মং রাজবাড়ি
মং রাজবাড়ি বাংলাদেশ এর বাণিজ্য ও পর্যটনের প্রাণকেন্দ্র চট্টগ্রাম বিভাগ এর খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি উপজেলার মহামূনি নামক স্থানে অবস্থিত এক ঐতিহাসিক রাজবাড়ি। যা মূলত একটি চট্টগ্রামের পাহাড়ি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর স্বায়ত্তশাসিত রাজবংশ ছিল।[1]
মং রাজবাড়ি | |
---|---|
বিকল্প নাম | মং সার্কেলের রাজবাড়ি মং রাজার রাজবাড়ি মানিকছড়ির মং রাজবাড়ি |
সাধারণ তথ্য | |
ধরন | বাসস্থান |
অবস্থান | মানিকছড়ি উপজেলা |
শহর | মানিকছড়ি উপজেলা, খাগড়াছড়ি জেলা |
দেশ | বাংলাদেশ |
খোলা হয়েছে | ১৭৯৬ |
স্বত্বাধিকারী | মূল প্রতিষ্ঠাতা - কংজয় ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বীকৃতি পাওয়া - কিওজা |
কারিগরী বিবরণ | |
পদার্থ | ইট, সুরকি ও রড |
ইতিহাস
বাংলাদেশের বাণিজ্য ও পর্যটনের প্রাণকেন্দ্র চট্টগ্রামে পাহাড়ি অঞ্চলগুলোতে কয়েক শতাব্দী ধরে বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীরা বাস করে আসতেছে। ঐ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর একটি হচ্ছে মং। আর এই মং নৃগোষ্ঠীর একটি আলাদা স্বায়ত্তশাসিত রাজশাসন ছিল। যা মং রাজবংশ নামে পরিচিত। প্রায় ১৭৯৬ সালে খাগড়াছি জেলার মানিকছড়ি উপজেলার মহামূনি নামক স্থানে রাজা কংজয় ত্রিপুরা রাজবংশের রাজকন্যাকে বিয়ে করে ত্রিপুরা রাজ্যের পাঁচশত পরিবার নিয়ে এখানে এসে এই রাজবংশ ও রাজবাড়িটি প্রতিষ্ঠা করেন। তবে তিনি এই রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করলেও ভারত ব্রিটিশ সরকারের কাছ থেকে প্রথম রাজা ও রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তার পুত্র কিওজা স্বীকৃতি পান। রাজা কিওজার বয়স যখন মাত্র সাত বছর। তখন তার বাবা কংজয় ১৮২৬ সালে মারা যান। তাই এই রাজশাসন পরিচালনার জন্য একই বছর কিওজাকে সাত বছর বয়সেই সিংহাসনে আহরণ করতে হয়। প্রায় চৌদ্দ বছর যাবৎ তিনি তার চাচার তত্ত্বাবধায়নে উক্ত রাজবংশটি পরিচালনা করেন। তারপর একাধারে এই রাজবংশের বংশধররা উক্ত রাজশাসনটি পরিচালনা করতে থাকেন।
মুক্তিযুদ্ধে অবদান
মং রাজবংশের সপ্তম রাজা মং প্রু সাইন মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী মিলিটারীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েন। মুক্তিবাহিনীদেরকে যুদ্ধ করার জন্য তার রাজ্যে ব্যবহৃত প্রায় ত্রিশ ধরনের অস্ত্র, গাড়ি ও খাবারের রসদ যোগান দেন। এছাড়াও যুদ্ধের সময় ভারতে আশ্রয়গ্রহণকারী বাংলাদেশী শরনার্থীরা যাওয়ার সময় উক্ত রাজবাড়িটিতে বিশ্রাম নিতেন। আর শরনার্থীদের জন্য রাজা খাবার, চিকিৎসা ও থাকার ব্যবস্থা করেন। পরবর্তীতে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী রাজবাড়িতে আক্রমন করলে রাজা তার পুরো পরিবার নিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। আর সেখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিয়ে ট্যাংক বহরের সাথে তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। যার জন্য তিনি মিত্রবাহিনীর কাছ থেকে অনারারি কর্নেল র্যাঙ্ক পদবীতে ভূষিত হন। যুদ্ধ শেষে তিনি তার পরিবার নিয়ে উক্ত রাজবাড়িতে ফিরে আসেন। ১৯৮৪ সালে রাজা মং প্রু সাইন মুত্যুবরণ করেন।
শাসকগণের তালিকা
- কংজয়,
- নরপদি,
- কিওজা প্রু,
- নে প্রু সেইন,
- রাণী নানুমা,
- রাজা মং প্রু সেন,
- নিহার দেবী ও
- প্রাইহলা প্রু চৌধুরী।