বাংলাদেশী মার্কিনী

বাংলাদেশে জন্মগ্রহণকারী মার্কিন নাগরিকদেরকে বাংলাদেশী মার্কিনী (ইংরেজি: Bangladeshi American) বলা হয়। ১৯৭০ সালের পূর্ব থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ থেকে আগত অভিবাসীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। দেশটির নিউ ইয়র্ক শহর, প্যাটারসন, নিউ জার্সি, লস অ্যাঞ্জেলেস, ওয়াশিংটন ডিসি, বস্টন, আটলান্টা, সান ফ্রান্সিস্কো, ডেট্রয়েট, শিকাগো, ফ্লোরিডা রাজ্য, ডালাস, হিউস্টন, উত্তর ক্যারোলিনা, এবং হ্যামট্র্যামক, মিশিগান-এ বাংলাদেশী সম্প্রদায়দের দেখা যায়।

বাংলাদেশী মার্কিনী
মোট জনসংখ্যা
৫,০০,০০০ [1][2]
'২০১৪ সালের হিসেবে আমেরিকার মোট জনসংখ্যার 0.046%
(includes Multiracial Bangladeshis)
উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যার অঞ্চলসমূহ
ভাষা
ধর্ম

বাংলাদেশী মার্কিনীদের সংখ্যা ভবিষ্যত বছরগুলিতে আরো দ্রুত বাড়বে বলেই অনুমান করা হচ্ছে, কারণ দিন দিন বাংলাদেশীদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের সংখ্যা বাড়ছে।

ইতিহাস

১৮৮০ সাল থেকে বাঙালি, অভিবাসী হিসেবে আমেরিকাতে যাওয়া শুরু করে।[6]

১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়, সদ্য স্বাধীন হওয়া বিপর্যস্ত অর্থনীতির বাংলাদেশ থেকে ১৯৭৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পোর্ট শহরগুলোতে ১৫৪ জন অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। বেশিরভাগই কর্মী হিসেবে কলকাতা শহর থেকে বিভিন্ন জাহাজে করে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান।

১৯৭০ থেকে ৮০র দশকে বাংলাদেশীদের যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তরের সংখ্যা ধীরে হলেও পর্যায়ক্রমে বেড়েই চলছিল। বাৎসরিকভাবে প্রায় দশহাজার বাংলাদেশি যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তরিত হন।[3] বেশিরভাগ বাংলাদেশি অভিবাসী, শহরাঞ্চল যেমন: নিউ ইয়র্ক, প্যাটার্সন, ওয়াশিংটন ডি.সি. লস এঞ্জেলস, বোস্টন,শিকাগো এবং ডেট্রয়েটে স্থায়ী হয়েছিল। ১৯৮০ সালের পুর্বে আনুমানিক প্রায় ১৫,০০০ বাংলাদেশি নিউ ইয়র্কে বাস করত। ১৯৭০ এর পরে কিছু বাংলাদেশী আমেরিকান অন্যান্য মুসলিম কমিউনিটিতে বসবাস এবং সাশ্রয়ী হবার জন্য নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রয়েটে যায় [7] কিন্তু বেশিরভাগই ডেট্রয়েড থেকে নিউ ইয়র্ক এবং প্যাটার্সনে ফিরে আসেন।১৯৭১ সালে 'লস এঞ্জেলস বাংলাদেশ এসোসিয়েশন', ৫০০ জন সদস্য নিয়ে ১৯৯৭ সালে 'টেক্সাস বাংলাদেশ এসোসিয়েশন' গঠিত হয়। ডাল্লাসে ১৯৯৭ সালে ৫০০০ জন বাংলাদেশী ছিল, যা en:Baishakhi Mela আয়োজন করার জন্য পর্যাপ্ত ছিল এবং তারা সফলভাবে অনুষ্ঠানটি করেন। বর্তমানে আমেরিকার প্রধান প্রধান শহরগুলো যেমন: নিউ ইয়র্ক, নিউ জার্সির প্যাটার্সন, ওয়াশিংটন ডি.সি., লস এঞ্জেলসে বাংলাদেশী জনগণের উদ্দ্যোগে সফলভাবে বৈশাখি মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে।[8] বেশিরভাগ বাংলাদেশি সেখানে প্রথম দিকে ট্যাক্সি ড্রাইভার ছিল এবং বাকিরা বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় নিয়োজিত ছিলেন।[9]

