পিলখানা
পিলখানা ঢাকা শহরের একটি স্থান। "" পিলখানা "" শব্দটির, অর্থ হাতির আস্তাবল। পুর্বে জায়গাটি হাতি রাখার স্থান হিসেবে ব্যবহৃত হতো। বর্তমানে এটি বিজিবির সদর দপ্তর হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
পিলখানা | |
---|---|
![]() | |
![]() ![]() পিলখানা | |
স্থানাঙ্ক: ২২°৩৪′ উত্তর ৯০°২৫′ পূর্ব ![]() | |
দেশ | ![]() |
বিভাগ | ঢাকা বিভাগ |
জেলা | ঢাকা জেলা |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
ইতিহাস
মোঘল ও ব্রিটিশ পিরিয়ডে ঢাকার প্রশাসনে “খেদা” বলে একটা বিশেষ বিভাগ ছিল। এই “খেদা বিভাগ” এর কাজ ছিল পার্বত্য চট্টগ্রাম হতে বন্য হাতি ধরে এনে পোষ মানানো ও প্রশিক্ষন প্রদান করা। হাতি ধরার প্রধান কৌশল ছিল কুনকি বা পোষা হস্তিনী দ্বারা বন্য হাতিকে খেদিয়ে নিয়ে আসা। এই সব পুরুষ হাতি গুলোকে খেদিয়ে যে জায়গায় এনে রাখা হত তা পিলখানা নামে পরিচিত ( বর্তমানেও সেই নাম রয়ে গেছে)।পিলখানার এই হাতিগুলোর সামরিক ভূমিকা ছিল অনন্য। ১৮৬০ এবং ১৮৭০ এর দশকে এই হাতিগুলোকে প্রায়ই পাহাড়ী উপজাতি দমন অভিযানে প্রেরিত হত।তাছাড়া উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের যাতায়াতের বাহন হিসেবে এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির আগমনে (যেমন ভাইসরয় বা লেফটেন্যান্ট গভর্নরের পরিদর্শনের সময়) এই হাতিদের দিয়ে প্যারেড ও নানা ধরনের খেলাধুলা ও প্রদর্শনী হত।ঢাকার আশেপাশের জমিদাররাও তাদের ব্যক্তিগত সংগ্রহের হাতিগুলোকে অর্থের বিনিময়ে পিলখানায় পোষ মানানো ও প্রশিক্ষনের জন্য পাঠাতেন। পিলখানার এই হাতিগুলোর দেখভালের জন্য ১৮৮১ সালে ঢাকার খেদা বিভাগে একজন সুপারিন্টেন্ডেন্ট, একজন হেড এসিস্ট্যান্ট, দুইজন ভেটেরিনারি সার্জন, তিনজন ক্লার্ক, একজন পশু হিসাবকারী এবং বেশ কয়েকজন মাহুত নিযুক্ত ছিল। উনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে এই হাতিগুলোকে রমনা অঞ্চলে চারনের জন্য নিয়ে যাওয়া হত। হাতি চলাচলের কারনে রাস্তাঘাটের যে ক্ষয়ক্ষতি ও উপদ্রব সৃষ্টি হতো সেই সম্পর্কে জনগন নিয়মিত কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানাতো। এইসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে ১৮৬৪ সালে মিউনিসিপ্যালিটি প্রতিষ্ঠার পর কর্তৃপক্ষ ঢাকার উত্তরাঞ্চলের প্রান্তিক এলাকা দিয়ে রমনায় যাওয়ার একটি আলাদা রাস্তা তৈরী করে যার নামকরণ করা হয় “এলিফ্যান্ট রোড”। নিউমার্কেট এলাকা থেকে রমনা পর্যন্ত এলিফ্যান্ট রোড আজও বিদ্যমান।
তথ্যসূত্র
ঢাকা ইতিহাস ও নগর জীবন (১৮৪০ – ১৯২১) – শরীফ উদ্দিন আহমেদ