প্রতিবন্ধী

প্রতিবন্ধি কারা

বয়স, লিঙ্গ, জাতি, সংস্কৃতি বা সামাজিক অবস্থান অনুযায়ী আর দশজন যে কাজগুলো করতে পারে ইমপেয়ারমেন্টের কারণে সে কাজগুলো প্রাত্যহিক জীবনে করতে না পারার অবস্থাটাই হল ডিসএবিলিটি বা প্রতিবন্ধিতা৷ ইমপেয়ারমেন্ট হল দেহের কোন অংশ বা তন্ত্র যদি আংশিক বা সম্পূণভাবে, ক্ষনস্থায়ী বা চিরস্থায়ী ভাবে তার স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা হারায় সে অবস্থাটিকেই বোঝায় ৷[1]

প্রতিবন্ধীর ধারণা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) প্রকাশিত "International classification of impairment, Disability and Handicap (ICIDH)" শীর্ষক প্রকাশনায় বিকলাঙ্গ ও প্রতিবন্ধী সমস্যাকে ৩ শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয়েছে, যথা- ১. দূর্বলতা (Impairment), ২. অক্ষমতা (Disability ), ৩. প্রতিবন্ধী (Handicap)।

বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী কল্যাণ আইন , ২০০১-এ বলা হয়েছে যে, " প্রতিবন্ধী অর্থ এমন এক ব্যক্তি যিনি জন্মগতভাবে বা রোগাক্রান্ত হয়ে বা দুর্ঘটনায় আহত হয়ে বা অপচিকিৎসায় বা অন্য কোনো কারণে দৈহিকভাবে বিকলাঙ্গ বা মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন এবং উক্তরুপ বৈকল্য বা ভারসাম্যহীনতার ফলে স্থায়ীভাবে আংশিক বা সম্পুর্ণ কর্মক্ষমতাহীন এবং স্বাভাবিক জীবনযাপনে অক্ষম"।

প্রতিবন্ধিতার প্রকারভেদ

প্রতিবন্ধিতার প্রকারভেদ বিভিন্ন ভিত্তিতে করা হয়ে থাকে ৷ যেমন :

কখন শুরু হয়েছে তার ভিত্তিতে

  • প্রাথমিক প্রতিবন্ধিতাঃ বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধীত্ব নিয়ে জণ্মগ্রহণ করলে তাকে প্রাথমিক প্রতিবন্ধীতা বলা হয় ৷
  • পরবতী বা অর্জিত প্রতিবন্ধিতাঃ জণ্মের পরে বিভিন্ন কারণে প্রতিবন্ধিত্ব বরন করে থাকলে থাকে পরবতীᐂ বা অর্জিত প্রতিবন্ধিতা বলা হয় ৷

কোন অঙ্গ আক্রান্ত হয়েছে তার ভিত্তিতে

  • শারীরিক প্রতিবন্ধি
  • দৃষ্টি প্রতিবন্ধি
  • শ্রবন প্রতিবন্ধি
  • বাক প্রতিবন্ধি
  • বুদ্ধি প্রতিবন্ধি
  • বহুবিধ প্রতিবন্ধি

মাত্রা অনুযায়ী

  • মৃদু
  • মাঝারি
  • তীব্র
  • চরম

প্রতিবন্ধিতার কারণ

বেশীর ভাগ প্রতিবন্ধতার কারণ আমাদের জানা নেই ৷ কিন্তু যেগুলো সম্বন্ধে জানা যায়, তা কয়েকটি শ্রেনীতে ভাগ করা যায়৷ যা নিচে উল্লেখ করা হলো ঃ

সাধারণ কারণ সমূহঃ

বংশানুক্রমিক

  • রক্তের সম্পর্ক রয়েছে এমন কোন কোন আত্মীয়ের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক (সন্তানদের মধ্যে)

দূর্ঘটনা

  • উচ্চ মাত্রার জ্বর

বিষক্রিয়া

  • মস্তিষ্কের কিছু কিছু ইনফেকশন বা অসুখ বা টিউমার

পুষ্টি অভাব, ভিটামিনের অভাব, আয়োডিনের অভাব ইত্যাদি

জণ্ম-সম্পর্কিত কারণ সমূহঃ

জণ্মের পূর্বেঃ

  • মায়ের বয়স যদি ১৬ বছরের নিচে অথবা ৩০ বছরের উপরে হয়।
  • গর্ভাবস্থায় মায়ের পুষ্টির অভাব
  • গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাসের মধ্যে যদি মা কোনরকম কড়া ঔষধ গ্রহণ করে থাকে অথবা কীটনাশক, রাসায়নিক, রশ্মি, বিষক্রিয়া গ্রহণ করে থাকে ৷
  • গর্ভাবস্থায় যদি মায়ের বিশেষ হাম হয়৷ এটি সাধারণত প্রভাব বিস্তার করে থাকে ইন্দ্রিয়স্থান (শ্রবন এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধিদের ক্ষেত্রে), মস্তিস্কের সেরেব্রাল পালসি অথবা মানসিক প্রতিবন্ধিত্ব অথবা শরীরের অভ্যন্তরের বাহুতেও প্রভাব বিস্তার করতে পারে৷
  • গর্ভধারণকারী মায়ের যদি হৃদযন্ত্র সংক্রান্ত জটিলতা বা ডায়াবেটিস থাকে৷
  • গভাধারণকারী মায়ের যদি বিভিন্ন অভ্যাস থাকে৷ যেমন- মদ পান, ধূমপান করা, তামাক ব্যবহার করা ইত্যাদি৷

জণ্মের সময়ঃ

  • অপরিপক্বতা
  • প্রসবের সময় অব্যবস্থাপনা (সাধারণত অপ্রশিক্ষিত কোন কমীর দ্বারা)
  • প্রসবের সময় সঠিক ভাবে যন্ত্রপাতি ব্যবহার না করা হলে ৷
  • মাথায় আঘাত
  • প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের অভাব

জণ্মের পরেঃ

  • মাথায় আঘাত প্রাপ্ত হলে
  • প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের অভাব
  • দূর্ঘটনা
  • উচ্চ মাত্রার জ্বর
  • বিষক্রিয়া
  • মস্তিষ্কেও কিছু কিছু ইনফেকশন, রোগ এবং টিউমার

সাধারণত উপরিউক্ত কারণে এইসব প্রতিবন্ধী ছেলে মেয়ে হয়ে থাকে ৷

তথ্যসূত্র

  1. "প্রতিবন্ধিতা - বাংলাপিডিয়া"bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১৫
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.