পল্লী উন্নয়ন

পল্লী উন্নয়ন বলতে সাধারণতঃ জীবন ও অর্থনৈতিক মান উন্নয়নের প্রক্রিয়াকে বুঝানো হয় যা পৃথক ও বিক্ষিপ্ত জনবহুল এলাকার সাথে পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত।[1] প্রচলিত ধারায় পল্লী উন্নয়ন কৃষি ও বনের ন্যায় প্রাকৃতিক সম্পদকে ঘিরে কেন্দ্রীভূত হয়েছে। কিন্তু বৈশ্বিক উৎপাদন ব্যবস্থা ও শহরাঞ্চলের উত্তরোত্তর পরিবর্তনের ফলে গ্রাম্য এলাকার বৈশিষ্ট্যাবলী দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। সম্পদের বিচ্ছুরণ ও অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কৃষিজ সম্পদের পরিবর্তে পর্যটন, উৎপাদক এবং বিনোদন ব্যবস্থা স্থলাভিষিক্ত হয়েছে।[2] গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের ধারায় সম্পৃক্ততার ফলে উন্নয়নের লক্ষ্যস্থলকে বৃহৎ দৃষ্টিতে প্রসারণ ঘটানোয় কৃষি অথবা প্রাকৃতিক সম্পদভিত্তিক ব্যবসার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষা, উদ্যোক্তা, বাহ্যিক অবকাঠামো ও সামাজিক অবকাঠামো গ্রাম্য এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।[3] এছাড়াও পল্লী উন্নয়নের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হিসেবে রয়েছে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরিকল্পনা।[4] বিপরীতক্রমে শহুরে এলাকার সাথে অনেক বিষয়ে মিল থাকলেও গ্রাম্য এলাকার সাথে একে-অপরের পার্থক্য বিশাল ও ব্যাপক। এ প্রেক্ষিতে পল্লী উন্নয়নের বিভিন্ন কৌশল ও রূপরেখা বিশ্বব্যাপী প্রচলিত রয়েছে।

উন্নয়ন কৌশল

পল্লী এলাকার সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ওপর নির্ভর করে পল্লী উন্নয়ন কৌশল গ্রহণ করা হয়ে থাকে।[5] সচরাচর পল্লী উন্নয়ন পরিকল্পনা স্থানীয় অথবা আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষ, আঞ্চলিক উন্নয়ন সংস্থা, বেসরকারী সংস্থা, সরকার ব্যবস্থা অথবা আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংগঠনের মাধ্যমে শীর্ষ থেকে নিম্ন পর্যায় পর্যন্ত প্রয়োগ করা হয়। তারপরও স্থানীয় জনসাধারণ উন্নয়নের ধারায় সম্পৃক্ততার লক্ষ্যে নিজস্ব পরিকল্পনাও গ্রহণ করতে পারে। তবে এ সংজ্ঞাটি উন্নয়নশীল দেশের জন্য প্রযোজ্য না-ও হতে পারে। তবুও অনেক উন্নয়নশীল দেশসমূহ পল্লী উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণে বেশ সক্রিয়। গ্রামীণ সরকার নীতিতে পল্লী উন্নয়নের প্রধান উৎস হচ্ছে অনুন্নত গ্রামগুলোকে উন্নয়নের ধারায় সম্পৃক্ত করা।

পল্লী উন্নয়নের উদ্দেশ্যাবলী হিসেবে গ্রামীণ জীবনধারার সাথে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর উন্নয়নকে সম্পৃক্ত করার পথ খোঁজা ও গ্রামীণ এলাকায় অবস্থান করে মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করা। বহিরাগত কোন ব্যক্ত খুব সহজেই এলাকার অবস্থা, সংস্কৃতি, ভাষা ও অন্যান্য অতি প্রচলতি বিষয়বস্তুর সাথে নিজের অবস্থান মেলে ধরতে পারেন না। কিন্তু সাধারণ মানুষেরা গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে তাদের উপযোগী কৌশল গ্রহণে খুব সহজেই সম্পৃক্ত হতে পারে। নেপাল, ভারত, বাংলাদেশের ন্যায় উন্নয়নশীল দেশসমূহে গৃহীত সমন্বিত উন্নয়ন কৌশল নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষিত হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে অনেক কলা-কৌশল ও চিন্তাধারা পল্লী উন্নয়নে ব্যবহৃত হয়েছে।

তথ্যসূত্র

  1. Moseley, Malcolm J. (২০০৩)। Rural development : principles and practice (1. publ. সংস্করণ)। London [u.a.]: SAGE। পৃষ্ঠা 5। আইএসবিএন 0-7619-4766-3।
  2. Ward, Neil (১ ডিসেম্বর ২০০৯)। "Placing the Rural in Regional Development"। Regional Studies43 (10): 1237–1244। doi:10.1080/00343400903234696 অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য)
  3. Rural development research : a foundation for policy (1. publ. সংস্করণ)। Westport, Conn. [u.a.]: Greenwood Press। ১৯৯৬। আইএসবিএন 0-313-29726-6। Authors list-এ |প্রথমাংশ1= এর |শেষাংশ1= নেই (সাহায্য)
  4. Moseley, Malcolm J. (২০০৩)। Rural development : principles and practice (1. publ. সংস্করণ)। London [u.a.]: SAGE। পৃষ্ঠা 7। আইএসবিএন 0-7619-4766-3।
  5. Chigbu, U.E. (2012). Village Renewal as an Instrument of Rural Development: Evidence from Weyarn, Germany. Community Development, Vol. 43 (2), pp. 209-224. http://www.tandfonline.com/doi/abs/10.1080/15575330.2011.575231#preview

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.