মাগফার আহমেদ চৌধুরী আজাদ
মাগফার আহমেদ চৌধুরী আজাদ (জন্ম: ১১ জুলাই, ১৯৪৬ - নিখোঁজ: ৩০ আগস্ট, ১৯৭১) যিনি শহীদ আজাদ নামে সমাধিক পরিচিত, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন গেরিলা যোদ্ধা। তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের ২নং সেক্টরের বিখ্যাত আরবান গেরিলা দল ক্র্যাক প্লাটুন এর সদস্য ছিলেন। ১৯৭১ সালের ৩০ আগস্ট ক্র্যাক প্লাটুনের আরও কয়েকজন সহযোদ্ধাসহ পাকহানাদারদের হাতে ধরা পড়েন নিজ বাসভবনে। পরের দিন তার মা মোসাম্মাৎ সাফিয়া বেগম তার সাথে দেখা করতে গেলে মায়ের কাছে আজাদ ভাত খেতে চেয়েছিলেন, ছেলের জন্য ভাত নিয়ে দেখা করতে গিয়ে আর খুঁজে পাননি সাফিয়া বেগম। তারপর দীর্ঘ ১৪ বছর ছেলের প্রতীক্ষায় আর ভাত খাননি সাফিয়া বেগম, রুপকথার মত এই বাস্তবতা নিয়ে পরে আনিসুল হক তার বিখ্যাত মা উপন্যাস রচনা করেন।[1]
মাগফার আহমেদ চৌধুরী আজাদ | |
---|---|
![]() মাগফার আহমেদ চৌধুরী আজাদ | |
জন্ম | মাগফার আহমেদ চৌধুরী আজাদ ১১ জুলাই ১৯৪৬ ঢাকা |
মৃত্যু | ৩০ আগস্ট ১৯৭১ ২৪) | (বয়স
নাগরিকত্ব | ![]() |
পরিচিতির কারণ | মুক্তিযোদ্ধা, ক্র্যাক প্লাটুনের সদস্য |
পিতা-মাতা | ইউনুস আহমেদ চৌধুরী, মোসাম্মাৎ সাফিয়া বেগম |
জন্ম ও পরিবার
আজাদের জন্ম ১৯৪৬ সালের ১১ জুলাই। তার বাবা তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানের ধনাঢ্য ব্যবসায়ী ইউনুস আহমেদ চৌধুরী এবং মা মোসাম্মাৎ সাফিয়া বেগম। তিনি ছিলেন তার বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। শৈশব কেটেছে নিউ ইস্কাটনের সুরম্য বাড়িতে। তবে পরবর্তীতে তার পিতার প্রতি ক্ষোভ নিয়ে মা সাফিয়া বেগম ফরাশগঞ্জের বাসায় চলে আসেন।
প্রারম্ভিক জীবন
আজাদ সবসময়েই ছিলেন স্বাধীনচেতা তরুণ। দুরন্ত, গানপাগল, সিনেমার পোক আর বইপড়ুয়া হিসাবেই আজাদ পরিচিত ছিল সবার কাছে। তবে পড়ালেখায় খুব বেশী মনোযোগী ছিলেন না। এস.এস.সি'তে সেকেন্ড ডিভিশন নিয়ে পাশ করেন। তারপরে পড়তে যান করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখান থেকেই স্নাতক উত্তীর্ণ হন তিনি। এরপরে ১৯৭০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে এম.এ. পাশ করেন।
মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ
ধনীর দুলাল হলেও ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে দেশমাতৃকার সেবার ডাকে ঝাপিয়ে পড়েন আজাদ। নাম লেখান কিংবদন্তীসম ক্র্যাক প্লাটুনে। বেশ কিছু সফল অভিযানও অংশ নিয়েছিলেন তিনি। এরপর ৩০ আগস্ট সহযোদ্ধাদের সাথে নিজ বাড়ি থেকে পাকহানাদারদের হাতে ধরা পড়েন। মুক্তিবাহিনীর তথ্য নেওয়ার জন্য তার উপরে চালানো হয় অমানুষিক অত্যাচার। সবকিছু সহ্য করে গেছেন, মুখ খোলেননি। তার মা যখন তার সাথে বন্দী অবস্থায় দেখা করেন, তখন ভাত খেতে চেয়েছিলেন। মা ভাত নিয়ে গিয়ে ছেলেকে আর পাননি। ছেলেকে ভাত খাওয়াতে না পারার কষ্টে আজাদের মা জীবনে আর ভাত খেতে পারেননি।[2]
তথ্যসূত্র
- Anisul., Haq,। Maa.। [Place of publication not identified]: Somoy Prokashan। আইএসবিএন 9844584221।
- রাহমান, আয়াজ উর। "মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বিখ্যাত গেরিলা যোদ্ধা গ্রেগরীয়ান আজাদের গল্প | All About Dhaka" (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৭-০৬-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৭-১১।