বোধিসত্ত্ব

বোধিসত্ত্ব শব্দটির আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে, বুদ্ধত্ব (শাশ্বত জ্ঞান) প্রাপ্তিই যাঁর ভবিতব্য অর্থাৎ যিনি বোধিলাভ করার জন্যই জগতে আবির্ভূত হয়েছেন। বৌদ্ধ ধর্মের বিভিন্ন শাখায় বোধিসত্ত্বের বহুবিধ ব্যাখ্যা থাকলেও মহাযান বৌদ্ধধর্ম মতে বোধিসত্ত্ব হলেন তিনিই যিনি জগতের কল্যাণার্থ স্বয়ং নির্বাণলাভ থেকে বিরত থাকেন এবং বিশ্বের সকল জীবের মুক্তিলাভের উপায় করেন।

আকাশগর্ভ বোধিসত্ত্বের একটি মূর্তি

থেরবাদ বৌদ্ধধর্ম

ত্রিপিটকে পালি ভাষায় বোধিসত্ত্ব শব্দটির প্রথম ব্যবহার করেছিলেন শাক্যমুনি বুদ্ধবোধিসত্ত্ব শব্দটি দ্বারা তিনি তার পূর্বজন্মের অবস্থা থেকে বোধিলাভ করার পূর্ববর্তী সময় পর্যন্ত তার জীবনকে বুঝিয়েছিলেন। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে তার পূর্বজন্মের কাহিনি ব্যক্ত করতে গিয়ে গৌতম বুদ্ধ বোধিসত্ত্ব শব্দটির প্রয়োগ করেছেন। অর্থাৎ এখান থেকে অনুধাবন করা যায় যে বোধিসত্ত্ব হলেন তিনিই যাঁর জীবনের একমাত্র ব্রতই হল বোধিলাভ। বুদ্ধের বোধিসত্ত্বাবস্থার এই সকল কাহিনি বর্ণিত হয়েছে জাতকে। অপরদিকে ত্রিপিটকে মৈত্রেয় বুদ্ধ (পালি: মেত্তেয়) কিন্তু কোন বোধিসত্ত্ব হিসেবে বর্ণিত হননি। মৈত্রেয় হলেন একজন বুদ্ধত্বপ্রাপ্ত সম্পূর্ণ বুদ্ধ। অর্থাৎ থেরবাদ মতানুসারে তিনিই বোধিসত্ত্ব যিনি মোক্ষলাভের পথে অগ্রসর হয়েছেন। এতদ্ব্যতীত থেরবাদ বৌদ্ধধর্মে আরও দ্বিবিধ বোধিসত্ত্বের উল্লেখ আছে যথা, প্রত্যেকবোধিসত্ত্ব অর্থাৎ যিনি প্রত্যেকবুদ্ধত্ব লাভ করবেন, এবং সর্বকবোধিসত্ত্ব অর্থাৎ যিনি বুদ্ধের একজন অনুগামী হিসেবে বুদ্ধত্বলাভ করবেন।

মহাযান বৌদ্ধধর্ম

মহাযান বৌদ্ধধর্মানুসারে একজন বোধিসত্ত্ব হলেন তিনিই যিনি বুদ্ধত্বলাভের প্রায় প্রতিটি স্তরই উত্তীর্ণ হয়েছেন। তিনি স্বয়ং পরম জ্ঞান লাভ করেছেন এবং সেই শাশ্বত বোধের আলোকে প্রতিটি জীবকে আলোকিত করছেন ও তাদের রক্ষার্থ জীবন উৎসর্গ করেছেন।

চিত্রপ্রদর্শনী

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.