নাইজারসরাস

নাইজারসরাস হচ্ছে রেবাকিসৌরিডি গোত্রের ও সাউরোপোডা প্রজাতির এক ধরনের ডাইনোসর যেটির অস্তিত্ব ১১.৫ থেকে ১০.৫ কোটি বছর পূর্বে খড়িময় যুগে পৃথিবীতে বিদ্যমান ছিল। এই ডাইনোসরের ফসিল আবিষ্কৃত হয় মূলত পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারের গেডুফেআউয়া নামক মরুভূমি অঞ্চলে। এই ডাইনোসরের ফসিল নিয়ে বিশদ জানা যায় ১৯৭৬ সালে কিন্তু এর দেহের বাকি অবশিষ্টাংশ পাওয়ার পর ১৯৯৯ সালে এই ডাইনোসরের প্রজাতিকে "নাইজেসৌরাস ট্র্যাকিটি" নামক বৈজ্ঞানিক নাম প্রদান করা। এই ডাইনোসরের প্রজাতিটির নামের আসল অর্থ হলো "নাইজারের সরীসৃপ" আর বৈজ্ঞানিক প্রদান করা হয় মূলত জীবাশ্র্মবিজ্ঞানী ফিলিপ টাকেটের নামানুসারে যিনি প্রথম এই প্রজাতির ডাইনোসরের হদিস পেয়েছিলেন।

নাইজারসরাস
সময়গত পরিসীমা: প্রারম্ভিকবিলম্বিত খড়িময় যুগ ১১.৯–৯.৯কোটি
কা
পা
ক্রি
প্যা
জাপানে পাওয়া অধ্যারূঢ় কঙ্কাল।
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: প্রাণী জগৎ
পর্ব: কর্ডাটা
উপপর্ব: ভার্টিব্রাটা
শ্রেণী: সরোপসিডা
উপশ্রেণী: ডায়াপসিড
অধঃশ্রেণী: আর্কোসরোমর্ফা
মহাবর্গ: ডাইনোসরিয়া *
ওয়েন, ১৮৪২
বর্গ এবং উপবর্গ

সেরেনো এত অল., ১৯৯৯

নাইজারসরাস ৯ মিটার লম্বা (৩০ ফিট), যা সাউরোপোডের সদস্য হিসেবে খুবই ছোট আকৃতির। ওজনে এই ডাইনোসোরটি ছিল ৯ টন যা ওজনে বর্তমান সময়ের হাতির সমান। কিন্তু জীবাশ্মে পাওয়া এর কঙ্কাল মূলত প্রাকৃতিক উপায়ে বায়ুতে পরিপূর্ণ ছিল কিন্তু এর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ছিল সুগঠিত। খাদ্যগ্রহণের জন্য ফেনেস্ট্রা (খুলি এবং ভেরটেব্রেটস্‌ এর সংযোগ স্থান) সহযোগে হাল্কা হাঁড় সমেত এর কঙ্কালতন্ত্র বিশেষভাবে সুগঠিত। ৫০০টি দাঁতসহ নাইজারসরাস ডায়নোসরটির প্রশস্ত মুখ রয়েছে, যা প্রতি ১৪ দিন পর পর প্রতিস্থাপিত হয়। এছাড়া এর চোয়ালে বিশেষ সুরক্ষার জন্য কেরাটিন (এক ধরনের প্রোটিন যা উপকলা কোষকে সুরক্ষা দেয়) নামক প্রোটিন দ্বারা আবৃত। অন্যান্য চতুষ্পদ প্রাণীদের মতো না হয়ে বরং এর দাঁতালো হাঁড়গুলো কঙ্কালের বাকি অংশগুলোর সাথে সামঞ্জস্য রেখে অনুপ্রস্থভাবে আবর্তিত হয়ে থাকে, যাতে করে এর দাঁতগুলো যেন বেশি সম্মুখভাগে অবস্থিত না হয় পরে।

নাইজারসরাসদের নিকটবর্তী সম-গোত্রীয় ডাইনোসররা রেবাকিসৌরিডি পরিবারের অন্তর্ভুক্ত যারা আবার সাউরোপোডা গোত্রের ডাইনোসরদের বৃহৎ-পরিবার ডাইপ্লোডোকোডিয়া অংশভুক্ত। এর মস্তিষ্কের যে অংশ ঘ্রাণ শক্তি সচল রাখে, তা মূলত অনুন্নত, যদিও এর মস্তিষ্কের গঠন তুলনাগত দিক দিয়ে অন্যান্য ডাইনোসর থেকে আলাদা। পাশাপাশি নাইজারসরাসদের মাথা কি নিম্নাভিমুখে ছিল নাকি সাউরোপোডা গোত্রের ডাইনোসরদের মতো আনুভূমিক ছিল, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে। নাইজারসরাসরা নদী অঞ্চলে বসবাস করতো এবং এর খাদ্যাভাসের তালিকার মধ্যে ছিল ফার্ন, অ্যাকুইসিটামসপুষ্পক উদ্ভিদের মতো গাছপালাগুলো। এছাড়া মেরুদণ্ডী প্রাণীদের মধ্যে, যেখানে নাইজারসরাসদের অস্তিত্বের হদিস মিলেছিল, সেই জায়গায় এই ডাইনোসরের জীবাশ্ম ছিল খুব সচরাচর এবং এই ডাইনোসরের স্বভাব অন্যান্য থেরোপোডাক্রোকোডাইলোমোরফসের মতো মহাপ্রাণীয় (মেগাফউনা) গোত্রের প্রাণীদের সাথে ছিল সামঞ্জস্যপূর্ণ।

তথ্যসূত্র

    This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.