বিবাহযোগ্য বয়স

বিবাহযোগ্য বয়স বা বিবাহের বয়স হল আইনগতভাবে বিয়ে করার অনুমতি প্রাপ্তির বয়সসীমা, যা একজন ব্যক্তি অধিকার অথবা অভিভাবকীয় বা অন্য কোন প্রকারের সম্মতি হিসেবে প্রয়োগ করতে পারে।

ইতিহাস ও সামাজিক প্রক্রিয়া

আদিকাল থেকে শুরু করে প্রাচীনকালে বয়ঃসন্ধিক বৈশিষ্টসমূহকে বিয়ের বয়সের চিহ্ন হিসেবে গণ্য করা হত। মেয়েদের জন্য এই বৈশিষ্ট ছিল ঋতুস্রাব বা মাসিকের সূচনা এবং ছেলেদের জন্য বয়ঃসন্ধিক চুল বা যৌনকেশ। প্রাচীন গ্রীসে ১২ বছর বয়সে মেয়েদের বিয়ে দেয়া হত। খৃষ্ট অব্দ চতূর্থ শতাব্দী পর্যন্ত এ প্রক্রিয়ার প্রবণতা দেখা যায়। পরবর্তীতে যৌথ পরিবার ভেঙে একক পরিবারের প্রবণতা তৈরি হওয়ার পর থেকে সমাজে বিয়ে করার বয়স বৃদ্ধি পেতে থাকে। ক্যাথলিক চার্চ ও মরমোন গীর্জার প্রভাবে এ প্রক্রিয়া আরও ত্বরাণ্বিত হয়। আনুমানিক ১৮ শতক থেকে বিয়ের বয়সের রাষ্ট্রীয় সীমা নির্ধারণের উৎপত্তি ঘটে। বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশের সংবিধানে বিয়ে করার জন্য নুন্যতম সীমা বা বৈশিষ্ট(বয়ঃসন্ধি) বেধে দেওয়া হয়েছে। ব্যতিক্রম হিসেবে সৌদি আরব ও ইয়ামানে যে কোন বয়সে বিবাহের অনুমতি এখনো উন্মুক্ত আছে।

দেশ অনুযায়ী

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিয়ের বয়সের আইনি অনুমতি ছেলেদের জন্য সর্বনিম্ন ১৫ থেকে সর্বোচ্চ ২২ এবং মেয়েদের জন্য সর্বনিম্ন ১৪ থেকে সর্বোচ্চ ১৯। তবে সৌদি আরব ও ইয়েমেনে বিয়ের জন্য কোন বয়সসীমা নির্ধারিত নেই। ছেলেদের বয়স বেশি থাকার কারণ হল মানব প্রজাতিতে মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের পরিণত হতে দুই থেকে তিন বছর বেশি সময় লাগে। এদের মধ্যে অনেক দেশে ডাক্তারি পরীক্ষায় প্রমাণিত বয়ঃস্বন্ধিকেই বিয়ের বয়স হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। অধিকাংশ দেশেই বাবা-মায়ের অনুমতির প্রয়োজন হয়। তবে ইন্দোনেশিয়া জর্দানসহ বেশ কিছু দেশে বাবা-মায়ের অনুমতি নিয়ে নির্ধারিত বয়সের নিচেও বিয়ে করা যায়। বাংলাদেশে বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স মেয়েদের জন্য ১৮ বছর এবং ছেলেদের জন্য ২১ বছর। ২০১৪ সালের ১৫ই সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সরকারের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বাংলাদেশে বিয়ের বয়স ছেলেদের জন্য ১৮ এবং মেয়েদের জন্য ১৬ কে অনুমোদন দেয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হলেও পরবর্তীতে তা বাতিল হয়।[1] ২০১৬ সালের ২৫শে নভেম্বর বাংলাদেশ সরকার মেয়েদের জন্য বিশেষ ক্ষেত্রে (পিতামাতার সম্মতি এবং আদালতের অনুমতিক্রমে) ১৮ বছরের নিচে বিয়ের অনুমতিসহ বিয়ের বয়স পুনরায় ১৮ বছর নির্ধারণ করে।

দেশ অনুসারে

এশিয়া ছেলেদের ক্ষেত্রে ২১ ও মেয়েদের ক্ষেত্রে ১৮


ইউরোপ

আমেরিকা

ওরেনিয়া

যুক্তরাজ্য

ধর্মানুসারে

ইসলাম

কুরআনে, "বিবাহের বয়স" বয়ঃসন্ধির সাথে মিলিত হয়। ইসলামিক আইন (শরিয়া) এর বিবাহযোগ্য বয়স নেই, কারণ কোনও ন্যূনতম বয়স নেই যেখানে বয়ঃসন্ধি ঘটতে পারে। সুতরাং বয়স প্রতিটি পৃথক পৃথক এবং বিভিন্ন সংস্কৃতি এবং বিভিন্ন সময়ের মধ্যে বৈকল্পিক হতে পারে।[2][3][4][5]

বিভিন্ন মাজহাব মতে সম্ভাব্য বয়স :


পুরুষ সম্মতিনারী সম্মতিনোট
Hanafi১২
Jafari১৫Shia
Shafi'i১৫
Hanbali১৫
Maliki১৭

হিন্দু বা সনাতন

হিন্দু ধর্মসূত্রে বলা আছে যে বয়ঃসন্ধি হওয়ার পরে মেয়েকে বিবাহ করানো উচিত। [6]

খ্রিস্টান

বৌদ্ধ

তথ্যসূত্র

  1. "বাংলাদেশে বিয়ের বয়স না কমানোর সিদ্ধান্ত নিল সরকার - BBC বাংলা"
  2. Watt 1960
  3. "Child marriage: a silent health and human rights issue"।
  4. Barlas 2002, পৃ. 125–126
  5. Singh, Upinder (২০০৮)। A History of Ancient and Early Medieval India: From the Stone Age to the 12th Century। Pearson Education India। পৃষ্ঠা 420।

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.