বুস্ট্রফেডন

বুস্ট্রফেডন (ইংরেজি: Boustrophedon) এমন এক ধরনের লিখন পদ্ধতি যাতে একটি লাইন ডান থেকে বামে পড়তে হলে তার ঠিক পরের লাইনটি বাম থেকে ডানে পড়তে হয়, এবং তার পরের লাইনটি আবারও ডান থেকে বামে পড়তে হয়, এবং এভাবে চলতে থাকে। অর্থাৎ বুস্ট্রফেডনে লাইনগুলি বারবার দিক পরিবর্তন করে।

প্রাচীন গ্রিক বুস্ট্রফেডন শিলালিপি, ক্রেতে দ্বীপ, খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতক

বুস্ট্রফেডন নামটি গ্রিক শব্দ βουστροφηδόν বুস্ত্রোফ়্যাদোন্‌ থেকে এসেছে যার অর্থ ষাঁড় ঘোরানো। ষাঁড় দিয়ে জমি কর্ষণ করানোর জমির এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ষাঁড়কে টেনে নিতে হয় এবং সেখান থেকে ষাঁড়টিকে ঘুরিয়ে আবার আদিপ্রান্তের দিকে নিয়ে আসা হয়। এই ঘটনার সাথে মিল আছে বলেই লিখনপদ্ধতিটির এরকম নামকরণ করা হয়েছে।

ইংরেজি বুস্ট্রফেডনের উদাহরণ; এখানে লাইন, শব্দ ও বর্ণ সবগুলিই এক লাইন পর পর উলটে গেছে

হেলেনীয় যুগের পূর্বে প্রাগৈতিহাসিক কালে খোদাইকৃত প্রাচীন গ্রিক ভাষার শিলালিপিগুলিতে বুস্ট্রফেডন পদ্ধতির প্রয়োগ দেখতে পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যান্য প্রাচীন রচনাবলিতেও বুস্ট্রফেডনের নমুনা পাওয়া গেছে।

কেউ কেউ ডট মেট্রিক্স প্রিন্টারের মুদ্রণকারী মস্তকের বা প্রিন্টার হেডের গতিকে বুস্ট্রফেডন ডাকেন। তবে এক্ষেত্রে কেবল হেডের দিক পরিবর্তনের ব্যাপারটিই মুখ্য, আসল বুস্ট্রফেডনের মত লাইনগুগুলি একবার সোজা, আরেকবার উল্টোভাবে ছাপা হয় না।

বুস্ট্রফেডন তিন রকম হতে পারে। এক ধরনের বুস্ট্রাফেডনে লাইনের গতিমুখ অর্থাৎ লাইনে শব্দের ক্রম উল্টে যায়, কিন্তু শব্দের মধ্যে বর্ণের ক্রম কিংবা বর্ণের নিজস্ব রূপ উল্টায় না। দ্বিতীয় ধরনের বুস্ট্রফেডনে লাইনের গতিমুখ পালটে যায় এবং শব্দের মধ্যে বর্ণের ক্রমও উলটে যায়, কিন্তু একেকটি বর্ণের রূপ উল্টায় না। তৃতীয় ধরনের বুস্ট্রফেডনে লাইনের গতিমুখ, শব্দ এবং বর্ণ তিনটিই উলটে যায় (ছবিতে দেখুন)।

আরও দেখুন

  • বুস্ট্রফেডন রূপান্তর
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.