নঈম উদ্দিন মুরাদাবাদী
মওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ নঈম-উদ-দীন মুরাদাবাদী, সদর উল-আফাজিল নামেও পরিচিত, বিংশ শতাব্দীর একজন বিচারক, পণ্ডিত, মুফতি, কুরআন ব্যাখ্যাকারী এবং শিক্ষাবিদ ছিলেন। তিনি দর্শন, জ্যামিতি, যুক্তি এবং হাদিসের একজন বিখ্যাত পণ্ডিত ছিলেন। তিনি না'তের স্বীকৃত কবি ছিলেন।[1]
| হুজুর সদরুল আফাযিল আল্লামা মাওলানা হাকিম মুফাসসির পীরজাদা হাফিজ সৈয়দ মুহাম্মদ নঈম-উদ্দিন কাদরী, মুরাদাবাদী (রেহমাতুল রিজওয়ান) | |
|---|---|
| ধর্ম | ইসলাম |
| ব্যক্তিগত | |
| জাতীয়তা | ভারতীয় |
| জন্ম | (২১ সফর ১৩০০ হিজরী) মুরাদাবাদ, ভারত |
| মৃত্যু | ১৩ অক্টোবর ১৯৪৮ (বয়স ৬১) (১৮ জিলহজ্জ ১৩৬৭ হিজরী) মুরাদাবাদ, ভারত |
সমাধিস্থল | মারকাজ আহলে সুন্নাত মাদ্রাসা জামিয়া নাঈমিয়া (মুরাদাবাদ, ভারত) |
| জ্যেষ্ঠ পোস্টিং | |
| খেতাব | সদরুল-আফাযিল |
প্রাথমিক জীবন
তিনি ভারতের মুরাদাবাদে ১লা জানুয়ারী ১৮৮৭ (২১শে সফর, ১৩০০ হিজরি) জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম মাওলানা মু'ঈন আল-দিন। তার পরিবার মূলত ইরানের মাশহাদ থেকে এসেছিলেন। সম্রাট আওরঙ্গজেবের শাসনামলে তারা ইরান থেকে ভারত ভ্রমণ করে, যেখানে তাদের শাসক রাজতন্ত্র দ্বারা ভূমি অনুদান দেওয়া হয়। অবশেষে তাঁরা লাহোর পৌঁছে এবং আবুল হাসানাতের নিকট বসতি স্থাপন করে।
মুরাদাবাদী ৮ বছর বয়সে হাফিজ (কুরআনের মুখস্থকারী) হয়েছিলেন। তিনি তাঁর বাবার সাথে উর্দু ও ফারসি সাহিত্য অধ্যয়ন করেন এবং শাহ ফাদাল আহমদের সাথে দরস-ই নিজামীতে অধ্যয়ন করেন। পরবর্তীতে তিনি শাহ মুহাম্মদ গুল থেকে ধর্মীয় আইন (ইফতা) অর্জন করেন এবং তাঁর কাছে বায়াআত (আনুগত্যের শপথ) হন।
ধর্মীয় কার্যাদি
আল্লামা নঈম উদ্দিন ইসলামি আন্দোলনে অংশ নেন এবং তুরস্কের সুলতানাতকে শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে সংগঠিত খিলাফত কমিটির অংশে ছিলেন, যা অটোমান যুগের শুরু থেকেই ছিল। তিনি ছাত্রদের শেখানো এবং বক্তৃতা দিয়েছেন।
১৯২৪ সালে (১৩৪৩ হিজরী) তিনি মাসিক 'আস-সাওয়াদ-আল-আজম' জারি করেছিলেন এবং দুই জাতি তত্ত্বকে সমর্থন করেছিলেন।
১৯১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ ভারত থেকে পাকিস্তান বিচ্ছেদের পর, মুরাাদাবাদী নিখিল ভারত সুন্নি সম্মেলনের উদ্বোধনকালে একটি বক্তৃতা দেন। তিনি মিন্টো-পার্ক (লাহোর রেজোলিউশন) -এ একটি পৃথক মুসলিম রাষ্ট্রের জন্য প্রস্তাব পাসে অবদান রাখেন। ১৯৪২ সালে অনুষ্ঠিত বানারস সম্মেলনে তিনি প্রধান সংগঠক ছিলেন।[2] [3]
মৃত্যু
