প্রিন্স ক্যাস্পিয়ান

প্রিন্স ক্যাস্পিয়ান (মূলত প্রিন্স ক্যাস্পিয়ান: দ্য রিটার্ন টু নার্নিয়া নামে প্রকাশিত হয়) শিশুদের জন্য লেখা সি. এস. লিউইসের একটি কল্প-উপন্যাস এবং ১৯৫১ সালে এটি প্রকাশনা করে জিওফ্রি ব্লেস। এটি দ্য ক্রনিকলস্ অব নার্নিয়া (১৯৫০-১৯৫৬) ধারার সাতটি উপন্যাসের দ্বিতীয় বই যা লিউইস ১৯৪৯ সালে লেখা সম্পন্ন করেন।[4] অন্যসবগুলোর মত এই বইটিরও অলঙ্করণ করেন পউলিন বেইনিস[1][3]

প্রিন্স ক্যাস্পিয়ান
প্রথম সংস্করণের প্রচ্ছদ
লেখকসি. এস. লিউইস
অঙ্কনশিল্পীপউলিন বেইনিস
প্রচ্ছদ শিল্পীপউলিন বেইনিস
দেশযুক্তরাজ্য
ভাষাইংরেজি
ধারাবাহিকদ্য ক্রনিকলস্ অব নার্নিয়া
ধরনশিশু সাহিত্য
প্রকাশকজিওফ্রি ব্লেস
প্রকাশনার তারিখ
১৫ অক্টোবর ১৯৫১
মিডিয়া ধরনমুদ্রণ
পৃষ্ঠাসংখ্যা১৯৫ (প্রথম সংস্করণ)[1]
৪৪,৭৪০ শব্দ (যুক্তরাষ্ট্র)[2]
আইএসবিএন978-0-00-671679-2 (কলিনস, ১৯৯৮; রঙ্গীন)
ওসিএলসি2812448
এলসি শ্রেণীPZ8.L48 Pr[3]
পূর্ববর্তী বইদ্য লায়ন, দ্য উইচ অ্যান্ড দ্য ওয়াড্রোব 
পরবর্তী বইদ্য ভয়েজ অব দ্য ডন ট্রেডার 

প্রিন্স ক্যাস্পিয়ান পেভেনসি ভাইবোনদের নার্নিয়ায় পুনরায় প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে রচিত। প্রথম যাত্রার এক বছর পর কিন্তু নার্নিয়ার তেরোশ বছর পর তারা তাদের দ্বিতীয় এই ভ্রমণ করে।[lower-alpha 1] দ্য ক্রনিকলস্ অব নার্নিয়া ধারার এটিই একমাত্র বই যেখানে নার্নিয়ায় বসবাসকারীদের মধ্যে মানুষের আধিক্য দেখা যায় এবং কথা বলা জন্তু ও পৌরাণিক প্রাণীরা তাদের দ্বারা নির্যাতিত হয়। পেভেনসিরা নার্নিয়ার কিংবদন্তি শাসক এবং তাদেরকে রাজকুমার ক্যাস্পিয়ান জাদুবলে পুনরায় আহ্বান জানায় এবং তারা পুর্বের শিশুরুপে আগমন করে।

কাহিনী-সংক্ষেপ

একটি ব্রিটিশ রেলওয়ে স্টেশনে দাড়িয়ে থাকার সময় পিটার, সুজান, এডমন্ড এবং লুসি পেভেনসি জাদুবলে এক ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রাসাদের নিকট সমুদ্র তীরে এসে পৌঁছায়। তারা বুঝতে পারে এটিই কেইর প্যারাভেল, যেখানে তারা নার্নিয়ার রাজা ও রানি হিসেবে শাসন করেছিল, এবং তারা একটি ধনভান্ডার খুজে পায় যেখানে পিটারের ঢাল ও তলোয়ার, সুজানের তীর-ধনুক, আর লুসির জাদুর নিরাময়ী রাখা ছিল। কিন্তু নার্নিয়া থেকে ইংল্যান্ডে ফিরে যাওয়ার সময় জঙ্গলে রেখে যাওয়ায় সেখানে সুজানের শিঙ্গা ছিলনা। যদিও ইংল্যান্ডে একবছর সময়কাল অতিবাহিত হয়েছে, কিন্তু নার্নিয়ায় ১৩০০ বছর পার হয়ে গিয়েছে।[lower-alpha 1]

সমুদ্র তীরে পেভেনসিরা বামুণ ট্রাম্পকিনকে কয়েকজন সৈনিকের হাত থেকে রক্ষা করে, যারা তাকে ডুবিয়ে মারার উদ্দ্যেশ্যে সেখানে নিয়ে গিয়েছিল। ট্রাম্পকিন পেভেনসিদের তাদের চলে যাওয়ার পর থেকে নার্নিয়ার ইতিহাস বলে: টেলমেরিনরা নার্নিয়া দখল করে নিয়েছে, এখন নার্নিয়া শাসন করছে রাজা মিরাজ এবং তার স্ত্রী রাণী প্রুনাপ্রিসমিয়া, কিন্তু ন্যায়সঙ্গত রাজা হলো মিরাজের ভাতিজা রাজকুমার ক্যাস্পিয়ান, যে প্রাচীন নার্নিয়ানদের সমর্থন অর্জন করেছে।

