ভূকম্পন তরঙ্গ

ভূকম্পন তরঙ্গ (ইংরেজি: Seismic wave) বা ভূকম্পীয় তরঙ্গ হচ্ছে ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুদগীরণ, বৃহৎ ভূমিধ্বস, মানবসৃষ্ট বিস্ফোরণ বা এ জাতীয় কোন শক্তিশালী উৎস থেকে সৃষ্ট শক্তির তরঙ্গীয় রূপ যা ভূ-পৃষ্ঠতল বরাবর কিংবা পৃথিবীর ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ভূকম্পনবিজ্ঞানীরা এই তরঙ্গগুলি বিশ্লেষণ করেন। ভূকম্পনমাপক নামক যন্ত্রের সাহায্যে ভূমিকম্প তরঙ্গগুলির বিস্তার এবং কম্পাঙ্কের পরিমাপ গ্রহণ করা হয়। এগুলি পৃথিবী এবং এর পৃষ্ঠতলের নীচে অবস্থিত স্তরগুলির গঠন-কাঠামো সম্পর্কে তথ্যের যোগান দেয়। এছাড়া ভূকম্পন জরিপের সময় কৃত্রিমভাবে ভূকম্প তরঙ্গ উৎপাদন করে পরিমাপ গ্রহণ করা হয় এবং এই উপাত্তগুলি খনিজ তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান ও এ সংক্রান্ত প্রকৌশলবিদ্যায় কাজে লাগে।

ভূকম্পন তরঙ্গের প্রকারভেদ

ভূমিকম্পের ফলে প্রধানত চার ধরনের স্থিতিস্থাপক তরঙ্গের সৃষ্টি হয়। এদের দুইটিকে বলা হয় শারীরী তরঙ্গ, যেগুলি পৃথিবীর ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এবং অন্য দুইটিকে বলা হয় পৃষ্ঠতল তরঙ্গ, যা ভূপৃষ্ঠতল ধরে প্রবাহিত হয়।

শারীরী তরঙ্গ

শারীরী তরঙ্গগুলি পৃথিবীর ভেতর বা অন্তর্ভাগ দিয়ে প্রবাহিত হয়। ভূ-অভ্যন্তরের পদার্থের ঘনত্ব ও ঋজুতা এগুলির গতিপথ নির্ধারণ করে। এগুলির আবার তাপমাত্রা, রাসায়নিক গঠন ও পদার্থের অবস্থার উপর নির্ভর করে। শারীরী তরঙ্গ দুই ধরনের হয়। প্রাথমিক তরঙ্গ ও গৌণ তরঙ্গ।

প্রাথমিক তরঙ্গ

প্রাথমিক তরঙ্গের (ইংরেজি ভাষায় সংক্ষেপে পি-তরঙ্গ নামেও পরিচিত) গতিবেগ বেশি, ফলে এটি গৌণ তরঙ্গ থেকে দ্রুত ভূমিকম্প পরিমাপক কেন্দ্রে গিয়ে পৌঁছায়। অর্থাৎ এগুলিই প্রথমে ভূকম্পমাপক যন্ত্রে আবির্ভূত হয়, যার কারণে এদেরকে প্রাথমিক তরঙ্গ বলা হয়। প্রাথমিক তরঙ্গগুলি সংকোচক বা অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ নামেও পরিচিত। এগুলি সঞ্চারক মাধ্যমটির (কঠিন, তরল বা বায়বীয়) মধ্যে তরঙ্গের দিক বরাবর সামনে-পেছনে দোলনের সৃষ্টি করে, ফলে মাধ্যমটির কোনও একটি বিন্দুর মধ্য দিয়ে তরঙ্গটি প্রবাহিত হবার সময় এটি একবার প্রসারিত হয়, একবার সংকুচিত হয়, অনেকটা যেমন শব্দতরঙ্গ বাতাসের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়। পৃথিবীতে প্রাথমিক তরঙ্গগুলি পৃষ্ঠতলের কাছাকাছি শিলার ভেতর দিয়ে সেকেন্ডে ৬ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হয়। অন্যদিকে পৃথিবীর মজ্জা বা মর্মস্থলের কাছে, ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩০০০ কিলোমিটার নিচে এই গতিবেগ সেকেন্ডে ১০.৪ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। মজ্জার ভেতরে প্রবেশের পর তরঙ্গের বেগ কমে ৮ কিমি/সেকেন্ড হয়ে যায়। পৃথিবীর কেন্দ্রের কাছে এই বেগ আবার বৃদ্ধি পেয়ে ১১ কিমি/সেকেন্ডে পরিণত হয়। এই গতিবেগ বৃদ্ধির কারণ হল তরল পদার্থের মাধ্যাকর্ষণজনিত চাপ বৃদ্ধি এবং শিলাস্তরের গঠনের পরিবর্তন। সাধারণত গতিবেগ বৃদ্ধির কারণে প্রাথমিক তরঙ্গগুলি বক্রপথে ভ্রমণ করে এবং বক্রপথগুলি ঊর্ধ্বমুখী ও অবতল আকৃতির হয়।