পরিসংখ্যান এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতি

নিউ ইয়র্ক শহর

বেশিরভাগ বৈধ বাঙালি অভিবাসী নিউ ইয়র্কেই থাকেন।[3] নিউ ইয়র্কের পৌরসভা কুইন্স এর প্রতিবেশি এলাকা জ্যাকসন হাইটসে বাংলাদেশী কমিউনিটির সংখ্য প্রচুর পরিমাণে ইদানীং কালে বাড়ছে। জ্যাকসন হাইটসে ৭৪ নং সড়কে বেশিরভাগ বাংলাদেশীর মুদি দোকান এবং কাপড়ের দোকান আছে। সাম্প্রতিক সময়ে জ্যাকসন হাইটসের একটা অংশ বিভিন্ন ধরনের আন্দোলনের মুক্ত চত্বর হয়ে দাঁড়িয়েছে (শাহবাগ যেমন বর্তমানে বিভিন্ন আন্দোলনের অন্যতম ক্ষেত্র। জ্যাকসন হাইটসের পাশের এলাকা যেমন:উডসাইট, এবং এলমহার্স্ট বাংলাদেশি মার্কিনীদের বসবাসের জন্য বর্তমানে আকর্ষণীয় জায়গা।

১৯৭০ থেকে হাজারো বাংলাদেশি বৈধভাবে ভিসা বা লটারীর মাধ্যমে আমেরিকায় স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ পেয়েছে। বেশিরভাগই মাইগ্রেশন করে জ্যামাইকাতে চলে যায়। জ্যামাইকা এবং জ্যাকসন হাইটসে স্থানান্তরিত হয়ে যাওয়ার হার বাংলাদেশীদের বেশি থাকে। ১৬৯ নং সড়ক এবং হিলসাইড এভিনিউর কেন্দ্রস্থল বিভিন্ন মানের রেস্টুরেন্ট এবং মুদি দোকানের জন্য জনপ্রিয় স্থান। এখানের সাগর রেস্টুরেন্ট, দেশি স্বাদ,ঘরোয়া, কবির'স বেকারি পুরো নিউ ইয়র্কের বাঙালি কমিউনিটিতে ব্যাপক জনপ্রিয়। বিরাট সংখ্যক বাংলাদেশি মার্কিনী বর্তমানে জ্যামাইকা, জ্যাকসন হাইটস, হলিস এবং ব্রিয়ারউডে বাস করে। নিউ ইয়র্কের কুইন্স এবং ব্রুকলিনে বর্তমানে বাংলাদেশি অভিবাসী ব্যাপকহারে বাড়ছে।[10] ধনবান বাংলাদেশিদের অনেকেই ভালোভাবে বসবাসের জন্য নিউ ইয়র্কের en:Long Island এ চলে যান। সেখানে অনেক বাংলাদেশিই ঔষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানির মালিক। তারা তাদের কোম্পানিতে বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত নাগরিকদেরই নিয়োগ দেন। নিউ ইয়র্ক পরিসংখ্যান:

