নাগরহোল জাতীয় উদ্যান
নাগরহোল জাতীয় উদ্যান (ইংরেজি: Nagarhole National Park) কর্ণাটকের পশ্চিম প্রান্তের মহীশূর(মাইসোর)এবং কডাগু জেলার সীমাতে পাহাড়ের নীচে অবস্থিত এটি জাতীয় উদ্যান। নাগরহোল অর্থ হৈছে snake river, মানে যে নদী নাগরহোলের মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে সেইটি সাপের মত আঁকা-বাঁকা। নাহরফুটুকী, চিতা বাঘ এবং লেপার্ডের ঘন বসতির জন্য পরে উদ্যানটিকে "ব্যাঘ প্রকল্প" হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল। বাঘ ছাড়া এখানে বিভিন্ন প্রজাতির হরিণ, হাতি, বন্য ময়ূর, বিষাক্ত সাপ, নানা ধরনের পাখি, সোনালী বাঁদর, ভালুক, ঘরিয়াল ইত্যাদি পাওয়া যায়।
নাগরহোল জাতীয় উদ্যান নাগরহোল জাতীয় উদ্যান | |
---|---|
স্থানাঙ্ক: ১২.০১° উত্তর ৭৬.১১° পূর্ব | |
স্থাপিত | ১৯৮৩ |
ইতিহাস
এই বনানিটির বহু প্রবাদ পাওয়া যায়। লক্ষ্মণতীর্থ নামের নদীটিতে সৃষ্টি হয়েছে একটি জলপ্রপাত; আখ্যানে লেখামতে, রাম-লক্ষ্মণ বনবাসে থাকাকালীন এই পাহাড়টিতে কয়েকদিন ছিলেন এবং সীতা দেবীর পিপাসা মেটানোর জন্য এখানে মাটিতে বাণ মেরে এই নদীটির সৃষ্টি করেছিলেন। তারপর নদীটির নাম লক্ষ্মণতীর্থ হয় বলে জানা যায়।
তিনটি সংরক্ষিত বনাঞ্চল আর্কেরি, হাত্গাত এবং নালকেরিকে একত্রিত করে এই নাগরহোল সংরক্ষিত বনাঞ্চল গঠন করা হয়েছিল। ১৯৮৩ সালে নাগরহোল জাতীয় উদ্যানের মর্যাদা পায়। উদ্যানটির ক্ষেত্রফল প্রায় ৬৪৩ বর্গ কিলোমিটার।
ভৌগোলিক বিবরণ
নাগরহোল বনাঞ্চলটি সমতলীয়। ক্ষেত্রফল প্রায় ৬৪৩ বর্গ কিঃমিঃ। বনাঞ্চলটি যেখান থেকে আরম্ভ হয়েছে তার থেকে মূল গেট প্রায় ২৫ কিঃমিঃ দূর, এই দূরত্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীব-জন্তু উপভোগ করা যায় ।মূল গেটের থেকে ১৮কিঃমিঃ ভিতরে আছে এটি সরু জলপ্রপাত, ইরপু। লক্ষ্মণতীর্থ নামে নদীটিতেই সৃষ্টি হয়েছে এই জলপ্রপাতটি।
জলবায়ু
নাগরহোলের জলবায়ু শুষ্ক ;গ্রীষ্ম কালের সর্ব্বোচ তাপমাত্রা প্রায় ৩৫ ডিঃ সেঃ এবং শীতকালের সর্ব্বনিম্ন তাপমাত্রা প্রায় ১২ ডিঃ সেঃ
প্রাণীকুল
- জন্তু: বাঘ, হরিণ, বন্য ময়ূর, হাতি, সোনালী বানর, কেটেলা পহু, ভালুক ইত্যাদি
- পাখি: ময়ূর পক্ষী, বগলী, পেঁচা এবং বিভিন্ন প্রজাতির পরিভ্রমী পাখি
- অন্যান্য: বিভিন্ন প্রজাতির সাপ, ঘরিয়াল, বিষাক্ত কীট-পতঙ্গ ইত্যাদি
পর্যটন
এই অরণ্যর নৈসর্গিক সৌন্দর্য্য এবং সুন্দর পারিপার্শ্বিকতার জন্য প্রকৃতিপ্রেমী এবং ফোটোগ্রাফারদের জন্য অন্যতম পর্যটনস্থল। ওক-ওক গাছের উপস্থিতি এবং কঁহুবা-খাগরির মত জুপুহা গাছের অনুপস্থিতির জন্য জীব-জন্তুর ফোটো তুলতে সুবিধা হয় এবং বেশী depth of field পোতে সহায়তা করে। কম আর্দ্রতা এবং ধুলো-বালিও এইক্ষেত্রে সহায়তা করে৷
এই উদ্যানে পর্য্যটকদের জন্য জীপ এবং বাস সাফারীর ব্যবস্থা আছে৷ জীপ সাফারীর জন্য আগে থেকে বাংগালোর বা মহীশূরে থাকা বন বিভাগের কার্য্যালয়ের থেকে অনুমোদন নেওয়ার প্রয়োজন হয়৷ তারপরে এখানে কম খরচে থাকার সু-ব্যবস্থা আছে।
জানুয়ারীর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত নাগরহোল উপভোগ করার উৎকৃষ্ট সময় বলে জানা যায়।
যাতায়াত ব্যবস্থা
নাগরহোল যাবার জন্য বাস-পথ যথেষ্ট উন্নত। মহীশূর থেকে ইহা প্রায় ৮০ কিঃমিঃ রাস্তা। নাগরহোল বাংগালোর থেকে প্রায় ২৫৫কিঃমিঃ,এবং মহীশূর থেকে প্রায় ৮০কিঃমিঃ হয়।বাংগালোর থেকে ব্যক্তিগত বাহন নতুবা গাড়ী ভাড়া করে গেলে বেশী সুবিধা হয়।
চিত্রাবলী
- নাগরহোল জাতীয় উদ্যানে সোনালী বান্দর
- নাগরহোল জাতীয় উদ্যানে বন্য হাতী
- নাগরহোল জাতীয় উদ্যানে চিতা বাঘ
- নাগরহোল জাতীয় উদ্যানের ভিতরে
আরও দেখুন
- কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যান
- মানা জাতীয় উদ্যান
তথ্য সংগ্রহ
শ্রেণী:ভারতের উদ্যান