একটি বই প্রস্তুত করার সময় মুরাদাবাদী অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং ৬৭ বছর বয়সে (১৮ জিলহজ্জ্ব ১৩৬৭ হিজরী) ইন্তেকাল করেন। মুরাদাবাদে জামিয়া নাঈমিয়ার বামে তাঁর আশ্রয়স্থল দাঁড়িয়ে যা মাজারকে নির্দেশ করে।
কর্ম
তাঁর কর্ম সম্পর্কে পাকিস্তানে বেশ কয়েকটি পিএইচডি থিসিস কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে, শিরোনাম হল "মাওলানা সৈয়দ নঈম উদ-দিন মুরাদাবাদী কি দ্বীনি ও সিয়াসী খিদমত"[4] তাঁর মৃত্যুর সময় তিনি ১৪ টি কাজ রেখেছিলেন এবং "খাজাইন-আল-ইরফান" সহ অনেকগুলি গ্রন্থ রচনা করেছিলেন, যা উর্দুতে আহমদ রেজা খান বেরলভী কর্তৃক কুরআনের অনুবাদ কানজুল ঈমানের তাফসীর (ব্যাখ্যা)। তিনি "রিয়াজ-ই-নাঈম" (আরামদায়ক বাগান) নামে একটি কবিতা সংগ্রহ করেছেন।[5]
মুরাদাবাদী এর সেরা পরিচিত কাজ অন্তর্ভুক্ত:
- তাফসীর খাজাইন-আল-ইরফান
- কিতাব-উল-আকা'ঈদ
- দিওয়ান-এ-উর্দু
- সিরাত-এ-সিহাবাহ
- সাওয়ানেহ কারবালা
- আদাব-উল-আখে
- আল-কালিমাতুল আউলিয়া
- আতইয়াব আল-বয়ান রাদ-এ-তাফভিয়াতুল ঈমান ইসমাইল দেলভীর তাকভিয়াতুল ঈমানের একটি দীর্ঘ খণ্ডন।
- আত-তাহকিকাত লি দাফ' আল- তালবিসাত
তিনি ইমাম আহলে সুন্নাত আহমদ রেজা খান বেরলভী এবং আল্লামা সাঈদ মুহাম্মাদ আলী হোসাইন শাহ আল-কিচাওয়াচীর খলিফা ছিলেন।
ছাত্র
উল্লেখযোগ্য ছাত্র অন্তর্ভুক্ত:
- ইমাম-উল-নাওয়াহ মুফতি মোহাম্মদ আবদুল আজিজ কখান ফতেহপুরী
- মুফতি আহমদ ইয়ার খান নঈমী
- মুফতি মোহাম্মদ আবদুল রশিদ খান ফতেহপুরী
- পীর মুহাম্মদ করম শাহ আল-আজহারী
- Mufti Nasiruddin Ashrafi Na'imi
- সাঈদ মুখতার আশরাফ
- আজমল উল উলামা মুফতি আজমল শাহ কাদেরী রেজভী, সাম্বহালি
- মুফতি মুহাম্মদ হোসাইন নঈমী
- মাওলানা নুর উল্লাহ নঈমী
- মাওলানা উমের নঈমী
- মুফতি মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ নঈমী আশরাফী
তথ্যসূত্র
- "Al Tahqeeqat Syed Naeem Ud Din Muradabadi (r.a)"। scribd.com।
- Adel, Gholamali Haddad; Elmi, Mohammad Jafar; Taromi-Rad, Hassan (৩১ আগস্ট ২০১২)। Muslim Organisations in the Twentieth Century: Selected Entries from Encyclopaedia of the World of Islam। EWI Press – Google Books-এর মাধ্যমে।
- John, Wilson (১ জানুয়ারি ২০০৯)। Pakistan: The Struggle Within। Pearson Education India – Google Books-এর মাধ্যমে।
- "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৭ আগস্ট ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ আগস্ট ২০১৯।
- Raza, Muhammad Shahrukh। "mufassir e quran hazrat mufti naeem ud din muradabadi"। bookslibrary.net।