  • ১৯৭০ এ আদমশুমারি:
    • মোট জনসংখ্যা: ৪৯৫৫ (আমেরিকাতে ১১,৮৩৮)
    • সবচেয়ে বেশি বসবাস: কুইন্সে—২৫৬৭ জন লোক, এবং ব্রুকলিনে—১৩১৩।
    • ম্যানহাটনে বাংলাদেশিরা ৬ নং স্ট্রিট এ একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠির মত বাস করে। এখানের বেশিরভাগ বাংলাদেশি এস্টোরিয়াতে বাস করে।[11]
  • ২০০০ সালের পরিসংখ্যান:
    • মোট জনসংখ্যা: ২৮,২৬৯
    • বেশিরভাগ বসবাসকারী: কুইন্সে—18,310 জন লোক।(65%), ব্রুকলিনে—6,243 (22%), ব্রনক্সে—২৪৪২ (৯%), ম্যানহাটনে—1,204 (4%), স্ট্যাটেন আইল্যাণ্ডে—70 (0.2%)
    • 1970 থেকে 2000 এর মধ্যে জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার: ৪৭১%
    • বিদেশে জন্মগ্রহণকারী জনসংখ্যা: 23,157 (85%)
    • ইংরেজিতে কম দক্ষ: ১৪,৮৪০ (60%)
    • মধ্যবিত্ত পরিবারের আয়: $31,537
    • দারিদ্রতার মাঝে বসবাসকারী: ৮,৩৩৪
    • দারিদ্রসীমার শতকরা: 31%
  • ২০১০ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী:
    • মোট জনসংখ্যা: 50,677
    • সবচেয়ে বেশি বসবাসকারী জনসংখ্যা: কুইন্সে (60%), ব্রুকলিনে (19%), ব্রনক্সে (17%), ম্যানহাটনে(৪%), স্ট্যালেন আইল্যাণ্ডে (0.4%)
    • বিদেশে জন্মগ্রহণকারী জনসংখ্যা: 74%
    • ইংরেজিতে কম দক্ষতা : ৫৩%
    • মধ্যবিত্ত পরিবারের আয়: $36,741
    • দারিদ্রসীমার হার: 32% [12]

The Bronx এর পার্কচেস্টার বর্তমানে ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়া বাংলাদেশীদের জন্যও নতুন আবাসস্থলে পরিণত হয়েছে।[12][13] অন্যান্য ছোটো বাংলাদেশি কমিউনিটি ফিলাফেলফিয়া, ওয়াশিংটন ডি.সি., ডেট্রয়েট এবং লস এঞ্জেলসে বাস করে।

প্যাটারসন, নিউ জার্সি

নিউ জার্সিরপ্যাটার্সন, নিউ ইয়র্কের পরে বাংলাদেশ মার্কিনীদের দ্বতীয় পছন্দের আবাসস্ল।[14]

নিউ ইয়র্কের মেট্রোপলিটন এলাকার নিউ জার্সির প্যাটার্সন সুনির্দিষ্টভাবে বাংলাদেশী মার্কিনীদের জন্য অন্যতম বৃহৎ আবাসস্থল। অনুমান করা হয় এখানের বাংলাদেশী মার্কিনীর সংখ্যা ১৫,০০০।[15][16] "Little Bangladesh" নামক ইউনিয়ন এভিনিউতে অনেক বাংলাদেশী মুদি দোকান এবং কাপড়ের দোকান আছে। প্যাটার্সনে সোনালি ব্যাংকের অর্থ হস্তান্তরের একটি সম্পুরক শাখা আছে। সোনালি ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের পর রাষ্ট্রের মালিকানাধীন অন্যতম বৃহৎ ব্যাংক। Masjid Al-Ferdous নামক মসজিদটিও ইউনিয়ন এভিনিউতে অবস্থিত। এ মসজিদটি প্যাটার্সনে বাংলাদেশীদের যে দ্রুতগতিতে বৃদ্ধির হার, তার একটি পরিমাপ করে। মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান ২০১২ সালে সিটি কাউন্সিল এর নির্বাচনে ২য় ওয়ার্ড থেকে বিজয়ী।[17] ২০১৪ সালের ১১ই অক্টোবর, ওয়েস্ট সাইড পার্কে, একটি চমৎকার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শহিদ মিনারের রেপ্লকা স্থাপিত হয়। শহিদ মিনার- ১৯৫২ সালে পাকিস্তানে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্র ভাষা করার দাবীতে আন্দোলনে নিহত হওয়া ছাত্রদের প্রতি শ্রদ্ধার প্রতীক।[18]

