মীর জুমলা গেট

মীর জুমলার গেট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার একটি ঐতিহাসিক মোগল স্থাপনা। এই গেটটি ঢাকা গেট, ময়মনসিংহ গেট নামেও পরিচিত। [1] বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার কার্জন হল ছাড়িয়ে দোয়েল চত্বর হয়ে বাংলা একাডেমী যেতে চোখে পড়ে হলুদ রঙের মীর জুমলার তোরণ। এ গেটের তিনটি অংশের একটি রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবায়নযোগ্য শক্তি গবেষণা কেন্দ্রের দিকে, মাঝখানের অংশ পড়েছে রোড ডিভাইডারের মাঝে এবং অপর অংশটি রয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে তিন নেতার মাজারের পাশে।[1]

তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানের প্রবেশপথ মীর জুমলার গেটে একদল হাতি, ১৮৭৫

ইতিহাস

ব্রিটিশ সময়কার ঢাকার ম্যাজিস্ট্রেট চার্লস ডয়'স মূল শহরের সঙ্গে রেসকোর্সকে সংযুক্ত করার জন্য ময়দানের উত্তর-পূর্ব দিকে একটি সড়ক তৈরি করেন। এই সড়কের প্রবেশপথে তৈরি করা হয় দুটি স্তম্ভ। অপর এক তথ্যে বলা হয়েছে, ইসলাম খাঁর আমলে রমনা অঞ্চলে ছিল বাগে বাদশাহী নামে মোগল উদ্যান। বাগে বাদশাহীর প্রবেশপথে ছিল দুটি স্তম্ভ। পরে তা পুনর্নির্মাণ করে নামকরণ করা হয় ময়মনসিংহ গেট[1]

নামকরণ

মোগল আমলে বুড়িগঙ্গা নদী হয়ে ঢাকায় প্রবেশ করতে ব্যবহার করা হতো এ তোরণ। সেই সময় এর নাম ছিল 'মীর জুমলার গেট'। পরে কখনও 'ময়মনসিংহ গেট', কখনও 'ঢাকা গেট' এবং অনেক পরে নামকরণ করা হয় 'রমনা গেট'। এ গেট রমনায় প্রবেশ করার জন্য ব্যবহার করা হতো বলে পরে সাধারণ মানুষের কাছে এটি রমনা গেট নামেই পরিচিতি পায়। তবে বাংলাদেশ সরকারের গেজেট অনুসারে এ তোরণ এবং আশপাশের জায়গার নাম দেওয়া হয়েছে 'মীর জুমলার গেট'।[2]

ঐতিহাসিক স্থাপনা

তোরণের স্তম্ভগুলো পরীক্ষা করেন এ. এইচ. দানী। তার মতে, এগুলো মোগল আমলে তৈরি হয়নি। কারণ স্তম্ভ দুটির গড়ন ইউরোপীয় ধাঁচে মূল শহরের সঙ্গে রেসকোর্সকে যুক্ত করার জন্য রেসকোর্সের উত্তর-পূর্ব দিকে একটি রাস্তা তৈরি করেন তৎকালীন ম্যাজিস্ট্রেট চার্লস ডস। এ রাস্তার প্রবেশমুখে ডস এ দুটি স্তম্ভ তৈরি করেন। যা এখনও অটুট রয়েছে। বর্তমান নজরুল এভিনিউর রাস্তাটিও ডস তৈরি করেন। 'বাগে বাদশাহী' নামে মোগল উদ্যানটি ইসলাম খাঁর আমলে ছিল রমনা অঞ্চলে (যেটি বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও পুরনো হাইকোর্ট ভবন)।[2] হাইকোর্ট ভবনের পূর্ব কোণে একই ধরনের দুটি স্তম্ভবিশিষ্ট প্রবেশপথ ছিল। মূলত সে সময় এ স্তম্ভের মধ্য দিয়ে চলাচল ছিল হাতির।

গঠন

প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ ইঞ্চি ব্যাসার্ধ এ ধরনের স্তম্ভ খুবই বিরল। যার ওপরে রয়েছে কারুকাজ করা চারকোনা বিশিষ্ট একটি শেড। পশ্চিম পাশের বড় স্তম্ভের পাশেই রয়েছে অপেক্ষাকৃত ছোট আরেকটি স্তম্ভ। যার মাঝে টানা অবস্থায় রয়েছে একটি দেয়াল।[2] উঁচু থেকে নিচুতে নামা এ দেয়ালটি প্রায় ২০ ইঞ্চি চওড়া। কিন্তু পূর্ব পাশের বড় স্তম্ভের সঙ্গে দেয়াল বা প্রাচীর থাকলেও নেই ছোট স্তম্ভ।

চিত্রশালা

আরো দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. ধ্বংসের পথে মোগল স্থাপনা মীর জুমলার গেট ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে
  2. "অরক্ষিত মীর জুমলা গেট"। ৫ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৩
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.