দ্য সান অলসো রাইজেস
দ্য সান অলসো রাইজেস (ইংরেজি: The Sun Also Rises) হল মার্কিন সাহিত্যিক আর্নেস্ট হেমিংওয়ে রচিত উপন্যাস। এটি ১৯২৬ সালে প্রকাশিত হয়। এতে প্যারিস থেকে পাম্পলোনার সান ফার্মিন উৎসবে ষাঁড়ের দৌড় ও ষাঁড়ের যুদ্ধ দেখতে যাওয়া একদল মার্কিন ও ব্রিটিশ প্রবাসীদের গল্প বিবৃত হয়েছে। প্রকাশিত হওয়ার পর বইটি মিশ্র পর্যালোচনা অর্জন করে। হেমিংওয়ের জীবনীকার জেফ্রি মেয়ার্স লিখেন এই বইটিকে বর্তমান সময়ে "হেমিংওয়ের শ্রেষ্ঠকর্ম" বলে গণ্য করা হয়,[1] এবং হেমিংওয়ে বিষয়ক পণ্ডিত লিন্ডা ওয়েগনার-মার্টিন এটিকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপন্যাস বলে অভিহিত করেন।[2] ১৯২৫ সালের অক্টোবর মাসে স্ক্রিবনার্স উপন্যাসটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রকাশ করে। এক বছর পর জনাথন কেপ ফিয়েস্টা শিরোনামে লন্ডনে উপন্যাসটি প্রকাশ করেন।
প্রকাশনার ইতিহাস
হেমিংওয়ে বনি অ্যান্ড লিভরাইটের সাথে একটি চাল চালেন, যাতে তিনি দ্য সান অলসো রাইজেস উপন্যাসটি স্কিবনার্স থেকে প্রকাশ করতে পারেন। ১৯২৫ সালের ডিসেম্বরে তিনি শেরউড অ্যান্ডারসনকে আক্রমণ করে দ্য টরেন্টস অব স্প্রিং নামক একটি ব্যঙ্গাত্মক উপন্যাসিকা রচনা করেন এবং তাঁর প্রকাশক বনি অ্যান্ড লিভরাইটকে পাঠান। বনি অ্যান্ড লিভরাইট তাদের একজন সর্বোচ্চ বিক্রিত লেখকের বিরুদ্ধে ব্যঙ্গাত্মক রচনায় কষ্ট পায় এবং তাঁর সাথে তিনটি বই প্রকাশের চুক্তি বাতিল করে।[3] এক সপ্তাহের মধ্যে হেমিংওয়ে স্ক্রিবনার্সের সাথে চুক্তিবদ্ধ হন। স্ক্রিবনার্স তাঁর দ্য টরেন্টস অব স্প্রিং ও তাঁর পরবর্তী সকল কাজ প্রকাশ করতে আগ্রহী হয়।[4]
প্রধান বিষয়বস্তু
- প্যারিস ও হারানো প্রজন্ম
- নারী ও প্রেম
- কোরিডা, ফিয়েস্টা ও প্রকৃতি
- পৌরষত্ব ও লিঙ্গ
রচনাশৈলী
উপন্যাসটি এর রচনাশৈলীর জন্য প্রসিদ্ধ।[5] একজন নব্য লেখক ও সাংবাদিক হেমিংওয়ে এজরা পাউন্ডের ধারস্থ হন। "সংস্কৃতির অনানুষ্ঠানিক মন্ত্রী তিনি নতুন প্রতিভাদের ধাত্রী" হিসেবে পাউন্ডের সুনাম ছিল, যিনি হেমিংওয়ের ছোটগল্পসমূহের ভুলগুলো ঠিক করে দিতেন ও নীল কালি দিয়ে দাগিয়ে দিতেন।[6] পাউন্ডের কাছ থেকে হেমিংওয়ে তার আধুনিকতম রচনাশৈলী লব্ধ করেন, তিনি কম বিবৃতি ব্যবহার করতেন, আবেগবাদ এডিয়ে যেতেন এবং অর্থের ব্যাখ্যা ছাড়াই চিত্র ও দৃশ্য উপস্থাপন করতেন, বিশেষ করে বইয়ের উপসংহারে।[5] অ্যান্ডার্স হ্যালেনগ্রেন লিখেন যেহেতু হেমিংওয়ে পাউন্ডের কাছ থেকে "বিশেষণের উপর বিশ্বাস ত্যাগ" করার উপায় শিখেন, তিনি নিজস্ব শৈলীর সৃষ্টি করেন, যেখানে "আবেগের দরজা বন্ধ করে আবেগকে চিরন্তন সত্যের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার নান্দনিক ও মূল্যবোধ অনুসারে বিষয়বস্তুর উপর জোড় দিতেন।"[7]
মূল্যায়ন
হেমিংওয়ের প্রথম উপন্যাস সন্দেহাতীতভাবে তাঁর শ্রেষ্ঠ ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং আধুনিকতাবাদী উপন্যাস। যদিও রেনল্ডস মনে করেন হেমিংওয়ে দার্শনিক দিক বিবেচনায় আধুনিকতাবাদী ছিলেন না।[8] বইটিতে তাঁর সৃষ্ট চরিত্রাবলি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য যুদ্ধ-পরবর্তী প্রবাসী প্রজন্মের সংক্ষিপ্তসার তোলে ধরে।[9] অনেক পর্যালোচক, তন্মধ্যে এইচ. এল. মেনকেন একজন, হেমিংওয়ের লেখনীর ধরন, বক্তব্যের ব্যবহার, ও দৃঢ় লেখনীর প্রশংসা করেন।[10]
তথ্যসূত্র
- মেয়ার্স (১৯৮৫), পৃ. ১৯২।
- ওয়েগনার-মার্টিন (১৯৯০), পৃ. ১।
- মেলো (১৯৯২), পৃ. ৩১৭–৩২১।
- বেকার (১৯৭২), পৃ. ৭৬, ৩০-৩৪।
- ওয়েগনার-মার্টিন (১৯৯০), পৃ. ২, ৪।
- মেয়ার্স (১৯৮৫), পৃ. ৭০-৭২।
- "Article about Ernest Hemingway: A Case of Identity: Ernest Hemingway" (ইংরেজি ভাষায়)। নোবেল পুরস্কার। সংগ্রহের তারিখ ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮।
- ওয়েগনার-মার্টিন (১৯৯০), পৃ. ১, ১৫; রেনল্ডস (১৯৯০), পৃ. ৪৬।
- মেলো (১৯৯২), পৃ. ৩০২।
- ওয়েগনার-মার্টিন (১৯৯০), পৃ. ১-২।