Metro DetroitHamtramck, Michigan

বাংলাদেশী অভিবাসীদের অধিকাংশই ১০ থেকে ৩৯ বছরের মধ্যে, যার শতকরা ৬৫%ই পুরুষ। গড়পড়তায় পুরুষদের ৫০ শতাংশ, নারীর ৬০ শতাংশের যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে বিয়ে করার প্রবণতা দেখা যায়। পরিসংখ্যান হিসাব করলে দেখা যায় বাংলাদেশী মার্কিনীরা ডেমোক্রেটিক দলকে ভোট দিতে বেশি আগ্রহী।[19]

নিচু মাথা পিছু আয়

২০১৪ সালের গণশুমারি অনুযায়ী বাংলাদেশী মার্কিনীদের মাথাপিছু আয় ১৮,২০৭ ডলার। অন্যদিকে আমেরিকানদের মাথাপছু আয় ২৫,৮২৫ ডলার। অর্থাৎ বাংলাদেশী মার্কিনীদের মাথাপিছু আয়; আমেরিকানদের মাথাপিছু আয়ের তুলনায় অনেক কম।[20]

শিক্ষা

নিউ ইয়র্কের মেট্রোপলিটন শহর, যেখানে বাংলাদেশি মার্কিনীদের এক বিরাট অং বাস করে।[14][21][22]

আদমশুমারী ব্যুরো দ্বারা সংগঠিত ২০০০ সালের গণশুমারী অনুযায়ী ৫৭,৪১২ জন মানুষকে শনাক্ত করা হয়, যারা নিজেদের বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত বলে পরিচয় দিয়েছেন।[23] ২৫ বছরের উর্ধ্বে জনসংখ্যার, মোট ৪০% লোক জানিয়েছে তাদের অন্ততপক্ষে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি আছে। যা তুলনামুলকভাবে আমেরিকার জনগণের ২৫% এর চেয়ে কম।

সংস্কৃতি

বাংলাদেশী মার্কিনীরা তাদের পুর্বপুরুষদের জাতিগত সংস্কৃতি ধারণ করে, যদিও তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমেরিকান সংস্কৃতি পালন করে, কিন্তু তারা তাদের পুর্বপুরুষদের সংস্কৃতি বিস্মৃত হয় নি এবং উভয় সংস্কৃতি তারা পাশাপাশি পালন করার চেষ্টা করে। বাংলাদেশি মার্কিনীরা তাদের নিজস্ব রন্ধনপ্রণালি যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে এসেছে, যা বড় বড় শহরগুলোর বাঙালি রেস্টুরেন্টে নিত্য পাক হয়। যুক্তরাষ্ট্রে এ রান্নাগুলো বেশ জনপ্রিয়। এখানে অনেক বাংলাদেশি মার্কেট এবং স্টেশনারী দোকান আছে। নিউ ইয়র্ক শহর, প্যাটার্সন, নিউ জার্সি, লস এঞ্জেলসের কিছু কিছু দোকান বেশ বড়।

ভাষা

বাংলাদেশি মার্কিনীরা একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে তাদের মাতৃভাষা বাংলাই ব্যবহার করে , এবং বিভিন্ন কার্যক্রম বাংলা ব্যবহার করেই চালিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।

ধর্ম

বেশিরভাগ বাংলাদেশি আমেরিকান হচ্ছেন মুসলিম। ধর্মীয় বিধিবিধান(আচার-আচরণ) বাংলাদেশি মার্কিনী পরিবারের মধ্যে সুষ্পষ্টরুপে প্রতিফলিত হয়। তারা জীবনে চলারপথে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ধর্মগ্রন্থ কোরান এবং নবী মুহম্মদের জীবনের আদর্শকে তাদের জীবনের নির্দেশিকা(গাইডলাইন) মনে করেন।

ইসলাম ধর্মের একটি শাখা হল সুন্নী সম্প্রদায়। বাংলাদেশীদের বেশিরভাগই এ শাখারই অন্তর্ভুক্ত। ছোট শহর যেখানে হয়ত মসজিদ নেই, সেখানকার বাংলাদেশী মার্কিনীরা ইসলাম ধর্মের বৃহৎ উৎসবে পার্শ্ববর্তী(নিকটস্থ) মসজিদে তাদের ধর্মীয় উৎসব পালন কর‍তে যান। যাইহোক, অনেক বাংলাদেশী শহর এলাকায় আযান দেওয়া যায় এ ধরনের অনেক মসজিদ পরিচালনা করে থাকেন।

