নূর কুতুব আলম

নূর কুতুব আলম (মৃত্যু: আনুমানিক ৮১৮ হিজরি/১৪১৫ খ্রিষ্টাব্দ) ছিলেন মধ্যযুগে বাংলার একজন দরবেশ। পান্ডুয়ার পীর আউলিয়াদের মধ্যে তিনি সবচেয়ে বেশি মর্যাদার অধিকারী ছিলেন। তার পিতা শেখ আলাউল হকও একজন পীর ছিলেন। পিতার মত নূর কুতুব আলম ছিলেন চিশতিয়া তরিকার পীর। [1]

রাজনৈতিক ভূমিকা

রাজা গণেশের ক্ষমতাদখলের পর বাংলার মুসলিমদের উপর নির্যাতন শুরু হলে নূর কুতুব আলম জৌনপুরের সুলতান ইবরাহিম শর্কীকে বাংলা আক্রমণের অনুরোধ জানান। অনুরোধে সাড়া দিয়ে ইবরাহিম শর্কী বাংলার দিকে অগ্রসর হন। এর ফলে রাজা গণেশ তাকে অনুরোধ করেন যাতে ইবরাহিম শর্কীকে ফিরে যেতে বলা হয়। নূর কুতুব আলম অমুসলিমের পক্ষে মুসলিম সুলতানকে অনুরোধে অপারগতা প্রকাশ করেন এবং গণেশকে ইসলাম গ্রহণের শর্ত দেন। তবে গণেশ ইসলাম করেননি। তার বদলে তার পুত্র যদু ইসলাম গ্রহণ করে জালালউদ্দিন মুহাম্মদ নাম গ্রহণ করে মসনদে বসেন। এরপর ইবরাহিম শর্কী ফিরে যান।[1]

ব্যক্তিজীবন

নূর কুতুব আলম সব ধরনের কায়িক শ্রম করতেন। দরগায় আগত ফকিরদের সেবা তিনি ব্যক্তিগতভাবে করতেন। তার পুত্র শেখ রাফকাতউদ্দিন ও শেখ আনোয়ার তার কাছে আধ্যাত্মিক শিক্ষা লাভ করেছিলেন। শেখ রাফকাতউদ্দিনের পুত্র শেখ জাহিদও দরবেশ হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। শেখ হুসামউদ্দিন মানিকপুরী ছিলেন নূর কুতুব আলমের অন্যতম প্রধান মুরিদ।[1]

মৃত্যু

নূর কুতুব আলম আনুমানিক ৮১৮ হিজরি বা ১৪১৫ খ্রিষ্টাব্দে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুর পর তাকে পান্ডুয়ার শাশ হাজারি দরগায় দাফন করা হয়। তার পিতাকেও এখানে দাফন করা হয়েছিল। নূর কুতুব আলমের অনুসারীরা কয়েক শতাব্দী ধরে বাংলার মুসলিমদের জীবনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে গিয়েছেন।[1]

তার দরগা সংলগ্ন সরাইখানা ও মাদ্রাসার জন্য সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ বেশ কয়েকটি গ্রাম ওয়াকফ করেছিলেন। জেয়ারতের উদ্দেশ্যে সুলতান ব্যক্তিগতভাবে বছরে একবার রাজধানী একডালা থেকে পান্ডুয়া আসতেন।[1]

তথ্যসূত্র

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.