মিরাজ তার ভাই এবং ক্যাস্পিয়ানের বাবা রাজা দশম ক্যাস্পিয়ানকে হত্যা করে সিংহাসন নিজের করায়ত্তে আনে। মিরাজ তার নিজের সন্তানের জন্ম হওয়া পর্যন্ত ক্যাস্পিয়ানকে উত্তরাধিকারি হিসাবে সহ্য করে। তার চাচার কৃতকর্ম জানার পর ক্যাস্পিয়ান তার শিক্ষক ডক্টর কর্নেলিয়াসের সহায়তায় মিরাজের প্রাসাদ থেকে পালিয়ে যায়। কর্নেলিয়াস ক্যাস্পিয়ানকে প্রাচীন নার্নিয়ানদের সম্পর্কে শিক্ষা দিয়েছিল এবং সে তাকে রাণী সুজানের শিঙ্গা দেয়। ক্যাস্পিয়ান জঙ্গলে পালিয়ে যাওয়ার সময় ঘোড়া থেকে পড়ে অচেতন হয়ে যায়। সে জ্ঞান ফিরে পায় এক কথা বলা ব্যাজার ও দুই বামুণ নিকাব্রিক ও ট্রাম্পকিনের কুঠরিতে, যারা ক্যাস্পিয়ানকে তাদের রাজা হিসেবে গ্রহণ করে।

ব্যাজার ও বামুণেরা ক্যাস্পিয়ানকে অন্য প্রাচীণ নার্নিয়ানদের সাথে দেখা করাতে নিয়ে যায়। ডান্সিং লনে মধ্যরাতের এক পরামর্শ সভায় ডক্টর কর্নেলিয়াস এসে তাদের মিরাজ ও তার সৈন্যবাহীনির অগ্রসর হওয়ার বিষয়ে সাবধান করে দেয়। সে তাদের বলে কেইর প্যারাভালের নিকট মহাজঙ্গলের মধ্যে স্টোন টেবিলে পালিয়ে যেতে বলে। টেলমেরিনরা নার্নিয়ানদের স্টোন টেবিল পর্যন্ত ধাওয়া করে এবং কিছু বিচ্ছিন্ন লড়াইয়ের পর নার্নিয়ানরা প্রায় পরাজয়ের কাছাকাছি অবস্থায় চলে আসে। দ্বিতীয় যুদ্ধকালীন পরামর্শ সভায়, তারা রাণী সুজানের শিঙ্গা বাজানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এই আশায় যে, আসলান অথবা নার্নিয়ার স্বর্ণযুগের কিংবদন্তি রাজা রাণীদের কাছ থেকে সাহায্য আসবে।

ট্রাম্পকিন আর পেভেনসিরা ক্যাস্পিয়ানের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। তাদের যাত্রাপথ ছিল কঠিন, কিন্তু আসলান লুসির সামনে আসে এবং তাকে নির্দেশ দেয় অন্যদের নিয়ে তার পেছনে আসতে। আসলান পিটার, এডমন্ড এবং ট্রাম্পকিনকে বিশ্বাঘাতকতা দমন করতে স্টোন টেবিলে পাঠায় এবং তার সাথে সুজান ও লুসিকে নিয়ে যায়।

পিটার, এডমন্ড, এবং ট্রাম্পকিন সেখানে পৌঁছে ক্যাস্পিয়ানকে হুমকির মুখে ফেলা জন্তুদের হত্যা করার পর পিটার মিরাজকে একক লড়াইয়ে আহ্বান জানায়। এই দন্দ যুদ্ধে বিজেতার সেনারা যুদ্ধে বিজয়ী বলে বিবেচিত হবে। মিরাজ লর্ড গ্লজেল্লি ও লর্ড সোপেসফিয়ানের প্ররোচনায় এই প্রস্তাবে রাজী হয়। লড়াইয়ে মিরাজ পরাজিত হয়, কিন্তু গ্লজেল্লি আর সোপেসফিয়ান ঘোষণা করে যে, নার্নিয়ানরা প্রতারণা করেছে এবং তাদের রাজা পড়ে যাওয়ার পর তার পিঠে ছুরি চালিয়েছে। তারা টেলমেরিন সৈন্যদের নার্নিয়ানদের আক্রমণের আদেশ দেয় এবং এই গোলমালের ভেতর গ্লজেল্লি মাটিতে পড়ে থাকা মিরাজের পিঠে ছুরি চালায়।

চরিত্রসমূহ

  • লুসি পেভেনসি, পেভেনসিদের মধ্যে সবার ছোট, সে-ই হলো প্রথম ব্যক্তি যে পুনরায় আসলানকে দেখে।
  • এডমন্ড পেভেনসি হলো পেভেনসিদের মধ্যে তৃতীয়। অন্যান্য ভাইবোন আসলকে দেখার বিষয়ে সে-ই লুসিকে বিশ্বাস করে।
  • পিটার পেভেনসি, পেভেনসিদের মধ্যে সবার বড় এবং সে নার্নিয়ার মহারাজা।
  • সুজান পেভেনসি পেভেনসিদের মধ্য দ্বিতীয় জ্যেষ্ঠ। সে তীর ও ধনুক ব্যবহার করে।
  • রাজকুমার ক্যাস্পিয়ান, ন্যায়সঙ্গত টেলমেরিন রাজা, যে পরবর্তীতে নার্নিয়ার রাজা হয়। পরবর্তী দুইটি বই দ্য ভয়েজ অব দ্য ডন ট্রেডারদ্য সিলভার চেয়ারে তাকে দেখা যায়। এছাড়াও দ্য লাস্ট ব্যাটল উপন্যাসে তাকে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য তার উপস্থিতি রয়েছে।

তথ্যসূত্র

  1. "Bibliography: Prince Caspian". ISFDB. Retrieved 8 December 2012.
  2. "Scholastic Catalog – Book Information"। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুন ২০১৪
  3. "Prince Caspian, the return to Narnia" (first edition). Library of Congress Catalog Record.
    "Prince Caspian, the return to Narnia" (first US edition). LCC record. Retrieved 2012-12-08.
  4. Roger Lancelyn Green & Walter Hooper, C. S. Lewis: A Biography, 2002, p. 309.
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.