বাংলাদেশী মার্কিনীরা অন্যান্য সম্প্রদায় যেমন: আরব আমেরিকান, ইরানিয়ান আমেরিকান, তুর্কিস আমেরিকান, আফ্রিকান আনেরিকান, ইন্দোনেশিয়ান আমেরিকান, মালয়েশিয়ান আমেরিকান, সাউথ এশিয়ান আমেরিকান ইত্যাদি মুসলিম সম্প্রদায়ের সাথে যোগাযোগ রাখে। বাংলাদেশি মার্কিনীরা Muslim Students of America (MSA) নামক সংগঠন পরিচালনায় গুরুত্বপুর্ণ ভুমিকা রাখে। এই সংগঠন আমেরিকার মুসলিম ছাত্র-ছাত্রীদের কোনো সমস্যা হলে তা সমাধানে স্ব:প্রণোদিত হয়ে এগিয়ে আসে।

যদিও বেশিরভাগ বাংলাদেশি আমেরিকানই মুসলিম, তবে এই কমিউনিটিতে কিছু হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকও আছে এবং তারা তাদের ধর্মীয় সংস্কৃতির যে বৈচিত্র্যতা আছে, তা সাড়ম্বরে পালন করে। বাংলাদেশী মুসলিম এবং বাংলাদেশী হিন্দুদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে বেশ শক্ত বন্ধন আছে। উভয়ের মধ্যে শান্তিপুর্ণ সৌহার্দ্যবোধ দেখা যায়। যুক্তরাষ্ট্রেও বাংলাদেশী হিন্দুদের দ্বারা পরিচালিত বেশ কিছু মন্দির এবং ধর্মসভা আছে। বাংলাদেশী হিন্দুদের সংখ্যা অল্প এবং তারা অন্য বৃহৎ বাঙালি হিন্দু গোষ্ঠী, যারা ভারতবর্ষ বিভাজনেরপর ভারতে চলে গেছেন, তাদের সাথে সম্পর্ক রাখেন। বাংলাদেশী হিন্দুদের সংখ্যা অল্প হলেও তাদের নিয়ে, পশ্চিমবঙ্গ এবং ভারতের অন্যান্য অংশ মিলিয়ে বাঙালি হিন্দুদের সামাজিক গ্রুপ অনেক বড় সম্প্রদায়ে পরিণত হয়েছে।

অন্যান্য জাতিগত সম্প্রদায়ের সাথে মিল রেখে যুক্তরাষ্ট্রে বেড়ে উঠা বাংলাদেশী মার্কিনীদের মধ্যেও ধর্মহীনতা, নাস্তিক্যবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা, মানবতাবাদ, ভিন্ন ভিন্ন দর্শনে প্রভাবিত হওয়ার হার বৃদ্ধি বেশ লক্ষণীয়।

