহ রহ.মায়ার, হযরত শাহ সূফী নূর মোহাম্মাদ নিজামপুরী গাজীয়ে বালাকোট (রহ,) , হযরত শাহ আমানত (রহ.) এর মাজার। মহাস্থানগড় এ হযরত শাহ সুলতান ইব্রাহীম বলখী মাহী সাওয়ার (রহ.) এর মাজার। চাঁপাইনবাবগন্জ্ঞে হযরত শাহ নেয়ামতউল্লাহ (রহ.) এর মাজার। কুষ্টিয়া তে হযরত লালন শাহ (রহ.) এর মাজার। ঝিনাইদহে সুলতানুল আব্দাল হযরত শাহ সূফী প্রোফেসর আব্বাস উদ্দীন (রহ.) এর মাজার, পাগলা কানাই। যশোরে হযরত শাহ্ সূফী খবিরউদ্দীন (রহ), হযরত শাহ সূফী আব্দুল করিম (রহ.), হযরত শাহ সূফী চেরাগ আলী (রহ.), হযরত শাহ সূফী বোরহানউদ্দিন (রহ.), হযরত গরীব শাহ (রহ.) এর মাজার । বরিশালে হযরত শাহ সূফী নেছারুদ্দীন (রহ.) এর মাজার। ফেণী তে হযরত শাহ সূফী ছদরুদ্দীন (রহ.) এর মাজার। পঞ্চগড়ে শহীদ নূরুল ইসলাম ফারুকী (রহ.) এর মাজার । শেরেবাংলা নগরে শহীদ জিয়াউর রহমান (রহ.) এর মাজার। সহ আরো অনেক কামেল অলির মাজার বাংলাদেশে রয়েছে। মাজার এ সিজদা করা, মোমবাতি জ্বালানো, মাজারে শুয়ে থাকা ব্যাক্তি কারো ভালো মন্দ করতে পারেন এমন বিশ্বাস রাখা হারাম। কেউ যদি এরুপ বিশ্বাস করে তার ঈমান থাকবে না৷

তথ্যসূত্র

  1. "কবর যিয়ারত ও কবরবাসীর কাছে সাহায্যের আবেদন"

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় মির্জাখিল দরবার শরীফ। যেখানে রয়েছে হযরত মাওলানা মখছুছুর রহমান (ক.) এঁর মাজার।

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.