বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা

বাংলাদেশের জাতীয় চিড়িয়াখানা (ইংরেজি: Bangladesh National Zoo) ঢাকার মিরপুরে স্থাপিত। এটি বাংলাদেশ সরকারের মৎস্য ও পশুসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ একটি প্রতিষ্ঠান। ১৯৫০ সালে হাইকোর্ট চত্বরে জীবজন্তুর প্রদর্শনশালা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় চিড়িয়াখানাটি। পরবর্তীকালে ১৯৭৪ সালে বর্তমান অবস্থানে স্থানান্তরিত হয় এটি। চিড়িয়াখানাটি উদ্বোধন ও সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হয় ১৯৭৪ সালের ২৩ জুন। বছরে প্রায় ৩০ লক্ষ দর্শনার্থী ঢাকা চিড়িয়াখানা পরিদর্শন করে থাকেন। ২০১৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি নাম পরিবর্তন করে ঢাকা চিড়িয়াখানা থেকে বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা নামকরণ করা হয়।[2]

বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা
চিড়িয়াখানার প্রবেশ পথ
স্থাপিত২৩শে জুন, ১৯৭৪[1]
অবস্থানমিরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ
স্থানাঙ্ক২৩°৪৮′৪৫.৬২″ উত্তর ৯০°২০′৪০.৬″ পূর্ব
আয়তন১৮৬ একর
প্রাণীর সংখ্যা২১৫০[1]
প্রজাতির সংখ্যা১৯১[1]
বার্ষিক পরিদর্শক৩,০০০,০০০[1]
প্রধান প্রদর্শনসমূহরয়েল বেঙ্গল টাইগার, এশীয় সিংহ, লোনা পানির কুমির, ইমপালা, এমু, টাপির, এশিয়ান কালো ভাল্লুক

ইতিহাস

ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে ঢাকা শহরের শাহবাগে তৎকালীন নবাবরা একটি ব্যক্তিগত চিড়িয়াখানার গোড়াপত্তন করেন। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির পর বাংলাদেশ বা তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানে একটি চিড়িয়াখানার অভাব অনুভূত হয়। পঞ্চাশের দশকের শেষভাগে ঢাকার সুপ্রিম কোর্টের সামনে বর্তমান ঈদগাহ এলাকায় ৪-৫ একর জায়গা জুড়ে ছোট আকারের একটি চিড়িয়াখানা স্থাপন করা হয়। চিড়িয়াখানাটিতে একটি বড় পুকুর এবং পাড়ের খানিকটা জায়গা জুড়ে একটি বলাকা প্রদর্শনী ছিল। সেখানে রাজহাঁস, পাতিহাঁস, শীতের পরিযায়ী হাঁস এবং অন্যান্য পাখি ছিল। হাড়গিলা, সারস এবং ময়ূরও প্রদর্শিত হত। বানর, হনুমান আর হরিণ ছিল। সরিসৃপের মধ্যে অজগরকুমির ছিল প্রধান।[3]

ঢাকায় একটি আধুনিক চিড়িয়াখানা স্থাপনের ব্যাপারে প্রথম সরকারি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে। তৎকালীন কৃষি, সহযোগিতা ও ত্রাণ বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ঢাকার উপকণ্ঠে একটি চিড়িয়াখানা ও উদ্ভিদ উদ্যান স্থাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়। সে বছর ২৬ ডিসেম্বর প্রস্তাবনাটি চুড়ান্তভাবে ঘোষিত হয়। এরপর চিড়িয়াখানা স্থাপনের কোনপ্রকার উদ্যোগ ছাড়াই এক দশক পার হয়ে যায়। ১৯৬১ সালের ১১ মার্চ খাদ্য ও কৃষি বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনের বরাতে এক উপদেষ্টা পরিষদের নাম ঘোষণা করা হয়। এ পরিষদের কাজ ছিল প্রস্তাবিত চিড়িয়াখানা ও উদ্ভিদ উদ্যান স্থাপন ও ব্যবস্থাপনার ব্যাপারে সরকারকে পরামর্শ দান। তদানীন্তন পশুপালন সার্ভিসের পরিচালক এই পরিষদের সদস্য সচিব হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন।[3][4]

ঢাকা চিড়িয়াখানার জলার কুমির

বিস্তৃতি

ঢাকা চিড়িয়াখানার আয়তন প্রায় ৭৫ হেক্টর। চিড়িয়াখানার চত্বরে ১৩ হেক্টরের দুটি লেক আছে।

প্রাণী বৈচিত্র্য

একদল চিত্রা হরিণ

চিড়িয়াখানা তথ্যকেন্দ্র হতে প্রাপ্ত তথ্য হতে জানা যায়, বর্তমানে ঢাকা চিড়িয়াখানায় ১৯১ প্রজাতির ২১৫০টি প্রাণী রয়েছে। তবে ঢাকা চিড়িয়াখানায় ১৩৮ প্রজাতির ২ হাজার ৬২২টি প্রাণী ও পাখি রয়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হক । [5]

গ্যালারি

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. "ঐতিহাসিক স্থান: ঢাকা চিড়িয়াখানা"dhakacity.orgঢাকা সিটি কর্পোরেশন। সংগ্রহের তারিখ ১৫ই জানুয়ারি ২০১১ এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  2. http://studypress.org/news/details/%E0%A6%A2%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%BE-%E0%A6%9A%E0%A6%BF%E0%A7%9C%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E0%A6%96%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%AE-%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%AC%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%A8-%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%87-%E2%80%98%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6-%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A7%80%E0%A7%9F-%E0%A6%9A%E0%A6%BF%E0%A7%9C%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E0%A6%96%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E2%80%99%E0%A6%A4%E0%A7%87-%E0%A6%B0%E0%A7%82%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%B0%E0%A5%A4/110
  3. মো: আলী রেজা খান, চিড়িয়াখানা ব্যবস্থাপনা, (ঢাকা: বাংলা একাডেমী, ১৯৯৮), পৃ. ৯।
  4. ঢাকা চিড়িয়াখানা গাইড, ঢাকা চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, ১৯৭৮।
  5. জাগোনিউজ২৪.কম

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.