পারাকাস সংস্কৃতি

পারাকাস সংস্কৃতি দক্ষিণ আমেরিকার একটি প্রাচীন সংস্কৃতি। বর্তমান পেরুর পশ্চিমে দীর্ঘ প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলের দক্ষিণ অংশে পারাকাস উপদ্বীপ সংলগ্ন ইকা অঞ্চলে মোটামুটি খ্রিস্টপূর্ব ৯০০ থেকে ১০০ অব্দের মধ্যে বিকশিত যে সংস্কৃতির নজির পাওয়া যায়, তাই ঐতিহাসিকদের কাছে পারাকাস সংস্কৃতি নামে পরিচিত। পারাকাস উপদ্বীপে প্রাপ্ত ধ্বংসাবশেষগুলো থেকেই এই সংস্কৃতির মানুষের সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি জানতে পারা গেছে। ১৯২০'র দশকে বিখ্যাত পেরুভীয় প্রত্নতত্ত্ববিদ হুলিও তেলিও প্রথম এই সংস্কৃতির বিষয়ে অনুসন্ধান চালান।[1] বড় বড় কবরস্থানে একসাথে অনেক মৃতদেহর সৎকার করা, মৃতদেহকে মমি করে রাখা, জলসেচের জন্য কাটা খালের বিন্যাস, সোনা পিটিয়ে তৈরি অলঙ্কার ও মুখোশ, অবসিডিয়ান ছুরি, মৃৎপাত্র এবং উন্নত রঙীন ও জটিল বয়নশিল্প এই সংস্কৃতির বিশেষ বৈশিষ্ট্য।[2]

পারাকাস বয়নশিল্পের নমুনা

ইকা উপত্যকা অঞ্চলে পারাকাস সংস্কৃতির মানুষদের বসবাস কালেই যতদূর সম্ভব উত্তর থেকে খ্রিস্টপূর্ব ১৫০ অব্দ নাগাদ এক নতুন সংস্কৃতির মানুষদের ঐ উপত্যকায় আগমণ ঘটে। এরপর অন্তত এক প্রজন্ম বা তার কিছু বেশি সময়কাল পারাকাস উপদ্বীপ ও ইকা উপত্যকা, দুই অঞ্চলেই এই দুই সংস্কৃতির মানুষই পাশাপাশি বসবাস করতে থাকে। এই নতুন সংস্কৃতির মানুষদের টোপারা বলে অভিহিত করা হয়। পারাকাসটোপারা সংস্কৃতির মধ্যে মিশ্রণের ফলেই পরবর্তী নাজকা সংস্কৃতির উদ্ভব ঘটে। পারাকাসদের সুক্ষ বয়নশিল্প ও মৃৎশিল্পের দক্ষতা এই নতুন সংস্কৃতিতেও গৃহীত হয়। যদিও পারাকাসদের বয়নশিল্পের যা কিছু নিদর্শন শুষ্ক উপকূল অঞ্চল থেকেই বেশি পাওয়া গেছে, সাম্প্রতিক গবেষণায় যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে যে এই সংস্কৃতির মানুষদের আন্দিজ পর্বতের উচ্চভূমিতেও যাতায়াত ছিল। সেখানেও তারা বসতি স্থাপনও করেছিল।

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. Burger, Richard L. (2009). The life and writings of Julio C. Tello: America's first indigenous archaeologist. Iowa: University of Iowa Press. আইএসবিএন ৯৭৮-১-৫৮৭২৯-৭৮৩-০. পৃঃ - ১, ২৮, ৩৭ - ৩৮।
  2. Paracas textile. The British Museum. সংগৃহীত ১৬ জুলাই, ২০১৫।
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.