প্রিজম (আলোকবিজ্ঞান)

আলোকবিজ্ঞানে প্রিজম হলো একটি প্রিজম আকৃতির স্বচ্ছ বস্তু যার মধ্য দিয়ে সাদা আলোকরশ্মি যাবার সময় সাতটি রং এ বিভক্ত হয়ে যায়। ব্যবহার অনুযায়ী এর তলের সংখ্যা ভিন্ন ভিন্ন হয়। প্রিজম সাধারণত কাচের তৈরি হয় ও ত্রিকোণাকৃতির প্রস্থছেদের তবে এটি অন্য যেকোন স্বচ্ছ পদার্থ দিয়েও তৈরি করা যায়।

একটি প্লাস্টিকের প্রিজম

প্রিজম যেভাবে কাজ করে

একটি ত্রিভুজীয় প্রিজম, আলোকরশ্মি বিচ্ছুরণ করছে; তরঙ্গের মাধ্যমে আলোর বিভিন্নমুখী তরঙ্গদৈর্ঘ্যের চিত্র। (অ্যানিমেশন দেখতে ক্লিক করুন)

এক মাধ্যম থেকে অন্য মাধ্যমে যাবার সময় আলোর গতিপথ পরিবর্তিত হয়। গতিপথ পরিবর্তনের ফলে মাধ্যমদ্বয়ের বিভেদ তলে আলো একটি নির্দিষ্ট কোনে বেঁকে প্রতিসরিত (Huyghens principle), অথবা প্রতিফলিত হয়।

স্যার আইজাক নিউটনের সময় অনেকে বিশ্বাস করত যে প্রিজম নতুন রঙের আলো সৃষ্টি করে। আইজাক নিউটন দুটি প্রিজম নিয়ে দেখেন যে একটির উপর আলো পড়লে সেটি থেকে বর্ণালি সৃষ্টি হয় এবং দ্বিতীয় প্রিজমের মধ্য দিয়ে যাবার সময় তা আবার একটি রঙের আলোতে পরিণত হয়। এবং এই সিদ্ধান্তে পৌছান যে এই বর্ণালি গুলো প্রিজম তৈরি করেনি বরং এগুলো আগে থেকেই সাদা আলোর মাঝে অবস্থান করছিলো। প্রিজম আলো তৈরি করেনা, আলোর মধ্যে থাকা বর্ণালিগুলোকে শুধুমাত্র পৃথক করে। তিনি একটি লেন্স এবং আরেকটি প্রিজম ব্যবহার করে পূণরায় ঐ বর্ণালিগুলোকে সাদা রঙের আলোতে পরিনত করেন। স্যার আইজাক নিউটনের এই পরীক্ষাটি বিজ্ঞানের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় দৃষ্টান্ত হিসাবে চিহ্নিত হয়ে রয়েছে।[1][2]

অনেক সময় প্রিজম আলোর বিচ্ছুরন না ঘটিয়ে প্রতিফলন ঘটিয়ে থাকে। আলো প্রিজমের উপর একটি নির্দিষ্ট কোনে আপতিত হলে আলো বিচ্ছুরিত হয় না, বরং পূর্ণ আভ্যন্তরীন প্রতিফলন ঘটে এবং আপতিত রশ্মির সবটুকুই প্রতিফলিত হয়। প্রিজমের এ ধর্মের কারণে এটিকে কোন কোন সময় আয়নার বিকল্প হিসাবে ব্যবহার করা হয়।

প্রিজমের প্রকারভেদ

বিচ্ছুরণ প্রিজম

তুলনামূলক অপবর্তন স্পেকট্রামের অপবর্তন থেকে প্রাপ্ত প্রিজম।
  • ত্রিভুজীয় প্রিজম
  • অ্যাবে প্রিজম
  • পেলিন-ব্রকা প্রিজম
  • আমিচি প্রিজম
  • কম্পাউন্ড প্রিজম
  • গ্রিজম, অপবর্তনের পৃষ্ঠতলের সাথে বিকিরণশীল প্রিজম

প্রতিফলন প্রিজম

  • পঞ্চভুজ প্রিজম
  • পোর্‌রো প্রিজম
  • পোর্‌রো-আব্বে প্রিজম

পোলারাইজিং প্রিজম

  • নিকোল প্রিজম
  • ওয়েলেস্টন প্রিজম
  • রোকন প্রিজম
  • গ্ল্যান-ফুকো প্রিজম
  • গ্ল্যান-টেইলর প্রিজম
  • গ্ল্যান-থমসন প্রিজম

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. I. Newton (১৭০৪)। Opticks। London: Royal Society। আইএসবিএন 0-486-60205-2।
  2. "The Discovery of the Spectrum of Light"। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ডিসেম্বর ২০০৯

আরো পড়ুন

  • Hecht, Eugene (২০০১)। Optics (4th ed.)। Pearson Education। আইএসবিএন ০-৮০৫৩-৮৫৬৬-৫।

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.