গৌণ তরঙ্গ

গৌণ তরঙ্গ (ইংরেজিতে সংক্ষেপে এস তরঙ্গ নামেও ডাকা হয়) কৃন্তন তরঙ্গ বা তির্যক তরঙ্গ নামেও পরিচিত। এই তরঙ্গগুলির কারণে কঠিন সঞ্চারণ মাধ্যমটি ভূমিকম্পের সঞ্চারণের দিকের সাথে লম্বভাবে উপরে-নীচে ওঠানামা করে। যখন তরঙ্গটি মাধ্যমের কোনও বিন্দুর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়, তখন এটির একবার উপরে, একবার নীচে কৃন্তন ঘটে। পৃথিবীপৃষ্ঠে এই কৃন্তন তরঙ্গের গতিবেগ সেকেন্ডে ৩.৪ কিলোমিটার এবং কোরের সীমানার কাছে এর গতিবেগ সেকেন্ডে ৭.২ কিলোমিটার। কোর তরল বলে কৃন্তন তরঙ্গগুলি সঞ্চারণ করতে পারে না। অন্যভাবে দেখলে, বহিঃস্থ কোর যে তরল, এই সিদ্ধান্তের পক্ষে একটি শক্তিশালী যুক্তি হল কৃন্তন তরঙ্গের অনুপস্থিতি। মূল তরঙ্গের মত গৌণ তরঙ্গগুলিও ঊর্ধ্বগামী অবতল বক্রাকার পথে ভ্রমণ করে।

ভূ-পৃষ্ঠতলীয় তরঙ্গ

লাভ তরঙ্গ

ভূপৃষ্ঠ বরাবর ভ্রমণকারী তরঙ্গগুলির মধ্যে "লাভ তরঙ্গ" নামে পরিচিত তরঙ্গগুলি বেশি দ্রুত ভ্রমণ করে। ব্রিটিশ ভূমিকম্পবিদ এ ই এইচ লাভ সর্বপ্রথম ১৯১১ সালে এগুলির অস্তিত্ব নিয়ে ভবিষ্যৎবাণী করেন। যখন ভূপৃষ্ঠের নিকটে অবস্থিত কঠিন মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন স্থিতিস্থাপক বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকে, তখন লাভ তরঙ্গগুলি প্রসারিত হয়। এই তরঙ্গুলির কারণে মাধ্যমটি সম্পূর্ণরূপে তরঙ্গের প্রসারণের দিকের সাথে উল্লম্বভাবে সরতে থাকে। লাভ তরঙ্গের অন্তর্নিহিত শক্তি উৎস থেকে তিন দিকের বদলে দুই দিকে ছড়িয়ে পড়ে (অন্যান্য পৃষ্ঠ তরঙ্গের মত), ফলে এই তরঙ্গগুলি ভূমিকম্প মাপক কেন্দ্রগুলিতে পরিষ্কারভাবে দৃশ্যমান লেখচিত্র উৎপাদন করে, এমনকি ভূমিকম্পের উৎস যদি বহু দূরেও অবস্থিত হয় ।

রেইলি তরঙ্গ

আরেক ধরনের গুরত্বপূর্ণ পৃষ্ঠ তরঙ্গের নাম "রেইলি তরঙ্গ"। ব্রিটিশ পদার্থবিজ্ঞানী লর্ড রেইলি সর্বপ্রথম ১৮৮৫ সালে গাণিতিকভাবে এগুলি অস্তিত্ব প্রদর্শন করেন। রেইলি তরঙ্গগুলি পৃথিবীপৃষ্ঠের মত স্থিতিস্থাপক কঠিন মাধ্যমের উন্মুক্ত পৃষ্ঠতল বরাবর ভ্রমণ করে। এদের গতি অনুদৈর্ঘ্য সংকোচন এবং প্রসারণের সমবায়ে গঠিত এবং এর ফলে পৃষ্ঠতলের বিন্দুগুলির উপবৃত্তাকার গতি পরিলক্ষিত হয়। সমস্ত তরঙ্গের মধ্যে রেইলি তরঙ্গগুলি সবচেয়ে বেশি সময় ধরে ছড়িয়ে পড়ে, ফলে ভূমিকম্পমাপক যন্ত্রে এই তরঙ্গগুলির সুদীর্ঘ স্থায়িত্বকাল পরিলক্ষিত হয়।

ভূকম্পন লিপিকরণ

ভূমিকম্প তরঙ্গসমূহের বিভিন্ন গতিপথ

The path that a wave takes between the focus and the observation point is often drawn as a ray diagram. An example of this is shown in a figure above. When reflections are taken into account there are an infinite number of paths that a wave can take. Each path is denoted by a set of letters that describe the trajectory and phase through the Earth. In general an upper case denotes a transmitted wave and a lower case denotes a reflected wave. The two exceptions to this seem to be "g" and "n".[1]

cthe wave reflects off the outer core
da wave that has been reflected off a discontinuity at depth d
ga wave that only travels through the crust
ia wave that reflects off the inner core
Ia P-wave in the inner core
ha reflection off a discontinuity in the inner core
Jan S wave in the inner core
Ka P-wave in the outer core
La Love wave sometimes called LT-Wave (Both caps, while an Lt is different)
na wave that travels along the boundary between the crust and mantle
Pa P wave in the mantle
pa P wave ascending to the surface from the focus
Ra Rayleigh wave
San S wave in the mantle
san S wave ascending to the surface from the focus
wthe wave reflects off the bottom of the ocean
No letter is used when the wave reflects off of the surfaces

For example:

  • ScP is a wave that begins traveling towards the center of the Earth as an S wave. Upon reaching the outer core the wave reflects as a P wave.
  • sPKIKP is a wave path that begins traveling towards the surface as an S-wave. At the surface it reflects as a P-wave. The P-wave then travels through the outer core, the inner core, the outer core, and the mantle.
  1. The notation is taken from Bullen, K.E.; Bolt, Bruce A. (১৯৮৫)। An introduction to the theory of seismology (4th সংস্করণ)। Cambridge: Cambridge University Press। আইএসবিএন 978-0521283892। and Lee, William H.K.; Jennings, Paul; Kisslinger, Carl; ও অন্যান্য, সম্পাদকগণ (২০০২)। International handbook of earthquake and engineering seismology.। Amsterdam: Academic Press। আইএসবিএন 9780080489223।
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.