ফ্রিটজফ শুয়ন
ফ্রিটজফ শুয়ন ইংরেজি: Frithjof Schuon) /ˈʃuːɒn/; German: ˈfʀiːtˌjoːfˈ ʃuː.ɔn; (জুন ১৮, ১৯০৭- মে ৫, ১৯৯৮) ছিলেন জার্মান পিতা-মাতার সন্তান। জন্মগ্রহণ করেন সুইজারল্যান্ডের ব্রাসেলসে। তিনি ছিলেন একজন আধ্যাত্মবাদী দার্শনিক। আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় প্রবন্ধের লেখক হিসাবে ছিলেন বহুল পরিচিত। [1]
ফ্রিটজফ শুয়ন | |
---|---|
![]() | |
জন্ম | |
মৃত্যু | ৫ মে ১৯৯৮ ৯০) Bloomington, ইন্ডিয়ানা, যুক্তরাষ্ট্র | (বয়স
জাতীয়তা | Swiss |
জন্ম
তিনি জুন ১৮, ১৯০৭ খ্রিষ্টাব্দে সুইজারল্যান্ডের ব্রাসেলসে জন্ম গ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন জার্মানির দক্ষিণাঞ্চলের একজন বাসিন্দা আর মা এ্যালসাটিন বংশদ্ভূত।
প্রাথমিক শিক্ষা
পিতার অকাল মৃত্যু পর্যন্ত শুয়ন ব্রাসেলসের একটি বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করতেন এর পর তার মা দুই সন্তান সহ ফ্রান্সে বসবাস করতে শুরু করেন। এভাবে শুয়ন ফ্রান্সের নাগরিক হিসাবে বেড়ে উঠেন। ফলে শুরুতে জার্মান ও পরে ফ্রেঞ্চ বা ফরাসি ভাষায় তার শিক্ষা লাভের সুযোগ হয় এবং উভয় ভাষায় দক্ষতা অর্জন করেন।[2]
সংসার
শুয়ন ১৯৪৯ সালে জার্মান বঙ্গিশদ্ভূত একজন প্রতিভাধর সুইস চিত্রশিল্পীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।[2]
সুফিত্ব
ছোটবেলা হতেই আধ্যাত্মবাদের প্রতি শুয়নের ছিল ঝোঁক। তিনি প্রথম দিকেই উপনিষদ ও বেদ অধ্যয়ন করেন। ম্যালহাউসে বসবাসকালে তিনি ফ্রেঞ্চ দার্শনিক ও প্রাচ্যভাষাবিদ রেনে গেনো এবং তার লেখনি সম্পর্কে জানতে পারেন। এ লেখনি সমূহের সূত্র ধরেই আধ্যাত্মবাদে তার পথ চলা শুরু হয়।[2]
ফ্রেঞ্চ সেনা বাহিনীতে দেড় বছর কাজ করার পর তিনি প্যারিসে চলে আসেন। সেখানে একজন টেক্সটাইল ডিজাইনার হিসাবে কাজ করার পাশাপাশি একটি মসজিদে আরবী ভাষা শিখা আরম্ভ করেন। এ সময়ে তিনি বিভিন্ন ধরনের বুনিয়াদি মতাদর্শের মানুষের সঙ্গ লাভ করেন। এরই ফলশ্রুতিতে তিনি ১৯৩২ সালে প্রথমবারের মত আলজেরিয়ায় ভ্রমন করেন। এ যাত্রায় তিনি আলজেরীয়ার তৎকালীন বিখ্যাত সুফি দার্শনিক আহমেদ আল আলাউয়্যির নিকট তার সুফি তরীকায় বাইয়্যাত বা দীক্ষ গ্রহণ করেন।[2]
১৯৩৫ খৃষ্টাব্ধে উত্তর আফ্রিকায় দ্বিতীয় সফরে তিনি আলজেরীয়া ও মরক্কো ভ্রমণ করেন। পরবর্তীতে ১৯৩৮ ও ১৩৯ সালে তিনি ভ্রমণ করেন মিশর। সেখানে সাক্ষাৎ হয় রেনে গেনোর, যার সাথে তার যোগাযোগ চলতে থাকে একটানা ২৭ বছর ধরে। ১৯৩৯ সালে ভারতের পাই অঞ্চল ভ্রমনের কিয়দকাল পরেই দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ শুরু হয়। ফলে তাকে ইউরোপ ফিরে আসেতে বাধ্য করা হয়। ফ্রেঞ্চ সেনা বাহিনীতে কাজ করার দরুন জার্মান বাহিনী তাকে গ্রেফতার করে। তখন তিনি সুইজারল্যান্ডে রাজনৈতিক আশ্রয় চান ফলে তিনি সুইস নাগরিকত্ব লাভ করেন এবং সেখানেই পরবর্তী ৪০ বছর তিনি স্থায়িভাবে সববাস করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে তিনি আমেরীকার পশ্চিমাঞ্চলে আমন্ত্রিত হলে সেখানে তার পছন্দের সাধারণ ভারতীয়দের সাথে কয়েক মাস অবস্থান করেন। [2]
অবদান
ফরাসি ভাষায় বিদ্যার্জনের পর হতে তিনি তার প্রায় সকল বিখ্যাত লেখা সমূহ এ ভাষায়ই রচনা করেন যা ১৯৫৩ সাল হতে ইংরেজী অনুবাদ হতে আরম্ভ হয়। তার প্রথম বই ট্রানসেন্ডেন্ট ইউনিটি অব রিলিজিয়ন The Transcendent Unity of Religions (London, Faber & Faber) সম্পের্কে টি এস ইলিয়ট (T. S. Eliot) মন্তব্য করেন, ইতি পূর্বে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য ধর্মের তুলনা ও সমন্বয়মূলক এত প্রভাব সৃষ্টিকারী গ্রন্থ ইতঃপূর্বে আমি আর পড়িনি। [2] লেখালেখির পাশাপাশি শুয়ান ও তার স্ত্রী ব্যাপক ভ্রমনে অভ্যস্ত ছিলেন। তিনি ১৯৫৯ ও ১৯৬৩ সালে অমেরীকার পশ্চিমাঞ্চলে আরও দুইবার ভ্রমণ করেন। ১৯৫৯ সালে তরা স্বামী স্ত্রী জেমস রেড ক্লাউডের সাইওক্স পরিবারের সাথে একাত্ব হন। ভ্রমনের অন্যান্য পর্যায়ে ১৯৬৮ সালে তিনি আন্দালুসিয়া ও মরক্কোতে যান। তার অসংখ্য বই এবং নিবন্ধের মাধ্যমে তিনি আধ্যাত্ম বা সুফি তরীকার একজন দার্শনিক ও দীক্ষগুরু হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেন। [2]
মৃত্যু
শুয়ন ও তার স্ত্রী ১৯৮০ সালে আমেরীকাতে বসতি স্থাপন করেন এবং ১৯৯৮ সালে তার মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি সেখানেই বসবাস ও লেখালেখি করতে থাকেন।[2]
তথ্যসূত্র
- শুয়ান, ফ্রিটজফ (১৯৮২)। ফ্রম দ্যা ডিভাইন টু দ্যা হিউম্যান। ইউ এস এ: ওয়ার্ল্ড ওয়াইজডম বুকস। আইএসবিএন 0-941532-20-1
|আইএসবিএন=
এর মান পরীক্ষা করুন: checksum (সাহায্য)। - ফ্রিটজফ স্যাচুনের জীবনী ও কর্ম (Frithjof Schuon's life and work)