পরীক্ষণ মনোবিজ্ঞান
পরীক্ষণ মনোবিজ্ঞান হল মনোবিজ্ঞানের এমন একটি শাখা যেখানে পরীক্ষণ পদ্ধতির প্রয়োগের মাধ্যমে মানুষ এবং প্রাণীর আচরণ সম্পর্কে প্রাপ্ত তথ্যাবলিকে সুসংবদ্ধভাবে সন্নিবিষ্ট করা হয়। অর্থাৎ পরীক্ষণ মনোবিজ্ঞান হল পরীক্ষণ পদ্ধতির মাধ্যমে প্রাপ্ত আচরণ সম্পর্কিত তথ্য ও তত্ত্বের সমাহার। [1]
সংজ্ঞা
ক্রাইডার ও সঙ্গীদের মতে, "পরীক্ষণ মনোবিজ্ঞানের বিশেষত্ব হল যে, এটি মৌলিক মনোবৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া যেমন-সংবেদন ও প্রত্যক্ষণ, প্রেষণা ও আবেগ, শিক্ষণ, স্মৃতি এবং পরিজ্ঞানকে বিবেচনা করে।" [1]
রডিজার ও সঙ্গীদের মতে, "পরীক্ষণ মনোবিজ্ঞান সেসব ক্ষেত্রকে আওতাভুক্ত করে যেখানে পেশাদারগণ আচরণ ও মানসিক জীবন অনুধ্যানের পরীক্ষণের উপর এককভাবে নির্ভর করেন। এটি মূলত আচরণের জৈবিক ভিত্তি (মনোজীববিজ্ঞান), প্রাণী শিক্ষণ ও আচরণ এবং জ্ঞানীয় প্রক্রিয়াসমূহ (প্রত্যক্ষণ, স্মৃতি, ভাষা, চিন্তন) অনুধ্যান অন্তর্ভুক্ত করে।"
ইতিহাস
মনোবিজ্ঞানের প্রাথমিক অবস্থা ছিল ত্রুটিপূর্ণ। মনোবিজ্ঞানের এ ত্রুটিপূর্ণ অবস্থা দূর করার জন্য মনোবিজ্ঞানকে পরীক্ষণের উপর ভিত্তি করে গড়ে তোলার চেষ্টা শুরু হয়। ১৮৭৫ সালে উইলহেম উন্ড জার্মানির লিপজিগ বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং একই বছরে উইলিয়াম জেমস হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বতন্ত্রভাবে মনোবিজ্ঞানের পরীক্ষাগার স্থাপন করেন। এ পরীক্ষাগারগুলি ছিল ছোট এবং তেমন কোন পরীক্ষা সেখানে সম্পাদিত হয় নি। অতঃপর ১৮৭৯ সালে থেকে উইলহেম উন্ড কর্তৃক স্থাপিত গবেষণাগারে নিয়মমাফিক মনোবিজ্ঞানের গবেষণা শুরু হয়। তাই উইলহেম উন্ডকে পরীক্ষণ মনোবিজ্ঞানের জনক বলা হয়।[1]
বিষয়বস্তু
আধুনিক মনোবিজ্ঞানের প্রায় সব বিষয়বস্তুই পরীক্ষণ মনোবিজ্ঞানের অন্তর্ভুক্ত। পরীক্ষণ মনোবিজ্ঞানে প্রাণীর আচরণগত দিক, মানসিক প্রক্রিয়া, শারীরবৃত্তীয় দিক, ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব বিকাশে বংশগতি ও পরিবেশের প্রভাব ও তুলনামূলক বিবেচনাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণা পরিচালিত হয়। এছাড়াও শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যবসা ও কর্মস্থল এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানও পরীক্ষণ মনোবিজ্ঞানের বিষয়বস্তুর অন্তর্ভুক্ত।[1]
পরীক্ষণ মনোবিজ্ঞানের পরিধি
- স্নাতক মনোবিজ্ঞান, প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র, মোঃ আমিনুল হক, প্রথম প্রকাশ : জানুয়ারি, ২০১৫