পরেশ বড়ুয়া

পরেশ বড়ুয়া হলেন একজন রাজনৈতিক কর্মী, গেরিলা নেতা এবং ভারতের আসাম রাজ্যের স্বাধীনতাকামী সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অফ আসামের (উলফা) সামরিক শাখার প্রধান ও ভাইস চেয়ারম্যান।[1] তিনি তার মিত্রদের কাছে পরেশ অসম নামেও পরিচিত।[2] এছাড়াও তার আরো কয়েকটি ছদ্মনাম রয়েছে, কামরুজ্জামান খান, নুরুজ্জামান ও জামান ভাই।[3] উলফা দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের কাছ থেকে আসামের স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র সংগ্রাম চালিয়ে আসছে।

পরেশ বড়ুয়া
জন্ম (1957-05-01) ১ মে ১৯৫৭
জেরাইচাকলি ভারাইগাঁও,
চাবুয়া, ডিব্রুগড়,
আসাম, ভারত
অন্যান্য নামকামরুজ্জামান খান
নুরুজ্জামান
পাবন বড়ুয়া
পরেশ অসম
প্রদীপ
জামান ভাই
পরিচিতির কারণউলফার ভাইস-চেয়ারপার্সন ও সামরিক শাখার প্রধান
অপরাধীর অবস্থাওয়ান্টেড
দাম্পত্য সঙ্গীববি ভূয়ান বড়ুয়া
পিতা-মাতাদ্বিজেন বড়ুয়া (পিতা)
মিলিকি বড়ুয়া (মাতা)
আক্রমণের উদ্দেশ্যআসামের সার্বভৌমত্ব

১৯৯১ সালে পরেশ ভারত থেকে বাংলাদেশে চলে আসেন এবং ৩০শে জানুয়ারি ২০১৪ সালে বাংলাদেশের একটি আদালতে তিনি দোষী সাবস্থ্য হন। বিচারে তাকে দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি পলাতক রয়েছেন।

প্রারম্ভিক জীবন ও পরিবার

পরেশ বড়ুয়া ১৯৫৭ সালে ভারতের আসামের জেরাইচাকলি ভারাইগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। যুবক বয়সে তিনি ফুটবল খেলোয়াড় ছিলেন। প্রথমে তিনি ডিব্রুগড় জেলার জন্য ও পরবর্তীকালে ডিব্রুগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ফুটবল খেলতেন। পরবর্তীতে তিনি রেলওয়েতে কাজ করা শুরু করেন এবং সেখানে ১৯৭৮ সাল থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত কাজ করেন। তিনি দিবরাগার রেলওয়ে ফুটবল টিমে ফুল-ব্যাকার হিসেবে খেলতেন। তিনি কিছু সময় দুলিয়াজানে ওয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেডেও কাজ করেছেন। তিনি ববি ভূয়ান বড়ুয়ার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন[4] এবং তাদের দুটি সন্তান রয়েছে; তাহসিম খান ও আকাশ খান।[3] অন্য একটি সূত্র অনুসারে তার বড় ছেলের নাম তাহসান অঙ্কুর খান সুনলে।[4]

২০১০ সালের ডিসেম্বরে বড়ুয়া ইন্দু-এশিয়ান নিউজ সার্ভিসকে করা এক ই-মেইলে বলেন তার বড় ছেলেকে (১৯) বাংলাদেশে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।[5] তিনি আরো দাবি করেন, তার পরিবারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে ও তাকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করতেই তার ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে উলফার পক্ষ থেকে বলা হয়, পরেশ বড়ুয়ার ছেলেকে অপহরণকারীরা মারাত্বকভাবে পিটিয়ে আহত করেছে এবং তার পিতার অবস্থান, আয় ও বাণিজ্য সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করেছে কিন্তু কোন রকম সাহায্য না পেয়ে তাকে ছেড়ে দিয়েছে।[6] সংস্থাটি পরবর্তীতে আরো বলে, বড়ুয়ার ছেলে তার অপহরণ সম্পর্কে আতঙ্কগ্রস্থ ছিল।[7] ই-মেইলে বড়ুয়া আরো লিখেন,

আমার পুত্র আমার জনগণের চেয়ে বড় বা গুরত্বপূর্ণ নয় বা যে কারণে আমরা লড়াই করছি। কেউ আমাকে বা আমার পরিবারকে আমার ছেলের অপহরণের জন্য দুর্বল করতে পারবে না এবং আমরা এ জন্য আমার ছেলেকে হারাতেও রাজি আছি।[5]

টাইমস অফ আসাম দাবি করে, ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সম্ভবত সুনলের মাধ্যমে বড়ুয়ার অবস্থান শনাক্তের চেষ্টা করছে। পত্রিকা আরো দাবি করে ২০১২ সালের প্রথম দিকে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সুনলের কিছু আলোকচিত্র ধারণ করতে সমর্থ হয়।[4] ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব বড়ুয়ার পরিবারের প্রতি শক্ত মনোভাব প্রকাশ করেছে এবং তাদের উগ্র মনোভাবের কারণে তারা আর ভারতে ফিরতে পারবে না। পরেশ বড়ুয়ার একজন সহকারী বলেন, অরবিন্দ রাজখোয়া তার ও অনুপ চেটিয়ার পরিবারকে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশে প্রতিনিধি পাঠিয়েছেন।[4]

তথ্যসূত্র

  1. "Paresh Baruah faction now called Ulfa-Independent"The Times of India। Guwahati। ১ মে ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১৩
  2. "Paresh Baruah's Facebook profile is fake: Ulfa"Hindustan Times। Guwahati। Indo-Asian News Service। ১৯ মার্চ ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ৩ নভেম্বর ২০১৩
  3. M Rama Rao (২৩ জানুয়ারি ২০০৭)। "India: Tackling the ULFA Monster"Asian Tribune। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০১৩
  4. "Family of Paresh Baruah isn't interested to return"Times of Assam। ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ৪ ডিসেম্বর ২০১৩
  5. "Son kidnapped to force my surrender: ULFA chief"The New Indian Express। Guwahati। Indo-Asian News Service। ২৩ ডিসেম্বর ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ৪ নভেম্বর ২০১৩
  6. Sushanta Talukdar (২৬ ডিসেম্বর ২০১০)। "ULFA claims clues to Barua son's kidnappers"The Hindu। Guwahati। সংগ্রহের তারিখ ৪ নভেম্বর ২০১৩
  7. "Paresh Barua's son tortured before release: ULFA"Zee News। Shillong। সংগ্রহের তারিখ ৪ নভেম্বর ২০১৩

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.