ট্রোজান যুদ্ধ

গ্রীকপুরাণ অনুযায়ী দীর্ঘ দশ বছর ব্যাপী রক্তক্ষয়ী ট্রয় যুদ্ধ সংগঠিত হয় দার্দেনালিসের পশ্চিমে ( আধুনিক তুরস্কের হিসারলিক ) ট্রয় নগরীরর সম্মুখে ( স্ক্যামান্ডার নদীর তীরে ) খৃষ্টপূর্ব ১১৯৪ সালে এবং সমাপ্ত হয় ১১৮৪ সালে যদিও ব্রোঞ্জ যুগের এ যুদ্ধের সংঘটন-সময় নিয়ে আধুনিক ইতিহাসবিদরা মতবিরোধ করেন। দেব দেবীদের ষড়যন্ত্র, লোভ, নিষ্ঠুরতা ও পাগলামীর ফসল এ যুদ্ধ থেটিস-পুত্র অ্যাকিলিসের হস্তে ( গ্রীক: আখিলেউস/ আখিলেখ ) যুদ্ধের দশম বছরে প্রায়াম-পুত্র ও ট্রোজান সেনাপতি হেক্টরের ( গ্রীক: হেকতার ) মৃত্যুর মাধ্যমে চূড়ান্ত পরিণতির দিকে এগিয়ে যায়। দেবী অ্যাথিনার ছলনা, জিউস-পুত্র অ্যাপোলোর গাদ্দারী ও দেবরাজ জিউসের নীতিভঙ্গই হেক্টরের মৃত্যুর কারণ এবং হেক্টর ও প্রায়ামের সৎ ভাই ও টিথোনাস-পুত্র মেমননের পতন ট্রয়ের পতন নিশ্চিত করে দেয়। পরিশেষে অ্যাকিলিস, হেক্টর, প্যারিস, মেমনন ও প্রায়ামের মৃত্যু এবং ট্রয় নগরীর ধ্বংসের মাধ্যমে এ যুদ্ধ সমাপ্ত হয়। যদিও খোলা চোখে এ যুদ্ধে গ্রীকদের বিজয়ের পশ্চাতে ওডিসিয়াসের কাঠের ঘোড়া বা প্রায়ামের পুত্র হেলেনসের বিশ্বাসঘাতকতাকে মুখ্য কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয় কিন্তু আসল কারণটা ছিল জিউসের হাস্যকর মূর্খতা। দেবরাজ জিউস মানুষের সংখ্যা হ্রাসকল্পে মানুষে মানুষে এ সংঘাত সৃষ্টি করে। যদিও প্যারিসের হেলেনকে অপহরণ ও মাইসিনির রাজা আগামেমননের নেতৃত্বে স্পার্টার রাজা ও হেলেনের স্বামী মেনেলসের হেলেন উদ্ধার এ যুদ্ধের মূল কাহিনী অথবা ওডিসিয়াসের চাতুর্য, ট্রয়ের অগ্নিতে ভস্মীভূত হওয়া বা ট্রয়ে ব্যাপক গণহত্যা যুদ্ধ পরবর্তী সবচেয়ে আলোচিত বিষয় তবে সত্যটা হলো দেবরাজ জিউস দেবী হেরার অনুরোধে ট্রয়ের ধ্বংস নির্ধারণ করে। হাজার বছর ধরে পাঠকবর্গ ট্রয় যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা করেছে বটে; প্যারিসের পাপ, হেক্টর বধ, মেমননের পতন, অ্যাকিলিসের ক্রোধ, প্যান্ডারুসের লোভ বা কাঠের ঘোড়ার ট্রয় নগরীর অভ্যন্তরীণ হওয়া ইত্যাদি কিন্তু এ যুদ্ধের মূল উৎস দেব-দেবীর লোভ ও মূর্খতার বিষয়টি সম্পূর্ণ উপেক্ষিত তখনও ছিল এবং এখনও আছে।

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.