উল্লেখযোগ্য বাংলাদেশী মার্কিনী

  • ড. মুহম্মদ আলি ভুইয়া জর্জিয়ার থেকে যুক্তরাষ্ট্রের কনগ্রেস প্রার্থী তুসকিজি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবং উদ্যোক্তা শিল্পের বিশিষ্ট অধ্যাপক ছিলেন।
সিয়ারস টাওয়ার (বর্তমানে উইলিস টাওয়ার নামে পরিচিত), ফজলুর রহমান খান এর নকশা করেছেন। এটা দুই দশক ধরে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু বিল্ডিং ছিল
  • আরিয়ানা আফিসার - সাবেক মিস ক্যালিফোর্নিয়া, ২০১১ তে মিস আমেরিকার প্রতিযোগীতায় টপ টেন ছিলেন।
  • সফি আহমেদ - en:World Series of Poker বিজয়ী
  • মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান -নিউ জার্সির প্যাটার্সনের নগর মন্ত্রী ছিলেন[24]
  • মাকসুদুল আলম - বিজ্ঞানী এবং অধ্যাপক।
  • জালাল আলমগীর- রাজনীতি বিশেষজ্ঞ এবং অধ্যাপক।
  • কালি এস.ব্যানার্জী - পরিসংখ্যানবিদ এবং অধ্যাপক[25]
  • রাইস ভুইয়ান - তীরন্দাজ
  • সুবির চৌধুরী - লেখক এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক
  • মি. মাসুম আলি - বল স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যানের বিশিষ্ট অধ্যাপক
  • হেনসেন ক্লার্ক - যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসম্যান ছিলেন
  • হাসান এম. এলাহি - মিডিয়া ব্যক্তিত্ব
  • ফজলে হুসাইন - মেকানিক্যাল প্রকৌশলীর অধ্যাপক, পদার্থবিদ, এবং হউটসন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুগবেষক
  • আবুল হুসাম - সনো আর্সেনিক ফিল্টারের আবিষ্কারক
  • আব্দুস সাত্তার খান - রসায়নবিদ এবং জেট ফুয়েলের উদ্ভাবক।
  • ফজলুর রহমান খান - মর্ডান স্ট্রাকচাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর পথপ্রদর্শক।
  • সালমান খান -খান একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা। এটি একটি অলাভজনক শিক্ষা নিয়ে তথ্যচিত্র নির্মাণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চালানো প্রতিষ্ঠান।
  • জাওয়েদ করিম - YouTube এর সহপ্রতিষ্ঠাতা।
  • মোহাম্মদ আতাউল করিম - ইলেক্ট্রিক্যাল প্রোকৌশলি।[26]
  • সুমাইয়া কাজি - সুমাজির প্রতিষ্ঠাতা। যা BusinessWeek বলে পরিচিত। এটা আমেরিকার তরুণ উদ্যোক্তা দের সেরা উঠে আসার ক্ষেত্রে সেরা কর্মস্থল বলে বিবেচিত হয়।
  • দিপা মা - যোগব্যায়ামের শিক্ষিকা।
  • সেজান মাহমুদ - পদকজয়ী ঔপন্যাসিক।[27]
  • শমি পাটোয়ারী - ডিজানার মিউজিক ভিডিও এর পরিচালক
  • ইকবাল কাদির - গ্রামীনফোনের প্রতিষ্ঠাতা
  • কামাল কাদির -উদ্যোক্তা, বাংলাদেশী অনলাইন মার্কেটিং এবং অর্থ হস্তান্তরের অনলাইন মাধ্যম সেলবাজার ও বিকাশের প্রতিষ্ঠাতা।
  • আনিকা রহমান -Ms. Foundation for Women এর সিইও।
  • বাদল রয় - তবলা বাদক (তবলচি), পার্কাশনিস্ট, এবং রেকর্ডিং শিল্পী।
  • রেইহান সালমান -আমেরিকান রক্ষণশীল রাজনৈতিক দলের ভাষ্যলেখক', 'The American Scene; এর ব্লগার, The Atlantic Monthly এর সহযোগী সম্পাদক
  • শিখে - গায়ক
  • আসিফ আযম সিদ্দিক - মহাকাশবিজ্ঞানের ইতিহাসবেত্তা; ফোরঢাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক
  • মি. ওসমান সিদ্দিক - সাবেক যুক্তরাষ্ট্রের এম্বাসেডর।
  • পলবাসা সিদ্দিক - গায়ক
  • নরসিংহ শীল -ওয়েস্টার্ন অরেগন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক
  • সুপ্রিম আণ্ডারস্ট্যাণ্ডিং - লেখক, প্রকাশক, এক্টিভিটিস্ট এবং Nation of Gods and Earths এর সুষ্পষ্টবাদী বক্তা ও সদস্য
  • মণিকা ইউনুস - বাংলাদেশী-রাশিয়ান- মার্কিনী অপেরা শিল্পী

