পপি ফুল
আফিম বা পপি (ইংরেজি: Opium poppy) (বৈজ্ঞানিক নাম: Papaver somniferum) থেকে আফিম এটি তৈরি হয়। সব পপি ফুল থেকে মাদক দ্রব্য তৈরি হয় না, পপি ফুলের আবার অনেক নিরীহ প্রজাতি রয়েছে যা বাগানে শোভা পায়। নিরীহ দর্শন এই গাছটি একটি মাদক দ্রব্যের গাছ। ফল যখন পরিপক্ব হয় তখন ব্লেড দিয়ে ফলে গায়ে গভীর করে আঁচড় দেওয়া হয়। ফলে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা পর এর ফল থেকে কষ বের হয় এবং চাষীরা তা সংগ্রহ করে এটাই হলো আফিমের কাঁচামাল। এর পর বিভিন্ন রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় অন্যান্য উপজাত জৈব রাসায়নিক দ্রব্য বানানো হয়। এটি থেকে হিরোইন ছাড়াও মরফিন পাওয়া যায়, যা ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।[1] ফুল সাদা, লাল, গোলাপি, হলুদ। ফুলের পাপড়িগুলো রেশমের মতো কোমল। [2]
পপি ফুল Opium Poppy | |
---|---|
![]() | |
Opium Poppy | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Plantae |
(শ্রেণীবিহীন): | Angiosperms |
(শ্রেণীবিহীন): | Eudicots |
বর্গ: | Ranunculales |
পরিবার: | Papaveraceae |
গণ: | Papaver |
প্রজাতি: | P. somniferum |
দ্বিপদী নাম | |
Papaver somniferum L.[1] | |
অলংকরণ
একই সাথে বিখ্যাত এবং কুখ্যাত একটি গাছ। সুন্দর পপি ফুলের পাশাপাশি এ গাছ থেকে যেমন ওষুধ তৈরির নানা উপাদান পাওয়া যায়, তেমনি এ গাছের ফল থেকেই তৈরি হয় সর্বনাশা মাদক আফিম। পপি গাছের কাঁচা ফলের খোসা কাটলে যে সাদা রস পাওয়া যায় তা ২৪ ঘণ্টা রোদে শুকালে পাওয়া যায় আফিম। এর রং তখন হয়ে যায় কালো বা কালচে বেগুনী। আবার পপি থেকে রস সংগ্রহ করে পার্শবর্তী দেশ ভারত কিংবা মায়ানমারে নিয়ে কৃত্রিম পন্থায় হিরোইন উৎপাদন করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশের মাটি ও আবহাওয়া পপি চাষে খুব উপযোগী। বর্ষজীবী শীতকালীন ফুল হিসেবে পপির জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। ভালো ফুলের জন্য বীজ আগে টব বা বীজতলায় বপন করে পরে চারা গাছ মাটিতে রোপণ করা ভালো। সাধারণত অক্টোবরে চারা রোপণ করা হয়। দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে ফুল ধরা শুরু করে।[3]
.jpg)
বর্ণনা
গাছ ৬০ সে.মি.পর্যন্ত উচ্চতা পায়। দীর্ঘ ১০-২০ সে.মি. দণ্ডের আগায় পেয়ালা আকৃতির ফুল ফোটে। পাঁপড়ি ৪ টি। পাতলা গড়ন। ফুলের পরিধি ৫-১০ সে.মি. পাঁপড়ি স্পর্শ করলে রেশমের কাপড়ের মত অনুভূতি হয়। বহু পুংকেশর যুক্ত। অদ্ভুত সুন্দর ফুলগুলো। ফুল, পাতা ও কলি মিলে এক অদ্ভুত সমন্বয়। পাপড়ির গোরায় অনেক সময় কাল দাগ দেখা যায়। ফুলের আশেপাশে মৌমাছি ভীড় করে। গাছের সারা গা’ তীক্ষ্ণ লোমাবৃত, পাতা ভূ-সংলগ্ন ও দীর্ঘ।পাতা ফিকে সবুজ রঙের এবং বেশ সুন্দর আকৃতির, অর্থাৎ ফলক গভীরভাবে খণ্ডিত। খণ্ডসমূহ প্রায় আলাদা ও বিপরীত। পক্ষল বলা যায়। গাছের নিচের দিকের পাতা ছোট ও উপরে ক্রমাগত বড় আকারের হয়। ফল গোলাকৃতি। ভেতরে দানা দানা বীজ। একটি গাছ হতে ১৭,০০০ বীজ পাওয়া যায়। বীজের মাধম্যে বংশ বিস্তার হয়।[4]
ভৌগলিক অবস্থা
পপি গাছ এর আদি নিবাস ইউরোপ।[5]
ব্যবহার
অপরাধের জগত হিসেবে শহরকেই আমরা বেছে নেই, বেছে নেওয়াটা ভুল না হলেও যদি শহরকে শুধু অপরাধের উৎপত্তিস্থল মনে করি তাহলে ভুল হবে। বাংলাদেশেরর প্রত্যন্ত অঞ্চল বান্দরবান পাহাড়ী এলাকা। সেখানে এমন কিছু পাহাড়ি দুর্গম জায়গা রয়েছে যেখানে পায়ে হেটে কিংবা স্বাভাবিক কোন যানবাহনের করে যাওয়া সম্ভব নয়, তবে যেতে চাইলে হেলিকাপ্টারে করে যাওয়া যেতে পারে, তবে নিরাপত্তার প্রশ্ন রয়েছে। এমন দুর্গম স্থানে মায়নমার থেকে বিভিন্ন সন্ত্রসী ও চরমপন্থি সংগঠনের লোকেরা বাংলাদেশের উপজাতীদের ব্যবহার করে পপি চাষ করে থাকে।[6]
তথ্যসূত্র
- Linnaeus, Carl von (১৭৫৩)। Species Plantarum। Laurentius Salvius। পৃষ্ঠা 508।
- Welle (www.dw.com), Deutsche। "শহিদদের স্মরণে পপি ফুল | DW | 17.11.2014"। DW.COM। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-০২।
- "ফুলের বনে মৌমাছি"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-০২।
- "'আফিমখোর' পাখিদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ চাষীরা | বিশ্ব সংবাদ"। ittefaq। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-০২।
- "'আফিমখোর' পাখির অত্যাচারে অতিষ্ঠ কৃষক" (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-০৩-০৬। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-০২।
- "কৃষকদের সর্বনাশ করছে 'আফিমখোর' টিয়া পাখি (ভিডিও)"। Dhaka Tribune Bangla। ২০১৯-০৩-০৬। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-০২।
বহিঃসংযোগ
![]() |
উইকিপ্রজাতিতে-এ বিষয় সম্পর্কিত তথ্যে রয়েছে: Papaver somniferum |
![]() |
উইকিমিডিয়া কমন্সে পপি ফুল সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে। |