তপন মাহমুদ
তপন মাহমুদ বাংলাদেশের একজন রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী[1][2][3]। তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে গান পরিবেশনের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে দেশের মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখেন[4]।
তপন মাহমুদ | |
---|---|
![]() এক অনুষ্ঠানে তপন মাহমুদ | |
প্রাথমিক তথ্য | |
স্থানীয় নাম | তপন |
জন্ম | ১২ নভেম্বর ১৯৫১ বরিশাল |
ধরন | রবীন্দ্র সঙ্গীত |
পেশা | শিল্পী |
কার্যকাল | ১৯৫৮-বর্তমান |
জন্ম ও সঙ্গীত জীবন
তপন মাহমুদ ১৯৫১ সালের ১২ নভেম্বর বরিশাল শহরে জন্মগ্রহণ করেন[5]। বাবা শংকর ভট্টাচার্য্য এবং মাতা লীলা রাণী ভট্টাচার্য্য। ১৯৫৮ সালে দ্বিতীয় শ্রেণীতে বরিশালের ব্রজমোহন উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ার সময় রবীন্দ্রজয়ন্তী অনুষ্ঠানে প্রথম সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে সঙ্গীত জীবন শুরু করেন[6]। তিনি রবীন্দ্রসঙ্গীতের উপর বরিশালের প্রয়াত নারায়ণ চন্দ্র সাহা, ঢাকার প্রয়াত ফজলে নিজামী ও মুক্তিযুদ্ধকালে কলকাতার প্রয়াত অরবিন্দ বিশ্বাসের কাছে রবীন্দ্র সঙ্গীতের উপর শিক্ষাগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় জুলাই মাসের মাঝামাঝি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে প্রথম রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী হিসেবে সঙ্গীত পরিবেশন করেন[7]। এছাড়া সে সময় তিনি 'রণাঙ্গন ঘুরে এলাম’ নামক কথিকা রচনা করেন তিনি যা নিজেই রেডিওতে পাঠ করেন।
সঙ্গীতে অবদান
মুক্তিযুদ্ধের আগের বছর তার প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হয় বৈতালিক শিল্পী গোষ্ঠী। তপন মাহমুদ এর প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বৈতালিক শিল্পী গোষ্ঠী ১৯৭৭ সাল থেকে বাংলাদেশে নিয়মিত দর্শণীর বিনিময়ে গীতি-নৃত্য-নাট্যের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রা শুরু করে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নৃত্যনাট্য শ্যামা, চিত্রাঙ্গদা, শাপমোচন, মায়ার খেলা, চন্ডালিকাতে কণ্ঠ দেন। তাছাড়াও কাজী নজরুল ইসলামের ‘মুসাফির’ নৃত্যনাট্যের সঙ্গীত পরিচালনা করেন পুরুষ চরিত্রে কণ্ঠ দেন। বর্তমানে রবীন্দ্র সঙ্গীতের গ্রুপ হিসেবে রূপান্তরিত ‘বৈতালিকের’ পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তপন।
কর্মজীবন
তপন মাহমুদ বতর্মানে একটি ইনসিওরেন্স কোম্পানিতে হেড অব এইচআর এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। এর আগে ২০০২ সালে স্বেচ্ছা অবসরে যাওয়ার আগে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডে উপ-সচিব হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। তপন মাহমুদ ১৯৭৯ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বুলবুল ললিতকলা একাডেমির ধানমন্ডি শাখায় রবীন্দ্রসঙ্গীত বিভাগের শিক্ষক এবং পরবর্তীতে অধ্যক্ষ, হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপর ২০০৯ সাল থেকে শুরু করে ২০১২ পর্যন্ত বাংলাদেশ একাডেমি অব ফাইন আর্টসের(বাফা) অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৮ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পীদের সংগঠন বাংলাদেশ রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন তিনি। সেখানে বর্তমানে সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন[8]।
স্বীকৃতি
তপন মাহমুদ ২০১৬ সালে রবীন্দ্র সঙ্গীতে অবদান রাখার জন্য বাংলা একাডেমি প্রবর্তিত রবীন্দ্র পুরস্কার[9], এবি ব্যাংক-চ্যানেল আই আজীবন সম্মাননা এবং ২০১৮ সালে উদীচী নিউইয়র্ক প্রদত্ত সম্মাননা লাভ করেন[10][11][12][13]।
তথ্যসূত্র
- "ক্যাফে লাইভে অতিথি রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী তপন মাহমুদ"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০২-০৭।
- BanglaNews24.com। "সংগীত জীবনে ৫০ বছর পূর্তিতে সংবর্ধিত তপন মাহমুদ"। banglanews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০২-০৭।
- সাদ, সাইমুম; ডটকম, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর। "রবীন্দ্র সংগীত নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করার কোনো সুযোগ নেই: তপন মাহমুদ"। bangla.bdnews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০২-০৭।
- "শিল্পী তপন মাহমুদের জন্মদিন আজ || সংস্কৃতি অঙ্গন"। জনকন্ঠ। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০২-০৭।
- "আজ তপন মাহমুদের জন্মদিন"। print.thesangbad.net। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০২-০৭।
- "তপন মাহমুদকে সংবর্ধনা"। Jugantor। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০২-০৭।
- "শাহীন সামাদ ও তপন মাহমুদকে সম্মাননা প্রদান"। NTV Online। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০২-০৭।
- "বাংলাদেশ রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সংস্থার সভাপতি তপন মাহমুদ"। www.prothom-alo.com। ২০১১-০৪-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০২-০৭।
- "সৈয়দ আকরম হোসেন ও তপন মাহমুদ পেলেন রবীন্দ্র পুরস্কার | দ্বিতীয় সংস্করণ | The Daily Ittefaq"। archive1.ittefaq.com.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০২-০৭।
- "আজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ ও তপন মাহমুদ | বাংলাদেশ প্রতিদিন"। Bangladesh Pratidin। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০২-০৭।
- "আজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ ও তপন মাহমুদ"। Amadershomoy Online। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০২-০৭।
- "আজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ ও তপন মাহমুদ"। মানবজমিন। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০২-০৭।
- "স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের দুই শিল্পীকে সম্মাননা | banglatribune.com"। Bangla Tribune। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০২-০৭।