তথ্যসূত্র

  1. http://publications.iom.int/bookstore/free/Diaspora_Linkage_Bangladeshis.pdf
  2. http://www.migrationpolicy.org/sites/default/files/publications/RAD-Bangladesh.pdf
  3. "Yearbook of Immigration Statistics: 2012 Supplemental Table 2"। U.S. Department of Homeland Security। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৪-০৩
  4. "Yearbook of Immigration Statistics: 2011 Supplemental Table 2"। U.S. Department of Homeland Security। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৪-০৩
  5. "Yearbook of Immigration Statistics: 2010 Supplemental Table 2"। U.S. Department of Homeland Security। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৪-০৩
  6. টেমপ্লেট:Cite bookবেশিরভাগ tle=Bengali Harlem and the Lost Histories of South Asian America
  7. Kershaw, Sarah (২০০১-০৩-০৮)। "Queens to Detroit: A Bangladeshi Passage"The New York Times। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৪-২৬
  8. Other Immigrants: The Global Origins of the American People. By David M. Reimers. page 198-200.
  9. The North American Muslim Resource Guide : Muslim Community Life in the United States and Canada. By Mohamed Nimer. page 33.
  10. "The City Line neighborhood on the Brooklyn-Queens border has become a booming Bangladeshi enclave"NY Daily News
  11. Salaam America: South Asian Muslims in New York. By Aminah Mohammad-Arif. page 33-35.
  12. "Asian American Federation NY" (PDF)www.aafny.org। Asian American Federation। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৯-২৬
  13. "The Bangladeshis Are On The Rise in New York City"Huffington Post। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৯-২৬
  14. "Yearbook of Immigration Statistics: 2011 Supplemental Tabe 2"। U.S. Department of Homeland Security। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৪-১৪
  15. Joe Malinconico and Charlie Kratovil (২০১২-০৫-০৯)। "Paterson's Bengali Community Takes Pride in Akhtaruzzaman's Upset Victory"। The Alternative Press। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৪-০৩
  16. Nick Clunn (২০১২-০৫-০৯)। "Update: Bangladeshi-Americans score a first with Paterson Council election"। North Jersey Media Group। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৪-০৩
  17. Clunn, Nick. "Officials certify election of Akhtaruzzaman to Paterson's 2nd Ward", The Record (Bergen County), 27 November 2012. Accessed 2015-02-18. "Election officials Tuesday certified Mohammed Akhtaruzzaman as the winner of a special City Council race, settling a prolonged political contest that ended with his reclaiming the seat he lost in a court challenge.... It was unclear when Akhtaruzzaman would take office as the representative for the 2nd Ward and reclaim his mantle as the first Bangladeshi-American elected to municipal office in North Jersey."
  18. Ed Rumley (২০১৪-১০-১২)। "Paterson's Bangladeshi community celebrates start of Martyrs' Monument"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-১০-১৩
  19. Harvard encyclopedia of American ethnic groups. By Stephan Thernstrom, Ann Orlov, Oscar Handlin. page 173-174.
  20. "Median houseland income in the past 12 months (in 2014 inflation-adjusted dollars)"American Community Survey। United States Census Bureau। ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২৯ ডিসেম্বর ২০১৫
  21. "Yearbook of Immigration Statistics: 2012 Supplemental Table 2"। U.S. Department of Homeland Security। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৪-১৪
  22. "Yearbook of Immigration Statistics: 2010 Supplemental Table 2"। U.S. Department of Homeland Security। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৪-১৪
  23. Jessica S. Barnes; Claudette E. Bennett (ফেব্রুয়ারি ২০০২)। "The Asian Population: 2000" (PDF)U.S. Census Bureau। U.S. Department of Commerce। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৯-৩০
  24. Joe Malinconico and Charlie Kratovil (২০১২-০৫-০৯)। "Paterson's Bengali Community Takes Pride in Akhtaruzzaman's Upset Victory"। The Alternative Press। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০২-১৭
  25. "In Memoriam Kali S. Banerjee"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৩-১৭
  26. "News at Old Dominion University"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৩-১৭
  27. "Archived copy"। ২০১৩-০৭-১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-১২-১১

বহি:স্থ লিঙ্ক

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.