পশু অধিকার
পশু-পাখি প্রকৃতির অন্যতম উপাদান। মানব সমাজে যেমন ভালোভাবে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে তেমনি রয়েছে পশুপাখিদের। ১৮২৪ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটেনে একটি সংগঠন প্রাণীদের অধিকার বিষয়ে সোচ্চার হয়। ধীরে ধীরে তাদের চিন্তা-চেতনা ছড়িয়ে পড়তে থাকে বিভিন্ন দেশে। বলা যায়, সেসময় থেকেই সভ্য দুনিয়া পশু-পাখির প্রতি সহনশীলতা প্রদর্শনে মনোযোগী হয়েছে। পরবর্তীতে আরো কিছু সংগঠন প্রাণিজগতের অধিকার আন্দোলনে যোগ দেয়। তবে তাদের কার্যক্রম ছিল শুধুমাত্র সচেতনতামূলক।
এই পৃথিবীতে মানুষের পরেই প্রাণিজগতের স্থান। বিশ্বের প্রতিটি প্রাণীই একটি জীবনচক্রে বসবাস করে।প্রায় প্রতিটি প্রাণই জীবন ধারণের জন্য অন্য আরেকটি প্রাণের উপর নির্ভরশীল। এটাকে বলে উদ্ভিদ ও প্রাণীর জীবনচক্র। জীবনধারণের জন্য সাপ ব্যাঙ খায়, আবার ব্যাঙ পোকামাকড় খায়, বাজপাখি আবার সাপ খায়। এটা প্রকৃতির নিয়ম। প্রকৃতিতে ভারসাম্য আনার জন্যই এটা জরুরি। শত শত বছর ধরে এ নিয়ম চলে আসছে। এটা একটা সাইক্লিক অর্ডার, একটা চক্র।
পশুপ্রেমী সংগঠন ও কর্মী থাকা সত্বেও প্রতি নিয়ত চলছে পশুদের উপর নির্মম অত্যাচার। দিন দিন পশুদের উপর নির্মমতা বেড়েই চলছে।
পশুদের উপর নির্মমতা
- বর্তমান বিশ্বব্যাপী পশুদের বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে গিয়ে এবং অধিক লাভের আশায় তাদের ওপর নির্মমতা চালানো হয়।
- ডেইরি খামারে বেশি বেশি দুধ উৎপাদনের জন্য গরুর ওপর নির্মমতা চালানো হয়।
- পোল্ট্রি ফার্মে বেশি হাঁস মুরগি ও ডিম উৎপাদনের জন্য নির্মমতা চালানো হয়।
- ফার্মিংয়ের নাম করে প্রতিবছর যে লাখ লাখ পশুকে হত্যা করা হয়।
- বনজঙ্গল কেটে বন্য পশুদের হত্যা করা হয়।
পশু অধিকার রক্ষায় ধর্ম
সকল ধর্মেই পশু-পাখির অধিকারের কথা বলা হয়েছে। শান্তি ও মানবতার ধর্ম ইসলামও এ বিষয়ে প্রচুর দিকনির্দেশনা দিয়েছে। অযথা কোনো পশুকে হত্যা বা উচ্ছেদ করতে নিষেধ করেছে। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) জীব-জন্তুকে সংরক্ষণের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি জীব-জানোয়ারকে লক্ষ্য বানিয়ে তার দিকে তীর নিক্ষেপ করতে নিষেধ করেছেন। হিন্দু ধর্মে, পশু যারা সংখ্যায় কম তাদের বলিতে শাস্তির বিধানও দেওয়া হয়েছে।